এখনই বন্ধ হচ্ছে না ফেরি কপোতাক্ষ
Published: 22nd, April 2025 GMT
যত দিন চলাচলের উপযোগিতা থাকবে, তত দিন চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড-সন্দ্বীপ রুটে সেবা দেবে ফেরি কপোতাক্ষ। আগামী সপ্তাহেই রুটটিতে যুক্ত হতে পারে সি-ট্রাকও। আজ মঙ্গলবার প্রথম আলোকে এমনটাই জানিয়েছেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ ইউসুফ। এর আগে আগামীকাল বুধবার থেকেই এই রুটে ফেরি চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিলেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের কর্মকর্তারা। তখন জানানো হয়েছিল, এই রুটে সি-ট্রাক যুক্ত করতে জুন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। তত দিন এই রুটটি কার্যত অচল থাকবে।
ফেরি বন্ধের ঘোষণায় সন্দ্বীপের মানুষের ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার পর আজ দুপুরে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে উল্লেখ করেন, ফেরি বন্ধের সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি। এই পরিপ্রেক্ষিতে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের কাছে জানতে চাইলে এখনই ফেরি বন্ধ না হওয়ার বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন তিনি।
সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ ইউসুফ প্রথম আলোকে বলেছেন, ‘ফেরি চলাচলের উপযোগিতা যত দিন থাকবে, তত দিন ফেরি চলবে সন্দ্বীপ চ্যানেলে। ফেরি চলাচলের অনুকূল পরিস্থিতি না থাকলে বন্ধ থাকবে। এ ছাড়া আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সি-ট্রাক পৌঁছাতে পারে সেখানে। তবে উপকূলীয় সি-ট্রাক নেই আমাদের হাতে। জুনের মধ্যে একটি উপকূলীয় সি-ট্রাক এই রুটে যুক্ত হবে। বর্ষাকালে বিআইডব্লিউটিসির জাহাজ ‘মালঞ্চ’ এবং সি-ট্রাক সেবা দিয়ে যাবে।’
সি-ট্রাক চলাচল শুরু হলেও ফেরি কপোতাক্ষ চলবে বলে জানান সচিব মোহাম্মদ ইউসুফ। তিনি বলেন, সি-ট্রাক আসার পরও ফেরি থাকবে। আবহাওয়া পরিস্থিতি বিবেচনায় যত দিন সম্ভব সেবা দিয়ে যাবে।
এর আগে গতকাল সোমবার বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের পরিচালক (বাণিজ্য) এস এম আশিকুজ্জামান প্রথম আলোকে জানিয়েছিলেন, এই রুটে পরিষেবা বন্ধ করে ফেরি কপোতাক্ষকে চাঁদপুরের অভ্যন্তরীণ রুটে ফিরিয়ে নেওয়া হবে। জুন মাসে সি-ট্রাক এনে রুটটি পুনরায় সচল করার কথাও বলেন তিনি।
ফেরি বন্ধের ঘোষণা আসার পর এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে সন্দ্বীপের বিভিন্ন সংগঠন। আজ তারা চট্টগ্রাম ও সন্দ্বীপে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে।
এ অবস্থায় বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান আজ দুপুর ১২টায় ফেসবুকে ফেরি চালু থাকার সিদ্ধান্তের কথা জানান।
গত ২৪ মার্চ চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড থেকে সন্দ্বীপে ফেরি চলাচল শুরু হয়। চট্টগ্রামের বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলাটির সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে ফেরি চলাচল ব্যাপক উৎসাহের সূচনা করে। পরিবর্তন নিয়ে আসে ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে। উদ্বোধনের এক মাসের মাথায় ফেরি চলাচল বন্ধের খবরে হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন সন্দ্বীপের বাসিন্দারা।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রথম আল ক ন পর বহন ম হ ম মদ বন ধ র এই র ট
এছাড়াও পড়ুন:
অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার
অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় ওই চারজনের কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবের শুনানি শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বহিষ্কৃত সদস্যরা হলেন আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবির হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিক ও তরফদার আবদুল মুকিত। তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আদালতের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
এ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হওয়াতে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ সমিতির নিয়মনীতির ঊর্ধ্বে নন। বৃহস্পতিবার ওই চার সদস্যকে বহিষ্কারের বিষয়টি নোটিশ দিয়ে জানানো হবে।’
সমিতি সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দ কবির হোসেনের (জনি) কাছে ৩৫ লাখ টাকায় শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকায় জমি বিক্রি করেন ইমরান হাসান। জমি রেজিস্ট্রির আগে সব টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও সৈয়দ কবির হোসেন ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। বাকি ২৫ লাখ টাকা না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। পরে তিনি আরও ১৭ লাখ টাকা দেন। বাকি ৮ লাখ টাকা চাইলে হুমকি দিতে থাকেন কবির হোসেন। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ইমরান হাসান আইনজীবী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।
সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে কবির হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কবির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।
এ বিষয়ে আইনজীবী কবির হোসেন বলেন, ‘বহিষ্কারের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে যে বিষয়ে আমাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, সেই বিষয়ে অভিযুক্ত আমি নই। তারপরও আইনজীবী সমিতি আমার অভিভাবক; তারা যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’
অন্যদিকে অভয়নগরের নওয়াপাড়ার জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশন পাওনা টাকা আদায়ে আবদুর রাজ্জাককে মামলার আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিল। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আবদুর রাজ্জাক আটটি চেকের মামলা পরিচালনা করেন। এসব মামলার রায় ও আপিল বাদীর অনুকূলে যাওয়ার পর আটটি চেকের ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেন আবদুর রাজ্জাক। এ টাকা জয়েন্ট ট্রেডিং কর্তৃপক্ষকে না দিয়ে তিনি ঘোরাতে থাকেন। চলতি বছরের ৪ জুন তিনি ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করা যায়নি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল ওহাব গত ২৮ জুলাই আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে যশোর আইনজীবী সমিতি বরাবর অভিযোগ করেন।
এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবদুর রাজ্জাককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় যশোর আইনজীবী সমিতি। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় আবদুর রাজ্জাককে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া রফিকুল ইসলাম রফিক তাঁর সহকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণ ও মামলা করতে টাকা ও কাগজপত্র নিয়ে মামলা না করায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আইনজীবী তরফদার আবদুল মুকিতের বিরুদ্ধেও নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।