তিন মাসের বেশি সময় বাংলাদেশের জেলে বন্দি থাকার পর অবশেষে মুক্তি পেয়ে ভারতে ফিরেছেন ৪৭ জন মৎস্যজীবী। সোমবার বিকেলে গভীর সাগরে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড তাদেরকে ভারতীয় কোস্ট গার্ডের হাতে তুলে দেয়। এসময় ভারতের জেলে আটক থাকা ৩২ বাংলাদেশি মৎজীবীকেও ফিরিয়ে দেয় ভারতীয় কোস্টগার্ড।

সোমবার বিকালের পরে আন্তর্জাতিক জলসীমানায় দুই দেশের মৎস্যজীবীদের হস্তান্তর প্রক্রিয়া চলে। দু’দেশের হাইকমিশনের আলোচনার ভিত্তিতে এই বন্দিদের নিজেদের দেশে ফেরানো হয়। এদিকে ‘এফবি মা মঙ্গলচণ্ডী-৩৮’, ‘এফবি ঝড়’ এবং ‘এফবি পারমিতা’ নামক তিনটি ট্রলারও ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই তিন ট্রলারে থাকা ৪৮ জন ভারতীয়ের মধ্যে এক জনের মৃত্যু হয় বিচারাধীন অবস্থায়। ওই মৎস্যজীবীর কফিনবন্দি দেহ আগেই দেশে ফিরেছে। এবার মুক্তি মিলল বাকি ৪৭ জনের।

যারা ছাড়া পেয়েছেন তাদের সিংহভাগেরই বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার কাকদ্বীপে। বুধবার দুপুরে মুক্তি পাওয়া ভারতীয় মৎস্যজীবীদের নিয়ে আসা হয় দক্ষিণ ২৪ পরগনার ফ্রেজারগঞ্জ উপকূল থানাতে। এদের সবার বিরুদ্ধেই ছিল ভারত–বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক জলসীমা লঙ্ঘনের অভিযোগ। দীর্ঘদিন পর তাদের ফিরে পেয়ে খুশি পরিবারের সদস্যরা। 

একইভাবে ভারতের এলাকায় ঢুকে মাছ ধরার দায়ে আটক করা হয়েছিল বাংলাদেশি ট্রলার ‘বাবার আশীর্বাদ’ ও ‘মায়ের দোয়া।’ তাতে থাকা ৩২ জন বাংলাদেশি মৎস্যজীবীরও মুক্তি মিলেছে। 

সুন্দরবন সামুদ্রিক মৎস্যজীবী শ্রমিক সংগঠনের সম্পাদক সতীনাথ পাত্র জানান, দুই দেশের উপকূলরক্ষী বাহিনী আন্তর্জাতিক সমুদ্র সীমারেখায় (আইএমবিএল) ওই ৭৯ জন মৎস্যজীবীকে প্রত্যর্পণ করেছে। দু’দেশের এই বন্দি প্রত্যর্পণ দ্রুত সম্ভব হয়েছে বাংলাদেশ ও ভারতীয় হাইকমিশনের তৎপরতায়। এছাড়া পশ্চিমবঙ্গ সরকার এবং কেন্দ্রীয় সরকারও মৎস্যজীবীদের দ্রুত মুক্তির বিষয়ে উদ্যোগ নেয়। গোটা প্রক্রিয়ায় সমস্ত পক্ষের সঙ্গে সুন্দরবন সামুদ্রিক মৎস্যজীবী শ্রমিক সংগঠন যোগাযোগ রক্ষা করে চলছিল।
 

ঢাকা/সুচরিতা/শাহেদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

সুন্দরবন থেকে ৭ জেলেকে অপহরণ, মুক্তিপণ দাবি

সুন্দরবন থেকে সাত জেলেকে অপহরণ করেছে জলদস্যুরা। রবিবার (৭ ডিসেম্বর) সকালে পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জ মালঞ্চ নদীর হাঁসখালী খাল থেকে ডন বাহিনী পরিচয়ে তাদের অপহরণ করা হয়। এই জেলেদের মুক্তিপণ হিসেবে মাথাপিছু ৫০ হাজার টাকা করে দাবি করা হয়েছে বলে জানান অন্য জেলেরা। 

অপহৃত জেলেরা হলেন- সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার দক্ষিণ কদমতলা গ্রামের আব্দুল আজিজ (৫০), ইব্রাহিম হোসেন (৪৫), আনারুল ইসলাম (২২), নাজমুল হক (৩৪), শামিম হোসেন (৩৬), আনোয়ার হোসেন (৩২) ও হরিনগর জেলেপাড়ার মুজিবুল হোসেন (৩৫)।

আরো পড়ুন:

সুন্দরবনে ট্রলারডুবি: নিখোঁজ নারী পর্যটকের মরদেহ উদ্ধার

সুন্দরবনে রাসপূজায় যেতে বন বিভাগের ৫ রুট, মানতে হবে যেসব নির্দেশনা

সুন্দরবন থেকে ফেরত আসা জেলে ফজর আলী ও সবুজ মিয়া জানান, সাতক্ষীরা রেঞ্জের কদমতলা স্টেশন থেকে তিনদিন আগে অনুমতি (পাস) নিয়ে কাঁকড়া ধরার জন্য সুন্দরবনে যান জেলেরা। কাঁকড়া শিকারের জন্য তারা মালঞ্চ নদীর বিভিন্ন খালে অবস্থান করছিলেন।

গতকাল রবিবার সকাল ৮টার দিকে তিনটি নৌকায় ১০জন বন্দুকধারী জেলেদের ঘিরে ধরে। প্রতি নৌকা থেকে একজন করে উঠিয়ে নেয় তারা। চলে যাওয়ার সময় একটি নম্বর দিয়ে সেখানে মুক্তিপণের টাকা পাঠানোর নির্দেশ দেয়। তিন দিনের মধ্যে মুক্তিপণ না দিলে অপহৃত জেলেদের হাত-পা ভেঙে হত্যার পর নদীতে ফেলে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে জলদস্যুরা।

পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. ফজলুল হক বলেন, ‍“বনবিভাগের স্মার্ট পেট্রাল টিমের সদস্যরা সুন্দরবনের ভেতরে রয়েছে। সবকিছু নিশ্চিত হয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”

ঢাকা/শাহীন/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিস্তৃত প্রশ্ন, উত্তরও বড় হবে
  • পরিবার থেকে শিশুর মনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা জাগাতে কী করবেন
  • সুন্দরবন থেকে ৭ জেলেকে অপহরণ, মুক্তিপণ দাবি