ভোলায় ঘরে ঘরে গ্যাস–সংযোগের দাবিতে এবার সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানির সামনে অবস্থান কর্মসূচি
Published: 22nd, April 2025 GMT
ভোলায় ঘরে ঘরে গ্যাস–সংযোগসহ পাঁচ দফা দাবি আদায়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে বিভিন্ন ব্যানারে সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানি লিমিটেডের সামনে ভোলা–খেয়াঘাট সড়কে অবস্থান নিয়েছেন তাঁরা।
ভোলার বদ্বীপ ছাত্রকল্যাণ সংসদের আহ্বানে এই কর্মসূচিতে একাত্মতা প্রকাশ করেছে বিএনপি, বিজেপি, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন।
আরও পড়ুনভোলায় এলপিজি গ্যাসভর্তি গাড়ি আটকে ৫ দফা দাবিতে স্থানীয়দের বিক্ষোভ১৯ এপ্রিল ২০২৫বক্তারা জানান, তিন বছর ধরে ভোলাবাসী বিভিন্ন ব্যানারে পাঁচটি দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন। তাঁদের দাবি, ভোলার গ্যাস দিয়ে জেলার কলকারখানা নির্মাণ, জেলার মানুষের ঘরেও গ্যাস সরবরাহ করতে হবে। এগুলোর কোনোটি না করে পানির দরে ইন্ট্রাকো কোম্পানিকে গ্যাস দেওয়া হচ্ছে। বিগত ফ্যাসিবাদী সরকারের করা এ চুক্তি বাতিল করতে হবে। সেই সঙ্গে ভোলায় মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল গড়তে হবে। জেলার হাসপাতালগুলোয় ব্যাপক হারে চিকিৎসকের সংকট আছে। হাসপাতালে গেলে চিকিৎসক ঢাকা বা বরিশাল পাঠিয়ে দেন। সেখানে পৌঁছানোর আগেই রোগী মারা যাচ্ছে। এ কারণে ভোলা–বরিশাল সেতু দরকার। শিক্ষায় পিছিয়ে থাকা জেলাটিতে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ও প্রয়োজন।
আরও পড়ুনভোলায় আটকে রাখা ৮টি গ্যাসভর্তি গাড়ি ছেড়ে দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা২১ এপ্রিল ২০২৫এসব দাবিতে জেলার বাসিন্দারা আজ সকাল ১০টা থেকে সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানির সামনে জমায়েত হতে থাকেন। এ সময় তাঁরা ‘ভোলার গ্যাস ভোলায় চাই, ঘরে ঘরে গ্যাস চাই’, ‘ইন্ট্রাকোর সঙ্গে অসম চুক্তি বাতিল করো, করতে হবে’, ‘গ্যাস চোরের দালালেরা হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘দাবি মোদের একটাই, মেডিকেল কলেজ চাই’, ‘গ্যাস নিলে দিতে হবে, মেডিকেল কলেজ’, ‘গ্যাস নিলে দিতে হবে, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়’, ‘ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও, গ্যাস চোরের আস্তানা’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
আরও পড়ুনভোলায় গ্যাসভর্তি আরও তিনটি গাড়ি আটকে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ, উত্তেজনা১৯ এপ্রিল ২০২৫এ সময় বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক বশির আহমদ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ভোলা জেলা উত্তর শাখার সাধারণ সম্পাদক তরিকুল ইসলাম, মুসলিম ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও ভোলা দারুল হাদিস কামিল মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ মোবাশ্বিরুল হক নাঈম, ভোলার আলতাজের রহমান ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক ওবায়েদুর রহমান, প্রবীণ হিতৈষী সংঘের নেতা মুসলিম হাইস্কুলের সাবেক প্রধান শিক্ষক আবু তাহের, সহকারী অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন, ভোলা জেলা সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন, বদ্বীপ ছাত্রকল্যাণ সংসদের আহ্বায়ক রাহিম ইসলাম প্রমুখ।
আরও পড়ুনভোলার গ্যাস নিজেরা ব্যবহার করতে চান ভোলাবাসী, পাঁচ দাবিতে বিক্ষোভ-সমাবেশ২০ এপ্রিল ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
বাংলাদেশের জেল থেকে মুক্তি পেয়ে ভারতে ফিরেছেন ৪৭ মৎস্যজীবী
তিন মাসের বেশি সময় বাংলাদেশের জেলে বন্দি থাকার পর অবশেষে মুক্তি পেয়ে ভারতে ফিরেছেন ৪৭ জন মৎস্যজীবী। সোমবার বিকেলে গভীর সাগরে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড তাদেরকে ভারতীয় কোস্ট গার্ডের হাতে তুলে দেয়। এসময় ভারতের জেলে আটক থাকা ৩২ বাংলাদেশি মৎজীবীকেও ফিরিয়ে দেয় ভারতীয় কোস্টগার্ড।
সোমবার বিকালের পরে আন্তর্জাতিক জলসীমানায় দুই দেশের মৎস্যজীবীদের হস্তান্তর প্রক্রিয়া চলে। দু’দেশের হাইকমিশনের আলোচনার ভিত্তিতে এই বন্দিদের নিজেদের দেশে ফেরানো হয়। এদিকে ‘এফবি মা মঙ্গলচণ্ডী-৩৮’, ‘এফবি ঝড়’ এবং ‘এফবি পারমিতা’ নামক তিনটি ট্রলারও ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই তিন ট্রলারে থাকা ৪৮ জন ভারতীয়ের মধ্যে এক জনের মৃত্যু হয় বিচারাধীন অবস্থায়। ওই মৎস্যজীবীর কফিনবন্দি দেহ আগেই দেশে ফিরেছে। এবার মুক্তি মিলল বাকি ৪৭ জনের।
যারা ছাড়া পেয়েছেন তাদের সিংহভাগেরই বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার কাকদ্বীপে। বুধবার দুপুরে মুক্তি পাওয়া ভারতীয় মৎস্যজীবীদের নিয়ে আসা হয় দক্ষিণ ২৪ পরগনার ফ্রেজারগঞ্জ উপকূল থানাতে। এদের সবার বিরুদ্ধেই ছিল ভারত–বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক জলসীমা লঙ্ঘনের অভিযোগ। দীর্ঘদিন পর তাদের ফিরে পেয়ে খুশি পরিবারের সদস্যরা।
একইভাবে ভারতের এলাকায় ঢুকে মাছ ধরার দায়ে আটক করা হয়েছিল বাংলাদেশি ট্রলার ‘বাবার আশীর্বাদ’ ও ‘মায়ের দোয়া।’ তাতে থাকা ৩২ জন বাংলাদেশি মৎস্যজীবীরও মুক্তি মিলেছে।
সুন্দরবন সামুদ্রিক মৎস্যজীবী শ্রমিক সংগঠনের সম্পাদক সতীনাথ পাত্র জানান, দুই দেশের উপকূলরক্ষী বাহিনী আন্তর্জাতিক সমুদ্র সীমারেখায় (আইএমবিএল) ওই ৭৯ জন মৎস্যজীবীকে প্রত্যর্পণ করেছে। দু’দেশের এই বন্দি প্রত্যর্পণ দ্রুত সম্ভব হয়েছে বাংলাদেশ ও ভারতীয় হাইকমিশনের তৎপরতায়। এছাড়া পশ্চিমবঙ্গ সরকার এবং কেন্দ্রীয় সরকারও মৎস্যজীবীদের দ্রুত মুক্তির বিষয়ে উদ্যোগ নেয়। গোটা প্রক্রিয়ায় সমস্ত পক্ষের সঙ্গে সুন্দরবন সামুদ্রিক মৎস্যজীবী শ্রমিক সংগঠন যোগাযোগ রক্ষা করে চলছিল।
ঢাকা/সুচরিতা/শাহেদ