‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে যে টেস্ট ম্যাচটি জিতেছিলাম, তার কথা বোধ হয় ভুলে গেছেন। প্রথম ইনিংসে ১৬৪ রানে অলআউট হয়ে আমরা দ্বিতীয় ইনিংসে ফিরে এসেছিলাম। ওই টেস্ট থেকে অনেক কিছুই শেখার আছে।’

মেহেদী হাসান মিরাজ সংবাদ সম্মেলনে সবাইকে মনে করিয়ে দিলেন, ওয়েস্ট ইন্ডিজের মতো বড় দলের বিপক্ষে প্রত্যাবর্তন করা সম্ভব হলে জিম্বাবুয়ের সঙ্গেও বড় ইনিংস গড়ে ম্যাচ জেতা সম্ভব। সিলেট টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষেও বাংলাদেশ খানিকটা ব্যাকফুটে, বিশেষ করে জিম্বাবুয়ের ২৫ রানের লিড বিষয়টি ভিন্নভাবে দেখার সুযোগ করে দিয়েছে। যদিও মিরাজরা সেভাবে দেখছেন না। তারা বিশ্বাস করেন, দ্বিতীয় ইনিংসে চারশ বা সাড়ে চারশ রান করে বড় লিড নেবে বাংলাদেশ। সিলেটের স্পোর্টিং উইকেটেও যে রান তাড়া করতে পারবে না জিম্বাবুয়ে।

এই টেস্টে গত দুই দিনে যে ছয়টি সেশন খেলা হয়েছে, তাতে উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে গেছে উভয় দল। প্রথম দিনে বাংলাদেশকে ১৯১ রানে অলআউট করে জিম্বাবুয়ে ৬৭ রান করেছিল বিনা উইকেটে। বিশ্লেষকরা ম্যাচের প্রথম দিন জিম্বাবুয়েকেই এগিয়ে রেখেছিলেন। দ্বিতীয় দিনে বোলিং-ব্যাটিং মিলিয়ে বাংলাদেশ লিডে। সেদিক থেকে সিলেট টেস্ট ভারসাম্য রেখে এগোচ্ছে। যেখানে বোলারদের সমন্বিত পারফরম্যান্স আত্মবিশ্বাস জোগাচ্ছে স্বাগতিক শিবিরে। গতকাল তিন সিমার নাহিদ রানা, হাসান মাহমুদ ও খালেদ আহমেদের সঙ্গে অফস্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজের বোলিং ছিল নজরকাড়া। বিশেষ করে, মিরাজের পাঁচ উইকেট ছিল দারুণ ব্যাপার। ৫২ টেস্টের ক্যারিয়ারে ইনিংসে ১১ বার পাঁচ উইকেট শিকার করা এ অফস্পিনার জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করতে উন্মুখ হয়ে আছেন। 

প্রথম দিনের ৬৭ রানের সঙ্গে দ্বিতীয় দিন ২ রান যোগ করার পর ভাঙে জিম্বাবুয়ের ওপেনিং জুটি। মেঘাচ্ছন্ন সকালে ভয়ংকর হয়ে ওঠেন টাইগার ফাস্ট বোলার। ২১ রানের ব্যবধানে দুই ওপেনার বেন কারেন ও ব্রায়ন ব্যানেটকে আউট করে ঘুরে দাঁড়ানোর বার্তা দেন ফাস্ট বোলার রানা। উইকেট শিকারে রানার সঙ্গে হাসান মাহমুদ যোগ দেওয়ায় প্রথম ঘণ্টায় তিন উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। ৩৩ রান দিয়ে তিন উইকেট শিকার ভালো শুরু। সেশন শেষে যেটা ৪ উইকেটে ৬৬ রান ছিল। প্রথম সেশন নিজেদের করে নেওয়ার বড় কৃতিত্ব পেসার রানার প্রাপ্য। কারণ চার উইকেটের তিনটিই তাঁর শিকার। ৪ উইকেটে ১৩৩ রান নিয়ে মধ্যাহ্ন বিরতিতে যাওয়া জিম্বাবুয়ে দ্বিতীয় সেশনে ভালো খেলে। মেঘ কেটে রোদের হাসিতে হেসেছিল সফরকারীদের ব্যাটও। ক্রেইগ আরভিন-শন উইলিয়ামস, ওয়েসলি মাধেভেরি-শন উইলিয়ামস ছোট ছোট দুটি জুটি গড়ায় বিপর্যয় থেকে রক্ষা পায় জিম্বাবুয়ে। দ্বিতীয় সেশনে দুই উইকেট হারালেও ৮০ রান যোগ করে। শেষ সেশনটাও ভালোভাবে সামাল দেয় তারা। টেলএন্ডাররা ছোট ছোট অবদান রাখায় জিম্বাবুয়ের প্রথম ইনিংস শেষ হয় ২৭৩ রানে। মিরাজ পাঁচ এবং নাহিদ তিন উইকেট শিকার করেন। 

৮২ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে বাংলাদেশ। যদিও শুরুটা ভালো হয়নি। সাদমান ইসলাম অনিক ৪ রানে আউট হন। ১৩ রানে প্রথম উইকেট হারালেও মাহমুদুল হাসান জয় ও মুমিনুল হক জুটি গড়ায় ১ উইকেটে ৫৭ রানে দিন শেষ করে বাংলাদেশ। ২৫ রানে পিছিয়ে থেকে তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করবে টাইগাররা। আজ নতুন শুরুটা গুরুত্বপূর্ণ। মুমিনুল ও জয় প্রথম ঘণ্টা পার করে দিতে পারলে হবে সোনালি সকাল। মিরাজের বিশ্বাস দ্বিতীয় ইনিংসে ভালো ক্রিকেট খেলে ম্যাচ জয়ের অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে পারবেন তারা। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: উইক ট শ ক র দ ব ত য় ইন প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

অস্ট্রেলিয়ায় নারী এশিয়া কাপ: শক্তিশালী গ্রুপে বাংলাদেশ 

বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল ইতিহাসের এক নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করেছে। এশিয়ান কাপের মূল পর্বে জায়গা করে নিয়েছে। 

আগামী বছরের ১-২৩ মার্চ অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত হবে নারী এশিয়া কাপ। ১২ দলের এই টুর্নামেন্টের ড্র সিডনিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে আজ দুপুরে। যেখানে শক্তিশালী গ্রুপে পড়েছে বাংলাদেশ। 

‘বি’ গ্রুপে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ উজবেকিস্তান, চীন ও উত্তর কোরিয়া। জাঁকজমকপূর্ণ ড্রতে বাংলাদেশ ছিল চার নম্বর প্লটে। সঙ্গী ছিল ইরান ও ভারত। গ্রুপিং ড্রতে টুর্নামেন্টের একমাত্র অভিষিক্ত দল বাংলাদেশ ‘বি’ গ্রুপের তৃতীয় দল নির্বাচিত হয়। 

পরের রাউন্ডে ‘বি’ গ্রুপের চতুর্থ দল হয় উজবেকিস্তান। এরপর ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন চীন বাংলাদেশের গ্রুপের দ্বিতীয় দল হয়। সবশেষ দল হিসেবে এই গ্রুপে যুক্ত হয় উত্তর কোরিয়া। যারা ২০১০ সালে প্রতিযোগিতায় রানার্সআপ হয়েছিল। 

ড্র অনুষ্ঠানে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া ও এএফসি অংশগ্রহণকারী সকল দেশের অধিনায়ক ও কোচকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। প্রথমবার নারী এশিয়া কাপে সুযোগ পাওয়া বাংলাদেশের কেউ এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেনি। গতকাল অংশগ্রহণকারী দলগুলোর কোচ, খেলোয়াড়রা ট্রফি নিয়ে ফটোসেশন করে হারবার ব্রিজের সামনে। সেখানে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া ছাড়া, তাইওয়ান,ভারত, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, উজবেকিস্তান ও ভিয়েতনামের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

বাছাইপর্বে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স ছিল দুর্বার। ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে ১২৮ নম্বরে থাকা বাংলাদেশ পড়েছিল কঠিন ‘সি’ গ্রুপে, যেখানে প্রতিপক্ষ ছিল বাহরাইন (র‌্যাঙ্কিং ৯২), তুর্কমেনিস্তান এবং স্বাগতিক মিয়ানমার (র‌্যাঙ্কিং ৫৫)। র‌্যাঙ্কিংয়ের বিচারে পিছিয়ে থাকলেও মাঠের পারফরম্যান্সে বোঝার উপায় ছিল না। 

প্রথম ম্যাচেই বাহরাইনকে ৭-০ গোলে উড়িয়ে দেয় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচে ঋতুপর্ণার জোড়া গোলের নৈপুণ্যে ২-১ ব্যবধানে হারায় মিয়ানমারকে। শেষ ম্যাচে তুর্কমেনিস্তানকেও ছাড়েনি মেয়েরা। ৭-০ গোলের দাপুটে জয় তুলে নেয় তারা।

এই জয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে প্রথমবারের মতো এএফসি নারী এশিয়ান কাপের মূল পর্বে জায়গা করে নেয় বাংলাদেশ। আগামী বছর মার্চে বসবে টুর্নামেন্টের ২১তম আসর, যেখানে খেলবে ১২টি দেশ। 

ঢাকা/ইয়াসিন

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জিম্বাবুয়েকে চোখ রাঙাচ্ছে ইনিংস হার
  • স্বপ্নের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে জুয়েল, অর্থাভাবে অনিশ্চিত ভুটান যাত্রা
  • রোনালদোর অদম্য ক্ষুধা, দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে জেতালেন আল-নাসরকে
  • ৪৭ দিন ক্যাম্পে থেকে ১০–১২ দিন অনুশীলন, হতাশ ক্রিকেটাররা
  • অস্ট্রেলিয়ায় নারী এশিয়া কাপ: শক্তিশালী গ্রুপে বাংলাদেশ