বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন অভিভাবকহীন প্ল্যাটফর্মে পরিণত হয়েছে: ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক
Published: 20th, April 2025 GMT
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন বলেছেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এখন অভিভাবকহীন এক প্ল্যাটফর্মে পরিণত হয়েছে। তারা সারা দেশে চাঁদাবাজি, দখলবাজি, এমনকি হত্যাকাণ্ডে জড়িত হচ্ছে। আমাদের এক ছাত্রদল নেতাকেও তারা নির্মমভাবে হত্যা করেছে। গণ–অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেওয়া এই প্ল্যাটফর্মকে ব্যবহার করে এখন একটি রাজনৈতিক দল গঠন করা হয়েছে। অথচ এই ব্যানারের কেউ কোনো দায় নিচ্ছে না। সবাই অপকর্ম করে যাচ্ছে।’
আজ রোববার পাবনা এডওয়ার্ড কলেজে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নাছির উদ্দীন এসব কথা বলেন। পরে ছাত্রদলের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন অবিলম্বে বিলুপ্ত করা উচিত উল্লেখ করে সম্মেলনে ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, ‘পিতামাতাহীন সন্তান যেমন অসহায় থাকে, ঠিক তেমনিভাবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এখন নেতৃত্বহীন ও অগঠিত। তারা সারা দেশে আবারও ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থা কায়েমের চেষ্টা করছে।’
সম্মেলনে প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে পাবনা এডওয়ার্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা নেতৃত্ব নির্বাচন করছে উল্লেখ করে নাছির উদ্দীন বলেন, ‘তারেক রহমানের নির্দেশনায় আমরা চাই প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নেতৃত্ব নির্বাচন হোক। পাবনা এডওয়ার্ড কলেজে ছাত্রদলের অংশগ্রহণ প্রমাণ করে যে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের মতামতের ভিত্তিতে রাজনীতি করতে চাই।’
নাছির উদ্দীন বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য আড়াই হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ ধরনের নির্বাচন চালু করা। এর মধ্যে ৬০টি মাদ্রাসাও রয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার মাদ্রাসাশিক্ষার্থীদের প্রতি যে বৈষম্য করেছে, তা দূর করতে আমরা রাজনৈতিকভাবে সচেতন করার কাজ করছি।’
নারী শিক্ষার্থীদের প্রসঙ্গে ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘গত ১৬ বছরে নারীরা অনেক পিছিয়ে ছিল। আমরা চাই তাদের নেতৃত্বে আনতে। আজকের সম্মেলনে অসংখ্য নারী শিক্ষার্থী লাইনে দাঁড়িয়ে তাদের নেতৃত্ব নির্বাচনের জন্য ভোট দিয়েছে—তাদের আমি কৃতজ্ঞতা জানাই। এই দেশকে বদলাতে হলে নারী ভোটারদের ভূমিকা অপরিহার্য।’
কলেজ শাখা ছাত্রদলের কাউন্সিলে ২ হাজার ৪৮ জন ভোটারের মধ্যে ১ হাজার ৩৬২ জন তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। ভোট গণনা শেষে সন্ধ্যায় নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করেন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক। এতে সভাপতি পদে ৪ জন প্রার্থীর মধ্যে রাকিবুল ইসলাম রাকিব ৮৭৬ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। সাধারণ সম্পাদক পদে ৯ জন প্রার্থীর মধ্য থেকে ইমরুল কায়েস কাব্য ৩৮২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন।
সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি তৌহিদুল রহমান আওয়াল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহমেদ, মোকসেদুল মোমিন প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ছ ত রদল র
এছাড়াও পড়ুন:
ক্ষুদ্র-মাঝারি নারী উদ্যোক্তাদের মেলা শুরু হচ্ছে ৮ মে
বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্যোগে আবার শুরু হচ্ছে কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি (সিএমএসএমই) খাতের নারী উদ্যোক্তাদের অংশগ্রহণে ব্যাংকার-এসএমই নারী উদ্যোক্তা সমাবেশ, পণ্য প্রদর্শনী ও মেলা। নারীদের উদ্যোক্তা হতে আগ্রহী করে তোলা ও আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এই মেলার আয়োজন করা হয়েছে। ৮ থেকে ১১ মে রাজধানীর বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে এই মেলা অনুষ্ঠিত হবে। মেলা চলবে সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এসএমই অ্যান্ড স্পেশাল প্রোগ্রামস বিভাগ জানায়, এবারের মেলায় বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় ৪৯টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান অংশ নেবে। মেলায় আসা দর্শনার্থীদের জন্য এসএমই খাতে তাঁদের পণ্য ও সেবাসংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য জানার সুযোগ রয়েছে। মেলায় অংশগ্রহণকারী ৭০ জন নারী উদ্যোক্তা তাঁদের পণ্য প্রদর্শন ও বিক্রি করবেন। এ ছাড়া মেলার প্রথম ও দ্বিতীয় দিন সিএমএসএমই খাত ও সমসাময়িক অর্থনৈতিক বিষয় নিয়ে সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা এই সেমিনার পরিচালনা করবেন। মেলা প্রাঙ্গণ সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
চার দিনের এই মেলার উদ্বোধন করবেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন অর্থ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।
গত মার্চে সিএমএসএমই খাতে কী পরিমাণ ঋণ দেওয়া হবে, তার নতুন লক্ষ্য ঠিক করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত লক্ষ্য অনুযায়ী, ২০২৯ সালের মধ্যে ব্যাংকের মোট ঋণ স্থিতির ২৭ শতাংশ সিএমএসএমই খাতে দিতে হবে। একই সঙ্গে প্রতিবছর এ খাতে ঋণের পরিমাণ দশমিক ৫ শতাংশ করে বাড়াতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে চলতি ২০২৫ সালের মধ্যে ব্যাংকের মোট ঋণ স্থিতির ২৫ শতাংশ সিএমএসএমই খাতে প্রদানের কথাও বলা হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে।
এদিকে এসএমই ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এসএমই খাতের অবদান প্রায় ৩২ শতাংশ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ২০১৩ সালের অর্থনৈতিক সমীক্ষা অনুসারে, দেশে ৭৮ লাখের বেশি সিএমএসএমই শিল্পপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এটি মোট শিল্পপ্রতিষ্ঠানের ৯৯ শতাংশের বেশি। শিল্প খাতের মোট কর্মসংস্থানের প্রায় ৮৫ শতাংশ হয় এসএমই খাতে। এই খাতে আড়াই কোটির বেশি মানুষ কর্মরত।