সাভারে ছাত্র হত্যা মামলায় কৃষক লীগ ও ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার
Published: 21st, April 2025 GMT
জুলাই অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সরাসরি হামলার অভিযোগে সাভারে পৃথক স্থান থেকে কৃষক লীগ ও নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের এক নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
রোববার রাতে সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়ন এবং মানিকগঞ্জ থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তাররা হলেন- ঢাকা জেলার সাভার থানার বিরুলিয়া ইউনিয়নের জিনজিরা গ্রামের দানেছ আলীর ছেলে ও বিরুলিয়া ইউনিয়ন ১ নম্বর ওয়ার্ড কৃষকলীগের সভাপতি মো.
সোমবার সকালে তাদের গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জুয়েল মিঞা।
গ্রেপ্তারদের মধ্যে কৃষকলীগ নেতা বিল্লাল হোসেন বিরুলিয়ার ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান সুজনের ক্যাডার বাহিনীর সদস্য বলে জানা গেছে। তার বিরুদ্ধে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতা হত্যায় অংশ নেওয়ার অভিযোগসহ এলাকায় জমি দখল ও মানুষকে হুমকি দিয়ে বিভিন্ন সুবিধা বাগিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
অন্যদিকে মানিকগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সাভার উপজেলা শাখার সহ-সভাপতি রকিব আহমেদ রকি সরাসরি ছাত্র জনতার ওপর হামলার মামলায় অভিযুক্ত। তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে মামলার পাশাপাশি এলাকায় মাদক বিক্রি ও কিশোর গ্যাং পরিচালনাসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে।
গ্রেপ্তার রকি আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালীনও নানা অপকর্মের কারণে বেশ কয়েকবার গ্রেপ্তার হন। তার বিরুদ্ধে রয়েছে কয়েকটি হত্যা মামলাসহ অর্ধডজন মামলা রয়েছে। সাভারের আলোচিত রোহান হত্যা হত্যার সঙ্গেও তার জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জুয়েল মিঞা বলেন, পৃথক স্থানে অভিযান চালিয়ে দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে কতটি মামলা রয়েছে তা দেখে সংশ্লিষ্ট মামলায় গ্রেপ্তার করে দুপুরে আদালতে পাঠানো হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর
এছাড়াও পড়ুন:
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস আজ
‘উদয়ের পথে শুনি কার বাণী/ ভয় নাই ওরে ভয় নাই/ নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান/ ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই’। তাঁদের নিঃশেষে প্রাণদানের স্মৃতি আজ গভীর বেদনায় স্মরণ করবে জাতি। আজ থেকে ৫৪ বছর আগে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীরা হানাদার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নীলনকশার শিকার হয়ে নির্মম হত্যার শিকার হয়েছিলেন।
অমিত বিক্রম বাঙালির জীবনপণ যুদ্ধে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর চূড়ান্ত পরাজয় তখন ছিল কেবল দিনগণনার বিষয়। সেই অনিবার্য পরাজয়ের প্রাক্কালে মরণকামড় দেওয়ার চেষ্টা করেছিল ঘাতক বাহিনী। স্বাধীনতা অর্জন করলেও বাঙালি জাতি যেন মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে, সেই চক্রান্ত করেছিল তারা। দেশের সেরা বুদ্ধিজীবীদের তালিকা করে তাঁদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্মম নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছিল। এ কাজে পাকিস্তানি সেনাদের সরাসরি সহায়তা করেছিল তাদের মিত্র এ দেশি রাজাকার, আলবদর বাহিনী। এরাই ঘাতক সেনাদের নিয়ে গিয়ে চিনিয়ে দিয়েছে বুদ্ধিজীবীদের বাড়ি। চিনিয়ে দিয়েছে সেই নিরীহ মানুষগুলোকে।
মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ে পরে মিরপুরে রায়েরবাজার পরিত্যক্ত ইটখোলা ও মিরপুরে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া সেসব বুদ্ধিবৃত্তিক পেশায় যুক্ত মানুষের মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়। তাঁদের অনেকের ছিল পিছমোড়া করে হাত ও চোখ বাঁধা। ভয়ানক নির্যাতনের চিহ্ন ছিল শরীরে। তাঁদের মরদেহ উদ্ধার হওয়ার মধ্য দিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বুদ্ধিজীবী হত্যার গভীর ষড়যন্ত্র প্রকাশ হয়ে পড়ে। এর পর থেকেই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা ও শোক প্রকাশ করে ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়ে আসছে।
শুধু ঢাকাতেই নয়, সারা দেশেই বুদ্ধিবৃত্তিক কাজে যুক্ত মানুষদের হত্যা করেছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। এই হত্যাকাণ্ডের ছিল দুটি পর্যায়। ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে হানাদার সেনারা রাজধানীতে গণহত্যা শুরু করেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকায় সাধারণ নিরীহ জনসাধারণের পাশাপাশি শিক্ষক, চিকিৎসকদেরও হত্যা করে। এরপর থেকে হানাদাররা সারা দেশের শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, শিল্পী, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, গবেষক, সংস্কৃতিসেবীসহ মেধা মনন সৃজনশীল কাজে যুক্ত মানুষদের বেছে বেছে হত্যা করতে থাকে। মুক্তিযুদ্ধে শেষ পর্যায় তারা এই বুদ্ধিবৃত্তিক মানুষদের নিঃশেষ করে দেওয়ার জন্য তালিকা করে হত্যা চালাতে থাকে। তাঁদের মধ্যে যেমন প্রবীণ প্রাজ্ঞজনেরা ছিলেন, তেমনি ছিলেন উদিত যৌবনের বহু সম্ভাবনাময় তরতাজা প্রাণ। আজ তাঁদের স্মৃতির স্মরণ করা হবে সারা দেশে।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক বাণী দিয়েছেন।
কর্মসূচিশহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আন্তমন্ত্রণালয়ের সভায় জানানো হয়েছে, আজ রোববার সকাল ৭টা ৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং ৭টা ৬ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। তাঁরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে সেখানে নীরবে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবেন। এ সময় বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টাকে রাষ্ট্রীয় স্যালুট প্রদান করবে।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার পুষ্পস্তবক অর্পণের পর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসরাত চৌধুরী, শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্য এবং হুইলচেয়ারধারী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।