শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ৩০ হাজার টাকা করার দাবি টিইউসির
Published: 21st, April 2025 GMT
শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ৩০ হাজার টাকা ঘোষণা করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র (টিইউসি)। পাশাপাশি রেশন প্রথা চালু করে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য সস্তা ও ন্যায্যমূল্যে শ্রমজীবী মানুষের জন্য সরবরাহের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
আজ সোমবার রাজধানীর পুরানা পল্টনের মণি সিংহ-ফরহাদ স্মৃতি ট্রাস্ট ভবনের মুনির আজাদ সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত টিইউসির কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় এসব দাবি জানান সংগঠনের নেতারা। এ সময় বন্ধ হওয়া পাট, সুতা, বস্ত্র, চিনিকলসহ সব কলকারখানা আধুনিকায়ন করে রাষ্ট্রীয় মালিকানায় চালুর দাবিও জানানো হয়।
সভায় টিইউসির নেতারা বলেন, অতীতের মতো বর্তমানেও দেশের শ্রমজীবী মানুষ মানবেতর জীবন যাপন করছেন। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণহীন হওয়ায় মেহনতি মানুষের পক্ষে জীবিকা নির্বাহ করা দুরূহ হয়ে পড়েছে। শ্রমজীবী মানুষের ওপর চাঁদাবাজি, হয়রানি, নির্যাতন অহরহ ঘটছে। শ্রমিকেরা দীর্ঘদিন ধরে কলকারখানা ও অঞ্চলভিত্তিক রেশনের মাধ্যমে চাল, ডাল, তেল, আটা ও শিশুখাদ্য সরবরাহের দাবি করলেও সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
টিইউসির নেতারা আরও বলেন, শ্রমিকদের খাতভিত্তিক ঘোষিত মজুরি দেওয়া হচ্ছে না। অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের স্বীকৃতি নেই। শ্রম আইনের আওতায় না থাকার কারণে তাঁরা ন্যূনতম সুযোগ-সুবিধা থেকেও বঞ্চিত। আউটসোর্সিংয়ে নিয়োগের মাধ্যমে শ্রমিকদের মৌলিক ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার খর্ব করা হচ্ছে। নারী শ্রমিকেরা নানাভাবে নির্যাতিত ও নিগৃহীত হচ্ছেন। শ্রেণিবৈষম্য দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। শ্রম অধিকার সংকুচিত হচ্ছে। ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তিত হলেও শ্রমজীবী মানুষের ওপর শোষণ–নির্যাতন অব্যাহত রয়েছে।
টিইউসির সহসভাপতি মাহবুব আলমের সভাপতিত্বে সভায় শুরুতে বিদ্যমান শ্রম পরিস্থিতি প্রতিবেদন উত্থাপন করেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ।
সভায় আরও বক্তব্য দেন টিইউসির সহসভাপতি আবদুর রাজ্জাক, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল মালেক, দপ্তর সম্পাদক সাহিদা পারভীন, অর্থ সম্পাদক কাজী মো.
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বিদ্যুৎ না থাকায় ডিইপিজেডে উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ
ঢাকার সাভার উপজেলার আশুলিয়ায় ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (ডিইপিজেড) আজ সোমবার দুপুর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এ কারণে দুপুরের পর ডিইপিজেডের সব কারখানায় শ্রমিকদের ছুটি দেওয়া হয়েছে। ডিইপিজেডের জন্য নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড পাওয়ারের বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় এ সংকট তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
ডিইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক মো. শরীফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ ইউনাইটেড পাওয়ারের ডিইপিজেডে বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রকল্পটিতে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। এতে তারা উৎপাদন করতে না পারায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারছে না। ফলে ডিইপিজেডে প্রায় ৯০টি কারখানার এক লাখের মতো শ্রমিককে ছুটি দেওয়া হয়।
বিদ্যুতের সংযোগ না থাকায় বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হয়েছে উল্লেখ করে মো. শরীফুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার যদি এটি অব্যাহত থাকে, তবে সংকট আরও বাড়বে। শ্রমিকেরা কাজ না করতে পেরে বিক্ষুব্ধ হলে বিষয়টি আরও জটিল হয়ে উঠবে। কোনো ধরনের নোটিশ ছাড়া এ ধরনের ঘটনায় বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
ডিইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘তিতাস বলছে, ইউনাইটেড পাওয়ারের কাছে বিল বকেয়া রয়েছে। তারা বকেয়া পরিশোধ করেনি। এ ব্যাপারে আদালতে দীর্ঘদিন ধরে মামলা চলছে। কিন্তু আমাদের কথা হচ্ছে, বেপজাকে কোনো ধরনের পূর্ব নোটিশ না দিয়ে হঠাৎ করে এ ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছেন। এ ধরনের পদক্ষেপের আগে ডিইপিজেডের গুরুত্ব বিবেচনা করে আলোচনার মধ্য দিয়ে বিষয়টির সমাধান করা উচিত ছিল।’
এ বিষয়ে ইউনাইটেড পাওয়ার প্ল্যান্টের ব্যবস্থাপক মো. মমতাজ হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘গ্যাসের কোনো প্রেশার নেই। প্রেশার শূন্য। কিন্তু কেন তিতাস কর্তৃপক্ষ এমনটি করল, সে ব্যাপারে এখানকার (আশুলিয়া অঞ্চলের) তিতাসের লোকজন কিছু বলতে পারেননি। আমরা নিজেরাও বিষয়টি নিয়ে জানি না। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘আমার জানামতে, বকেয়া নিয়ে কোনো ধরনের মামলা নেই। তিতাস কেন গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিল, সেটি জানা নেই।’
জানতে চাইলে তিতাসের আশুলিয়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আবু ছালেহ মুহাম্মদ খাদেমুদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, গ্যাসের বিল বকেয়া থাকায় গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এটি সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের সিদ্ধান্ত। দুপুরের দিকে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।