রূপগঞ্জে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে মোটরসাইকেল চোরচক্রের সদস্যরা। বিশেষ করে দামী ব্যান্ডের মোটরসাইকেল চুরি করাই যেনো থাকে তাদের মূল লক্ষ্য। উপজেলা পরিষদ-ভুমি অফিসসহ গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা-ঘাটে থাকে তাদের উৎপাত।

গেলো এক মাসে রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদে সেবা নিতে আসা লোকজনের দামী ব্রান্ডের অন্তত ৩টি মোটরসাইকেল চুরি করে নিয়ে গেছে এ চোরচক্রের সদস্যরা। 

সোমবার দুপুরে রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদ ভবনের প্রধান ফটকের সামনে থেকে ভোলাব ইউপি সদস্য মো.

বাদশা মিয়ার মোটরসাইকেল ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে থেকে শরিফ মিয়া নামে এক সেবাগ্রহীতার মোটরসাইকেলসহ ২টি মোটরসাইকেল চুরি করে নিয়ে গেছে সক্রিয় চোর সদস্যরা। 

উপজেলা আঙ্গীনা সহ আশপাশের কয়েকটি সিটি টিভি ফুটেজে দেখা যায়, প্যান্ট-শার্ট পড়া ও মুখে মাস্ক পড়ে উপজেলা পরিষদের ভবন সহ আশপাশে ঘুরাফেরা করছে সক্রিয় চোর সদস্যরা।

এক পর্যায়ে আশপাশ ফাঁকা বুঝে পৃথকস্থান থেকে একই কৌশলে ২টি মোটরসাইকেলের তালা ভেঙ্গে চুরি করে নিয়ে যায় চোর সদস্যরা। এ ঘটনায় রূপগঞ্জ থানায় প্রথক ভাবে ২টি অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগীরা।

ভুক্তভোগী ভোলাব ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার বাদশা মিয়া জানান, দুপুর ১২টার  দিকে উপজেলা পরিষদ ভবনের এলজিআরডি অফিসে জরুরী কাজ করতে আসেন তিনি।

 কাজ শেষ করে ১ টা ২০ মিনিটে উপজেলা পরিষদের ভবন থেকে নেমে দেখেন তার মোটরসাইকেল ইয়ামাহা-এফজেড ভার্সন-২ (ঢাকা মেট্রো-ল-৪১৮৩৬০) মোটরসাইকেলটি নেই। 

আশপাশে খুঁজাখুজির পর উপজেলা পরিষদের সিটি টিভি ফুটেজ দেখে জানতে পারেন মোটরসাইকেলটি তালা ভেঙ্গে চুরি করে নিয়ে গেছে চোরচক্রের সদস্যরা। এ ঘটনায় রূপগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। 

আরেক ভুক্তভোগী শরিফ ভুঁইয়া জানান, দুপুর ১২টা ৪৫মিনিটের দিকে উপজেলা পরিষদের নির্বাচন কমিশনারের ভবনের সামনে পালসার ১৫০ সিসি মোটরসাইকেলটি রেখে কাজ করছিলেন।

কাজ শেষে ফিরে এসে তিনিও মোটসাইকেলটি খুঁজে না পেয়ে উপজেলা পরিষদের সিসি টিভি ফুটেজ দেখে জানতে পারেন একই কায়দায় মোটরসাইকেলটির তালা ভেঙ্গে একইচক্রের চোর সদস্যরা মোটরসাকেলটি চুরি করে নিয়ে গেছে। 

বিগত দিনে, উপজোলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অফিসের সামনে থেকে অসংখ্য মোটরসাইকেল চুরি করে নিয়ে গেছে এ চক্রটি। একটি ঘটনারও রহস্য বা চোরচক্রকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। তাই দিনদিন ব্যপরোয়া হয়ে উঠেছে চোরচক্রের সদস্যরা। 

এসব বিষয়ে রূপগঞ্জ থানার ওসি লিয়াকত আলী জানান, অভিযোগ পেয়েছি। চোরচক্রের সদস্যদের গ্রেফতার করতে পুলিশ তৎপর রয়েছে।
 

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: সরক র র পগঞ জ ন র য়ণগঞ জ র পগঞ জ র স মন উপজ ল আশপ শ

এছাড়াও পড়ুন:

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস আজ

‘উদয়ের পথে শুনি কার বাণী/ ভয় নাই ওরে ভয় নাই/ নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান/ ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই’। তাঁদের নিঃশেষে প্রাণদানের স্মৃতি আজ গভীর বেদনায় স্মরণ করবে জাতি। আজ থেকে ৫৪ বছর আগে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীরা হানাদার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নীলনকশার শিকার হয়ে নির্মম হত্যার শিকার হয়েছিলেন।

অমিত বিক্রম বাঙালির জীবনপণ যুদ্ধে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর চূড়ান্ত পরাজয় তখন ছিল কেবল দিনগণনার বিষয়। সেই অনিবার্য পরাজয়ের প্রাক্কালে মরণকামড় দেওয়ার চেষ্টা করেছিল ঘাতক বাহিনী। স্বাধীনতা অর্জন করলেও বাঙালি জাতি যেন মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে, সেই চক্রান্ত করেছিল তারা। দেশের সেরা বুদ্ধিজীবীদের তালিকা করে তাঁদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্মম নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছিল। এ কাজে পাকিস্তানি সেনাদের সরাসরি সহায়তা করেছিল তাদের মিত্র এ দেশি রাজাকার, আলবদর বাহিনী। এরাই ঘাতক সেনাদের নিয়ে গিয়ে চিনিয়ে দিয়েছে বুদ্ধিজীবীদের বাড়ি। চিনিয়ে দিয়েছে সেই নিরীহ মানুষগুলোকে।

মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ে পরে মিরপুরে রায়েরবাজার পরিত্যক্ত ইটখোলা ও মিরপুরে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া সেসব বুদ্ধিবৃত্তিক পেশায় যুক্ত মানুষের মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়। তাঁদের অনেকের ছিল পিছমোড়া করে হাত ও চোখ বাঁধা। ভয়ানক নির্যাতনের চিহ্ন ছিল শরীরে। তাঁদের মরদেহ উদ্ধার হওয়ার মধ্য দিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বুদ্ধিজীবী হত্যার গভীর ষড়যন্ত্র প্রকাশ হয়ে পড়ে। এর পর থেকেই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা ও শোক প্রকাশ করে ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়ে আসছে।

শুধু ঢাকাতেই নয়, সারা দেশেই বুদ্ধিবৃত্তিক কাজে যুক্ত মানুষদের হত্যা করেছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। এই হত্যাকাণ্ডের ছিল দুটি পর্যায়। ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে হানাদার সেনারা রাজধানীতে গণহত্যা শুরু করেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকায় সাধারণ নিরীহ জনসাধারণের পাশাপাশি শিক্ষক, চিকিৎসকদেরও হত্যা করে। এরপর থেকে হানাদাররা সারা দেশের শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, শিল্পী, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, গবেষক, সংস্কৃতিসেবীসহ মেধা মনন সৃজনশীল কাজে যুক্ত মানুষদের বেছে বেছে হত্যা করতে থাকে। মুক্তিযুদ্ধে শেষ পর্যায় তারা এই বুদ্ধিবৃত্তিক মানুষদের নিঃশেষ করে দেওয়ার জন্য তালিকা করে হত্যা চালাতে থাকে। তাঁদের মধ্যে যেমন প্রবীণ প্রাজ্ঞজনেরা ছিলেন, তেমনি ছিলেন উদিত যৌবনের বহু সম্ভাবনাময় তরতাজা প্রাণ। আজ তাঁদের স্মৃতির স্মরণ করা হবে সারা দেশে।

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক বাণী দিয়েছেন।

কর্মসূচি

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আন্তমন্ত্রণালয়ের সভায় জানানো হয়েছে, আজ রোববার সকাল ৭টা ৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং ৭টা ৬ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। তাঁরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে সেখানে নীরবে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবেন। এ সময় বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টাকে রাষ্ট্রীয় স্যালুট প্রদান করবে।

রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার পুষ্পস্তবক অর্পণের পর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসরাত চৌধুরী, শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্য এবং হুইলচেয়ারধারী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ