শিক্ষার্থীদের চাকরি ও ইন্টার্নশিপের সুযোগ করে দিতে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজিতে (বিইউবিটি) দিনব্যাপী ক্যারিয়ার ফেয়ার-২০২৫ অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যারিয়ার গাইডেন্স, কাউন্সেলিং ও ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স অফিসের আয়োজনে এবং বিডিজবসের সার্বিক সহযোগিতায় এই মেলা অনুষ্ঠিত হয়। 

দেশের খ্যাতনামা প্রায় ৪৫টি কোম্পানি এ ক্যারিয়ার ফেয়ারে অংশ নেয়। চাকরিপ্রত্যাশী শিক্ষার্থী ও গ্র্যাজুয়েটদের সরব উপস্থিতিতে মেলা প্রাঙ্গণ প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। শিক্ষার্থীরা সরাসরি নিয়োগকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগের সুযোগ পায় এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পর্কে বাস্তবধর্মী ধারণা অর্জন করে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিইউবিটির উপাচার্য প্রফেসর ড.

এবিএম শওকত আলী। তিনি তার বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দক্ষতা উন্নয়ন এবং চাকরি বাজারের উপযোগী করে গড়ে তোলার গুরুত্ব তুলে ধরেন। 

উপাচার্য প্রফেসর ড. এবিএম শওকত আলী বলেন, শুধু শিক্ষার চেয়ে দক্ষতা এবং শুধু সার্টিফিকেটের চেয়ে জ্ঞানের মূল্য অনেক বেশি। এখন আর শুধু গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রির ওপর নির্ভরশীল থাকলে চলবে না, সবাইকে দক্ষ হতে হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে  বিডিজবস লিমিটেডের পরিচালক প্রকাশ রায় চৌধুরী বলেন, নিজেদের দক্ষ করে তুলতে হবে। বাস্তবে কোম্পানিগুলো কী চায়, সেটি বোঝা খুবই জরুরি। এ ধরনের আয়োজন সেসব বিষয় বুঝতে সহায়তা করে। মাতৃভাষা ও ইংরেজির পাশাপাশি তৃতীয় একটি ভাষা জানা আজকের যুগে অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন ক্রিয়েটিভ আইটির প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও মো. মনির হোসেন। তিনি বলেন, আমরা এখন প্রযুক্তিনির্ভর যুগে বসবাস করছি, যেখানে পুরো বিশ্ব একটি গ্লোবাল ভিলেজে পরিণত হয়েছে। তাই আমাদের নিজেদের আন্তর্জাতিক মানের উপযোগী করে গড়ে তুলতে হবে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিইউবিটির ব্যবসা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন এবং ক্যারিয়ার ফেয়ার আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মাসুদ হোসেন। 

স্বাগত বক্তব্যে তিনি বলেন, এই ফেয়ার শুধু চাকরির সুযোগ নয়, বরং এটি শিক্ষার্থীদের নিজেদের দক্ষতা উপস্থাপন এবং প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের এক অসাধারণ প্ল্যাটফর্ম। এটি বিইউবিটির আয়োজিত পঞ্চম ক্যারিয়ার ফেয়ার এবং আমরা প্রতি বছর নিয়মিতভাবে এ ধরনের আয়োজন করার চেষ্টা করব।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ক্যারিয়ার গাইডেন্স, কাউন্সেলিং এবং ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সের ডেপুটি ডিরেক্টর ও আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব মেসবাহুল হাসান, বিইউবিটির রেজিস্ট্রার ড. মো. হারুন-অর-রশিদ, ট্রেজারার প্রফেসর ড. আলী আহমেদ, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, শিক্ষক-শিক্ষিকা, প্রশাসনিক কর্মকর্তারা এবং বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী।

সমাপনী পর্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিইউবিটি ট্রাস্টের সম্মানিত সদস্য এএফএম সরওয়ার কামাল। তিনি বলেন, ক্যারিয়ার ফেয়ার শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বিইউবিটি সবসময় এমন উদ্যোগের পাশে থাকবে। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: চ কর উপস থ ত ছ ল ন ব ইউব ট র অন ষ ঠ র আয় জ

এছাড়াও পড়ুন:

দেড়শ বছর টিকে আছে বালিকান্দি চামড়ার হাট

প্রায় দেড়শ বছর আগে মৌলভীবাজারের বালিকান্দি গ্রামে গড়ে ওঠে চামড়ার হাট। কোরবানির ঈদ এলেই মনু নদী তীরবর্তী গ্রামের এ হাটে চামড়া কেনাবেচা চলে দীর্ঘ রাত পর্যন্ত। ক্রেতা-বিক্রেতা, শ্রমিকের আনাগোনায় উৎসবমুখর থাকে বালিকান্দি বাজার। 
মৌলভীবাজার জেলায় চামড়া কেনাবেচার একমাত্র হাট বালিকান্দি বাজার। জল ও স্থলপথে যোগাযোগ সহজ হওয়ায় এটি দ্রুত বিভিন্ন এলাকায় পরিচিতি লাভ করে। স্থানীয় বাজারে চা স্টলের মালিক আব্দুল করিম জানান, তারা বাপ-দাদার আলোচনায় শুনেছেন, চার-পাঁচ পুরুষ আগে এ ব্যবসার যাত্রা শুরু। এক সময় খুব জমজমাট ছিল এ হাট। তিনিও এক সময় চামড়া কেনাবেচায় জড়িত ছিলেন। ব্যবসায় লস খাওয়ায় চায়ের দোকান দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন এখন।
জানা যায়, ১৮৬০ থেকে ১৮৭০ সালের দিকে এ বাজারের যাত্রা। এখন এ ব্যবসার প্রতি মানুষের আগ্রহ কমে গেছে। ট্যানারি মালিকরা টাকা আটকে রাখায় সর্বস্বান্ত হয়েছেন অনেক ব্যবসায়ী। চামড়া বেচাকেনা যখন জমজমাট ছিল, তখন ঈদকেন্দ্রিক বাজার সরব থাকত। 
স্থানীয়রা জানান, অতীতে ঈদকেন্দ্রিক মৌসুমি ব্যবসায়ীসহ শতাধিক মানুষ চামড়া কেনাবেচা করতেন। মৌসুমি ব্যবসায়ীরা মাংস ছিলে লবণ লাগিয়ে বড় পুঁজির ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করতেন। বড় ব্যবসায়ীরা আগেকার দিনে ঢাকার হাজারীবাগ এবং নাটোরে ট্যানারি মালিকদের কাছে বিক্রি করতেন। শওকত মেম্বার, সানুর মিয়া, আনোয়ার মিয়া, মো. তারণ, মিন্টু মিয়া, সুলেমান মিয়ারা তাদের আদি পুরুষের ব্যবসার ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন।
গত ৭ জুন ঈদের দিন সন্ধ্যায় সরেজমিন বালিকান্দি চামড়ার বাজারে যেতে দেখা যায় চামড়াবোঝাই ছোট-বড় ট্রাক-পিকআপ, টমটম, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভিড়ে জ্যাম লেগে গেছে। ফাঁড়ি রাস্তায় যেতে হয়েছে বালিকান্দি বাজারে। সেখানে শামিয়ানা টানিয়ে সড়কের পাশে, কোথাও সড়কের অংশজুড়ে চলছে চামড়া থেকে মাংস সরানোর কাজ। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে এ কাজ করছেন।
চামড়া ব্যবসায়ী সুলেমান মিয়া জানান, ঈদের সময় বালিকান্দি বাজারে এখনও ১৫ থেকে ১৬ হাজার চামড়া কেনাবেচা হয়। এতে এক দিনে ৪০ থেকে ৫০ লাখ টাকার বেচাকেনা হয়। এবার গরুর আকারভেদে দেড়শ থেকে ৬০০ টাকা দরে চামড়া কেনাবেচা হয়েছে। চামড়া বিক্রি করতে আসা মাদ্রাসা শিক্ষক মাওলানা তাফাজ্জুল বিন ফারুকী রাজনগরী জানান, চামড়া ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে দেড়শ-দুইশ টাকায় প্রতি পিস চামড়া কিনেছেন। এতে ট্রাক ভাড়া ও অন্যান্য খরচ ওঠানো কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে।
স্থানীয় চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শওকত মিয়া মেম্বার সমকালকে জানান, ব্যবসার মজা শেষ হয়ে গেছে ২০১৩ সাল থেকে। আগে ঈদ এলেই ট্যানারি মালিকরা বকেয়া পরিশোধ করে দিতেন। এখন বছরের পর বছর যাওয়ার পরও পাওনা টাকা পরিশোধ করেন না। গত বছরের পাওনা ৫৫ লাখ টাকার মাঝে এবার ঈদের আগের দিন ট্যানারি মালিক মাত্র ৫০ হাজার টাকা দিয়েছেন। এ বছর চার হাজারের বেশি চামড়ায় লবণ লাগিয়ে রেখেছেন। আরও কিছু লবণযুক্ত চামড়া কেনার জন্য দাম-দর চলছে। তিনি জানান, এ বছর বড় গরু কোরবানি দেওয়ার সংখ্যা খুব কম। ছোট চামড়ার সংখ্যাই বেশি। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দেড়শ বছর টিকে আছে বালিকান্দি চামড়ার হাট