শেয়ারবাজারের দর পতন গড়াল টানা পঞ্চম দিনে
Published: 20th, April 2025 GMT
শেয়ারবাজারে দর পতন টানা পঞ্চম দিনে গড়িয়েছে। গত সপ্তাহে সব কার্যদিবসে পতনের পর গতকাল রোববার ঢাকার শেয়ারবাজার ডিএসইতে তালিকাভুক্ত ৬১ শতাংশ শেয়ার ও ফান্ড দর হারিয়েছে। বেশির ভাগ শেয়ারের দর পতনে প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স প্রায় ২৩ পয়েন্ট হারিয়ে ৫০৭৪ পয়েন্টে নেমেছে। গতকালের পতনসহ সূচকের টানা পতন হলো প্রায় ১৩১ পয়েন্ট বা আড়াই শতাংশ।
গতকাল ঢাকার শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ৩৬০ কোম্পানির মধ্যে ৩৫৭টির কেনাবেচা হয়েছে। এর মধ্যে ২২৩টি বা ৫৬ শতাংশের দর কমেছে। ৯৬টির দর বেড়েছে। অপরিবর্তিত ছিল ৩৮টির দর। এ ছাড়া ৩৭ মেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে চারটির দর বেড়েছে, কমেছে ১৮টির এবং ১৪টি অপরিবর্তিত ছিল। গতকাল ৩৫১ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে, যা আগের কর্মদিবসের তুলনায় পৌনে ১২ কোটি টাকা বেশি।
বীমা ছাড়া বাকি সব খাতের অধিকাংশ কোম্পানির দর কমেছে। এসব খাতের ৩০২ কোম্পানির মধ্যে মাত্র ৫৫টির দর বেড়েছে। বীমা খাতের ৫৮ কোম্পানির মধ্যে ৪১টির দর বেড়েছে। বেশি কোম্পানি রয়েছে এমন খাতের মধ্যে প্রকৌশল খাতের গড় দর পতনের হার ছিল সর্বাধিক ২ দশমিক ১৫ শতাংশ। এ খাতের ৪২ কোম্পানির মধ্যে পাঁচটির দরবৃদ্ধির বিপরীতে ৩৪টির দর কমেছে। এর পরের অবস্থানে থাকা ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতে গড় দর পতনের হার ছিল ১ দশমিক ৫৬ শতাংশ।
অপেক্ষাকৃত কম কোম্পানির খাতগুলোর মধ্যে সিমেন্ট খাতে গড়ে ৩ দশমিক ২৯ শতাংশ দর পতন হয়েছে। এ খাতের সাত কোম্পানির মধ্যে ছয়টিই দর হারিয়েছে। অন্যান্য খাতের মধ্যে কাগজ ও ছাপাখানা খাতের সোয়া ২ শতাংশ এবং ভ্রমণ ও অবকাশ খাতের প্রায় দেড় শতাংশ দর পতন হয়েছে।
সার্বিক দর পতনের মধ্যেও গতকাল এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিল কোম্পানির দর ১০ শতাংশ হারে বেড়েছে। পরের অবস্থানে থাকা সেনা ইন্স্যুরেন্স, শাইনপুকুর সিরামিক্স এবং মিডল্যান্ড ব্যাংকের দর সাড়ে ৯ থেকে প্রায় ১০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। ক্রেতার চাহিদায় শেয়ারগুলো দিনের সার্কিট ব্রেকার নির্ধারিত সর্বোচ্চ দরে কেনাবেচা হয়। বিপরীতে পৌনে ৯ শতাংশ দর পতন নিয়ে শীর্ষে ছিল বিচ হ্যাচারি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: শ য় রব জ র র দর ব ড় ছ শ য় রব জ র দর পতন গতক ল পতন র
এছাড়াও পড়ুন:
জাপানে আঘাত হানতে পারে ৮ তীব্রতার ভূমিকম্প, সতর্ক থাকার পরামর্শ সরকারের
জাপানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে গতকাল সোমবার রাতে ৭ দশমিক ৫ তীব্রতার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। ভূমিকম্পের পর দেশটির প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূল জুড়ে তিন মিটার উঁচু সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়েছিল। স্থানীয় সময় আজ মঙ্গলবার ভোর ৬টা ২০ মিনিটে সেই সতর্কতা তুলে নেওয়া হয়। তবে বিপদ এখনো কাটেনি।
কারণ, জাপানের আবহাওয়া অধিদপ্তর আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে একই এলাকায় ৮ বা তার চেয়ে বেশি তীব্রতায় ‘ভূমিকম্প’ আঘাত হানতে পারে বলে সতর্কতা জারি করেছে।
সোমবার রাতে আঘাত হানা ভূমিকম্পে ৩০ জনের বেশি মানুষ আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, সোমবার রাত সোয়া ১১টার দিকে আঘাত হানা ভূমিকম্পের উৎপত্তি স্থল ছিল জাপানের আওমোরি প্রিফেকচারের পূর্ব উপকূলে এবং এর কেন্দ্রস্থল ছিল ভূপৃষ্ঠের ৫৪ কিলোমিটার গভীরে।
ভূমিকম্প থেকে সুনামি সতর্কতা জারির পর ইওয়াতে জেলায় সমুদ্র থেকে ৭০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত উঁচু ঢেউ আঘাত হানার খবর পাওয়া গেছে।
জাপান ভূমিকম্পপ্রবণ দেশ। সেখানে প্রাকৃতিক এই দুর্যোগ নৈমিত্তিক ব্যাপার হলেও সোমবার রাতের পর থেকে নড়েচড়ে বসেছে জাপান সরকার। বিশেষ করে আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে একই এলাকায় ৮ বা তার চেয়ে বেশি তীব্রতার ভূমিকম্প আঘাত হানতে পারে বলে সতর্কতা জারির পর।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের সতর্কবার্তায় আরও বলা হয়, গত রাতের ভূমিকম্প হোক্কাইদো এবং উত্তর-পূর্ব জাপানের উপকূলবর্তী একটি খাদ বরাবর আঘাত হেনেছে, সেখানে প্রশান্ত মহাসাগরীয় প্লেট উত্তর আমেরিকান বা ওখোৎস্ক প্লেটের নিচে ঢুকে গেছে। এই প্লেটের ওপর জাপানের প্রধান দ্বীপ হোনশু অবস্থিত।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, আগামী কয়েক দিনে আরেকটি বড় ভূমিকম্প আঘাত হানার আশঙ্কা সাধারণ সময়ের চেয়ে বেড়ে গেছে। এই ভূমিকম্প হলে উত্তরের জেলা হোক্কাইদো থেকে টোকিওর পশ্চিমের চিবা জেলা পর্যন্ত জাপানের প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলজুড়ে বড় আকারের সুনামিও আঘাত হানতে পারে।এর ফলে আগামী কয়েক দিনে আরেকটি বড় ভূমিকম্প আঘাত হানার আশঙ্কা বেড়ে গেছে। এই ভূমিকম্প হলে উত্তরের জেলা হোক্কাইদো থেকে টোকিওর পশ্চিমের চিবা জেলা পর্যন্ত জাপানের প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলজুড়ে বড় আকারের সুনামিও আঘাত হানতে পারে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে লোকজনকে উপকূল থেকে নিরাপদ দূরত্বে থাকার পাশাপাশি দুর্যোগকালীন প্রস্তুতি গ্রহণের পরামর্শ দিচ্ছে কর্তৃপক্ষ। স্থানীয় সরকারের মানচিত্র দেখে বিপদে নিরাপদ এলাকায় সরে যাওয়ার পথ সম্পর্কে আগাম সজাগ থাকতেও বলা হয়েছে।
এ ছাড়া প্রয়োজনীয় খাবার বা অন্যান্য জরুরি দ্রব্যাদি সংগ্রহ করে রাখার অনুরোধ জানানো হয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর প্রথমবারের মতো হোক্কাইদো এবং জাপানের প্রধান দ্বীপ হোনশুর উত্তর–পূর্বাঞ্চলের সানরিকু উপকূলের জন্য এমন সতর্কতা জারি করা হলো।
এদিকে মঙ্গলবার ভোররাতে টোকিওতে নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচি স্থানীয় বাসিন্দাদের আগামী সপ্তাহ বা তার চেয়ে বেশি সময় ধরে ভবনে আসবাবপত্র সুরক্ষিত অবস্থায় রাখার পাশাপাশি আরেকটি সম্ভাব্য দুর্যোগের জন্য প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
এ ছাড়া সরকার আওমোরি প্রিফেকচারে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে একটি দল পাঠাবে এবং প্রয়োজনে উদ্ধার কার্যক্রম চালানোর জন্য স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে সর্বশক্তি নিয়োগ করবে।
যদি কোনো ধরনের কম্পন অনুভূত হয়, তবে সরকার থেকে জনসাধারণের প্রতি এই আহ্বান থাকছে, দয়া করে সামাজিক ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি দেরি না করে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাওয়ার প্রস্তুতি সব সময় নিয়ে রাখবেন।—সানায়ে তাকাইচি, জাপানের প্রধানমন্ত্রীপরে টোকিওতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় তাকাইচি বলেছেন, যদি কোনো ধরনের কম্পন অনুভূত হয়, তবে সরকারের পক্ষ থেকে জনসাধারণের প্রতি এই আহ্বান থাকছে, দয়া করে সামাজিক ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি দেরি না করে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে রাখবেন।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী শিনজিরো কোইজুমি বলেছেন, সোমবার রাতের ভূমিকম্পের পর আওমোরি প্রিফেকচারের হাচিনোহে শহরে অবস্থিত একটি বিমানঘাঁটি এবং সেনাবাহিনীর একটি ক্যাম্প এলাকাবাসীদের আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছিল। একবারে সর্বোচ্চ ছয় শতাধিক মানুষ একসময় সেখানে আশ্রয় নিয়েছিলেন। এদের অনেকে গভীর রাতে প্রচণ্ড শীতের মধ্যে পায়ে হেঁটে সেখানে পৌঁছান।
রাতে ৭ দশমিক ৫ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানার পর উদ্ধার তৎপরতা নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচি। ৮ ডিসেম্বর ২০২৫।