কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪–২৫ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির সি ইউনিটের (ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ) ভর্তি পরীক্ষা শেষ হয়েছে। তবে পরীক্ষায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রের তিনটি কক্ষে বিভাগ পরিবর্তনকারী মানবিক বিভাগের পরীক্ষার্থীদের ভুল প্রশ্নপত্র প্রদান করা হয়েছে বলে জানা গেছে। এতে শতাধিক শিক্ষার্থী অন্তত ৪০ মিনিট বিলম্বে সঠিক প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা দিয়েছেন। আজ শনিবার (১৯ এপ্রিল) সি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা শেষে বিষয়টি জানা যায়।

এদিকে সি ইউনিটের পরীক্ষার্থীদের ভুল প্রশ্নপত্র প্রদানের দায়ে ওই ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার আহ্বায়ক অধ্যাপক মোহাম্মদ আহসান উল্লাহকে ভর্তি কমিটি থেকে সাময়িক অব্যাহতি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো.

হায়দার আলী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কমিটি সূত্রে জানা গেছে, সি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় ব্যবসায় শিক্ষার পাশাপাশি বিভাগ পরিবর্তন করা বিজ্ঞান ও মানবিক বিভাগের পরীক্ষার্থীরাও পরীক্ষা দিতে পেরেছেন। তবে প্রতিটি বিভাগের পরীক্ষার্থীদের জন্য ভিন্ন ভিন্ন প্রশ্নপত্রের সেট ছিল। কিন্তু ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের পরীক্ষার্থীদের প্রশ্নপত্রই বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রের কলা ও মানবিক অনুষদের তিনটি কক্ষে বিজ্ঞান ও মানবিক বিভাগের পরীক্ষার্থীদের সরবরাহ করা হয়েছিল।

ভুক্তভোগী পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রথমে ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের পরীক্ষার্থীদের জন্য যে প্রশ্নপত্র, সেটিই কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রের তিনটি হলে প্রদান করা হয়। এক ঘণ্টার পরীক্ষার প্রায় অর্ধেক সময় পার হলে পরীক্ষার্থীরা বুঝতে পারেন, তাঁদের ভুল প্রশ্নপত্র প্রদান করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে বিষয়টি জানাজানি হলে তাঁদের সঠিক প্রশ্নপত্র দিয়ে আবার এক ঘণ্টার পরীক্ষাটি নেওয়া হয়। এভাবে ভুল প্রশ্নপত্র দেওয়ার কারণে অনেক শিক্ষার্থী মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পরীক্ষায় বিরূপ প্রভাব পড়েছে বলে জানিয়েছেন।

শাখাওয়াত হোসেন নামের এক পরীক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা যে হলে পরীক্ষা দিয়েছি, সেটি মূলত বিভাগ পরিবর্তনকারী শিক্ষার্থীদের কেন্দ্র। আমাদের ভুল প্রশ্নপত্র দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি জানাজানি হলে পরে তাৎক্ষণিক আবার ঠিক প্রশ্নপত্র দিয়েছে। এতে আমরা ৪০ মিনিট পর সঠিক প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা দিয়েছি। ৪০ মিনিট পর সঠিক প্রশ্নপত্র হাতে পেয়ে প্রথমে একটু নার্ভাস হয়েছিলাম। কিন্তু পরবর্তী সময় আমাদের সবার মতো এক ঘণ্টা সময় দেওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত পরীক্ষা ভালোই দিয়েছি। আশা করছি, চান্স পাব।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার আহ্বায়ক অধ্যাপক মোহাম্মদ আহসান উল্লাহ বলেন, ‘মোট তিনটি কক্ষে সঠিক প্রশ্নপত্র দেওয়া নিয়ে সমস্যা হয়েছে। এটা আসলে ভুলেই হয়েছে এবং আমরা বিষয়টি জানতে পেরে সঙ্গে সঙ্গে সমস্যার সমাধান করেছি। ওই তিনটি কক্ষে প্রায় ১০০ শিক্ষার্থী ছিল। ওই তিনটি কক্ষ ছাড়া অন্য কোথাও এমন সমস্যা হয়নি।’

বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর আজ দুপুরে অধ্যাপক মোহাম্মদ আহসান উল্লাহকে সি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কমিটির আহ্বায়কের পদ থেকে সাময়িক অব্যাহতি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

উপাচার্য মো. হায়দার আলী বলেন, ‘এ ঘটনা শুনে আমি সঙ্গে সঙ্গে ওই কক্ষগুলোয় গিয়েছি। পরে সেখানে দায়িত্বরত সবাইকে সতর্কতা অবলম্বন করতে বলেছি। যেহেতু ঘটনাটি ঘটে গেছে, তাই আমরা সঙ্গে সঙ্গে যথাযথ ব্যবস্থাও নিয়েছি। যার কারণে শিক্ষার্থীদের কোনো ক্ষতি হয়নি। তাঁরা পরীক্ষার জন্য বরাদ্দকৃত সময়ই পরীক্ষা দিতে পেরেছেন।’ অন্য কোনো কেন্দ্রে এমন ঘটনা ঘটেনি বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, যে ঘটনা ঘটেছে, সেটির দায়ে আহ্বায়ককে (অধ্যাপক মোহাম্মদ আহসান উল্লাহ) ভর্তি পরীক্ষার সব কার্যক্রম থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি আগামী পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে তাঁকে এ ঘটনার কারণ জানানোর জন্য শোকজ করা হয়েছে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের অধ্যাপক মোহাম্মদ বেলাল উদ্দিনকে এখন সি ইউনিটের আহ্বায়কের দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। তিনি ফলাফলসহ অন্য সব কার্যক্রম সম্পন্ন করবেন।

প্রসঙ্গত, আজ (১৯ এপ্রিল) সকাল ১০টায় এই ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ৯ হাজার ৯৫২ জন আবেদনকারীর মধ্যে ৭ হাজার ৬৪৬ জন পরীক্ষা দিয়েছেন, যা শতাংশের হিসাবে উপস্থিতির হার ৭৬ দশমিক ৮৩ শতাংশ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪–২৫ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষায় এবার প্রতি আসনের বিপরীতে আবেদনকারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৬৪। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ হাজার ৩০টি আসনের বিপরীতে এ, বি ও সি—তিনটি ইউনিটে মোট আবেদন জমা পড়েছে ৬৬ হাজার ৪০২টি। এবার বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, কোটবাড়ী এলাকাসহ কুমিল্লা নগরের ৩০টি পরীক্ষাকেন্দ্রে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

আরও পড়ুনস্কুলে দীর্ঘ ছুটির ফাঁদে পড়াশোনা শিকেয় ওঠে৮ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুনরাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় আবু সাঈদ, জেন-জি, ছিল ত্রুটিপূর্ণ প্রশ্ন৩ ঘণ্টা আগে

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব ভ গ র পর ক ষ র থ দ র ব যবস য় শ ক ষ ৪০ ম ন ট পর ক ষ য় র জন য ব ষয়ট প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

বিবাহবিচ্ছেদের পর আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন চাহাল

এ বছরের মার্চে পাঁচ বছরের দাম্পত্য জীবনের ইতি টানেন ভারতের লেগ স্পিনার যুজবেন্দ্র চাহাল। ইউটিউবার–অভিনেত্রী ধনশ্রী বর্মার সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হয় তাঁর। ভারতের ইউটিউবার রাজ শামানির সঙ্গে পডকাস্টে সংসার ভাঙা নিয়ে কথা বলেছেন চাহাল।

ভারতের হয়ে ২০২৩ সালে সর্বশেষ খেলা এই লেগ স্পিনার জানিয়েছেন, কয়েক বছর ধরেই তাঁর ও ধনশ্রীর মধ্যে সম্পর্কটা ভালো যাচ্ছিল না। তবু তাঁরা এই সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগপর্যন্ত ব্যক্তিগত জীবনের ঝামেলা সামনে নিয়ে আসেননি। তিনি আরও জানিয়েছেন, বিবাহবিচ্ছেদের পর তিনি কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যান এবং একপর্যায়ে আত্মহত্যা করার কথাও ভাবেন।

আরও পড়ুনকাঁধের চোটে ভারতের বিপক্ষে আর খেলতে পারবেন না ওকস১ ঘণ্টা আগে

ভারতের হয়ে ৭২ ওয়ানডে ও ৮০ টি–টোয়েন্টি খেলা চাহালের কাছে রাজ শামানি জানতে চেয়েছিলেন, ঠিক কী কারণে তাঁদের সম্পর্কটা ভেঙে গেল? ৩৫ বছর বয়সী চাহালের উত্তর, ‘বেশ কিছুদিন ধরে সমস্যা হচ্ছিল। কিন্তু আমরা সিদ্ধান্ত নিই চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আমরা ব্যাপারটা সামনে আনব না।’

২০১৬ সালের জুনে ভারতের হয়ে অভিষেক চাহালের। চার বছর পর ধনশ্রীকে বিয়ে করেন তিনি। চাহাল জানিয়েছেন, জাতীয় দলে হয়ে খেলায় তাঁর ব্যস্ত হয়ে পড়া এবং ধনশ্রীরও নিজ ক্যারিয়ার নিয়ে মনোযোগী হয়ে পড়ায় কেউ কাউকে সময় দিতে পারেননি। সাংসারিক ঝামেলার এটাই মূল কারণ বলে মনে করেন চাহাল।

যুজবেন্দ্র চাহাল ও ধনশ্রী বর্মা

সম্পর্কিত নিবন্ধ