চট্টগ্রামে রিকশা উল্টে নালায় পড়ে নিখোঁজ হয়েছে ছয় মাস বয়সী শিশু। শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে নগরীর কাপাসগোলা এলাকার নবাব হোটেলের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম উদ্ধার অভিযান চালায়। তাদের সঙ্গে যোগ দেয় একটি ডুবুরি দলও। এসময় নালা থেকে ওই শিশুর মাকে উদ্ধার করা গেলেও নিখোঁজ রয়েছে ছয় মাস বয়সী সেহেলী। রাত সাড়ে ১০টায় প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত উদ্ধার কাজ চলছে। ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র অফিসার নুরুল হুদা এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।   

স্থানীয়রা জানায়, শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ছয় মাস বয়সী এক কন্যা সন্তানকে নিয়ে কাপাসগোলা সড়ক হয়ে বাসায় ফিরছিলেন এক নারী। এই সড়কের নবাব হোটেলের সামনে গিয়ে রাস্তার ধারে গর্ত ও কাদায় পড়ে রিকশাটি উল্টে গিয়ে নালায় পড়ে যায়। এতে রিকশা চালক, ছয় মাস বয়সের শিশুসহ ওই নারী নালায় পড়ে যান। স্থানীয় লোকজন শিশুটির মা ও রিকশা চালককে উদ্ধার করতে পারলেও পানিতে তলিয়ে যায় সেই শিশুটি। খবর পেয়ে ডুবুরিসহ ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে। 

ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র অফিসার নুরুল হুদা সমকালকে বলেন, ‘খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল নিয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযান চালাচ্ছি। তবে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত শিশুটির খোঁজ পাওয়া যায়নি। উদ্ধার কাজ চলমান।’ 

তিনি বলেন, ‘নালাটিতে আগে থেকেই ময়লা-আবর্জনা ছিল। বৃষ্টিপাতের কারণে নালায় পানিও জমেছে। সামান্য স্রোতও রয়েছে। ফলে যেখানে দুর্ঘটনা ঘটেছে তার আশেপাশেও অভিযান চালানো হবে।’

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

কাশ্মীর ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ‘নয়া মানুষ’

নদীমাতৃক বাংলাদেশের প্রান্তিক চরের মানুষের জীবনযাপন, মানবিকতা ও ধর্মীয় সহাবস্থানের চিত্র নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্র ‘নয়া মানুষ’। প্রশংসিত এই চলচ্চিত্র জায়গা করে নিয়েছে ‘কাশ্মীর ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’-এর পঞ্চম আসরে। ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগরে আজ থেকে শুরু হওয়া এই উৎসবে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশের এই আলোচিত চলচ্চিত্রটি। 

৭ দিনব্যাপী এ উৎসবে মিসর, জার্মানি, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরান ও ভারতের নির্বাচিত চলচ্চিত্রের সঙ্গে প্রদর্শিত হবে ‘নয়া মানুষ’, যা বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নিচ্ছে উৎসবে। 

আরো পড়ুন:

দুই গায়িকার পাল্টাপাল্টি অভিযোগ, দ্বন্দ্ব চরমে

সমালোচনা নিয়ে মুখ খুললেন ভাবনা

২০২৪ সালের ৬ ডিসেম্বর মুক্তি পাওয়া ‘নয়া মানুষ’ দর্শক ও সমালোচকদের কাছ থেকে প্রশংসা কুড়ায়। আ. মা. ম. হাসানুজ্জমানের লেখা ‘বেদনার বালুচরে’ উপন্যাস অবলম্বনে চলচ্চিত্রটির সংলাপ ও চিত্রনাট্য লিখেন মাসুম রেজা। 

চলচ্চিত্রটিতে অভিনয় করেছেন রওনক হাসান, মৌসুমী হামিদ, আশীষ খন্দকার, ঝুনা চৌধুরী, শিখা কর্মকার, নিলুফার ওয়াহিদ, বদরুদ্দোজা, মাহিন রহমান, নাজমুল হোসেন, স্মরণ সাহা, সানজানা মেহরান ও শিশুশিল্পী ঊষশী। 

উৎসবে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে গল্পকার ও অভিনেতা আ. মা. ম. হাসানুজ্জমান বলেন, “আমি যখন গল্পটি লিখি, তখন এত কিছু ভাবিনি। কিন্তু চলচ্চিত্রটি দর্শক দেখার পর যে ভালোবাসা পাচ্ছি, তা সত্যিই অকল্পনীয়। ‘নয়া মানুষ’ ধর্মীয় উন্মাদনার বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি করছে, শান্তির বার্তা দিচ্ছে, ধর্মের প্রকৃত দর্শন তুলে ধরছে—এটাই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।” 

চলচ্চিত্রটির নির্মাতা সোহেল রানা বয়াতি বলেন, “আমার প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘নয়া মানুষ’ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক উৎসবে অংশ নিচ্ছে—এটা আমার জন্য গর্বের বিষয়। কাশ্মীর ফেস্টিভ্যালে বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে ‘নয়া মানুষ’ অংশ নিচ্ছে, যা দেশের চলচ্চিত্রের জন্যও একটি বড় সাফল্য।” 

চাঁদপুরের দুর্গম কানুদীর চরে চিত্রগ্রহণ করা হয়েছে চলচ্চিত্রটির। চিত্রগ্রহণ পরিচালনা করেছেন কমল চন্দ্র দাস। সিনেমাটির সংগীতে কণ্ঠ দিয়েছেন বাউল শফি মণ্ডল, চন্দনা মজুমদার, বেলাল খান, অনিমেষ রয়, মাসা ইসলাম ও খাইরুল ওয়াসী। সংগীত পরিচালনা করেছেন ইমন চৌধুরী, মুশফিক লিটু ও শোভন রয়। 

মানবতার বার্তা, ধর্মীয় সহনশীলতা ও জীবনবোধের অনন্য মেলবন্ধন নিয়ে ‘নয়া মানুষ’ এবার বাংলাদেশের হয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে পৌঁছে দিচ্ছে শান্তি ও সহমর্মিতার বার্তা।

ঢাকা/রাহাত/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ