ঢাকাই চলচ্চিত্রের পাঁচজন খ্যাতনামা প্রযোজক চলচ্চিত্রের স্বত্ব ফিরে পেতে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন অভিনেতা-প্রযোজক-পরিচালক মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা, প্রযোজক ও অভিনেতা মনোয়ার হোসেন ডিপজল এবং প্রয়াত চিত্রনায়ক মান্নার পক্ষে তার স্ত্রী শেলী মান্না। তাদের সঙ্গে রয়েছেন প্রযোজক নারগিস আক্তার ও মনতাজুর রহমান আকবর।

জানা গেছে, সম্প্রতি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বরাবর সকল প্রযোজকের পক্ষ থেকে লিখিতভাবে আবেদনটি জমা দেওয়া হয়। আবেদনপত্রে কপিরাইট আইন ২০২৩-এর ১৭ ধারা (উপধারা ৩) ও ২১ ধারা উল্লেখ করে বলা হয়, অতীতে দেশের বিভিন্ন লেবেল প্রতিষ্ঠান নানা কৌশলে প্রযোজকদের কাছ থেকে চলচ্চিত্রের স্বত্ব লিখে নিয়েছে। বর্তমানে এসব লেবেল কোম্পানি চলচ্চিত্রগুলো নিজেদের ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে সম্প্রচার করে বিপুল পরিমাণে অর্থ উপার্জন করছে, অথচ প্রকৃত প্রযোজকরা রয়েছেন উপেক্ষিত ও ক্ষতিগ্রস্ত।

প্রযোজকদের দাবি, কপিরাইট অফিসে গিয়েও তারা ন্যায্য অধিকার পাননি। বরং বিগত সরকারের সময় তাদের বিপক্ষে সিদ্ধান্ত এসেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

আরো পড়ুন:

স্ত্রীর সঙ্গে কখনো ঝগড়া হয়নি অস্কারজয়ী অভিনেতার

ধানুশের শুটিং সেটে আগুন

সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আবেদন গ্রহণ করার পর পরই বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হচ্ছে এবং কপিরাইট অফিসকে বিষয়টি সমাধানে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে কাজ শুরু করেছে বলেও জানা গেছে।

আশা ব্যক্ত করে প্রযোজকরা জানান, বর্তমান সরকার চলচ্চিত্রের এই মেধাস্বত্ব সংকটের ন্যায়সঙ্গত ও টেকসই সমাধান দেবে।

ঢাকা/রাহাত/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র চলচ চ ত র র

এছাড়াও পড়ুন:

প্রযুক্তি কি ডিমেনশিয়া বাড়িয়ে দিচ্ছে? ৫৭টি ভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে বিস্ময়কর তথ্য

প্রযুক্তির কল্যাণে হুটহাট বড় পরিবর্তন আসা নতুন কিছু নয়। করোনা মহামারির আগে বাসা থেকেও যে অফিস করা সম্ভব, সেটা মানতে চাইতেন না অনেকে। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হোম অফিস হয়েছে স্বাভাবিক। একই ঘটনা ঘটেছে ডিজিটাল দুনিয়ায়। একসময় যেকোনো তথ্য খুঁজে বের করার জন্য শরণাপন্ন হতে হতো সার্চ ইঞ্জিনের; এআই সেই উত্তর সবিস্তারে দিয়ে দিচ্ছে মুহূর্তেই। ফলে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন শুধু জীবনকে সহজতর করছে না, বাঁচিয়ে দিচ্ছে সময় ও পরিশ্রমও। কিন্তু এই বেঁচে যাওয়া সময় ও পরিশ্রম মস্তিষ্কের ওপর ঠিক কীভাবে প্রভাব ফেলছে?

যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস ও বেলোর ইউনিভার্সিটির এক যৌথ গবেষণায় দেখা গেছে, এত দিন প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে মানব মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা কমার যে গুঞ্জন ভেসে বেড়িয়েছে, তার কোনো সত্যতা নেই। ‘নেচার হিউম্যান বিহেভিয়ার’ জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণায় দেখা গেছে, ‘ডিজিটাল ডিমেনশিয়া’ নামে যে হাইপোথিসিস আছে, তার কোনো প্রমাণ নেই গবেষকদের কাছে। বরং পঞ্চাশোর্ধ্ব মানুষদের স্মার্টফোন, কম্পিউটার কিংবা ইন্টারনেট ব্যবহার তাঁদের স্বাভাবিক স্মৃতিভ্রম অনেকটা স্তিমিত করে।

ডিজিটাল ডিমেনশিয়া কী

২০১২ সালে প্রথম ‘ডিজিটাল ডিমেনশিয়া’ তত্ত্ব নিয়ে হাজির হন জার্মান স্নায়ুবিজ্ঞানী ও মনোবিদ ম্যানফ্রেড স্পিৎজার। মূলত যে হারে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে এবং মানুষ যান্ত্রিক পর্দার সামনে প্রতিদিনের বেশির ভাগ সময় কাটাচ্ছে, তাতে প্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীলতা বাড়ছে অনেকটাই। এতে নিত্যপ্রয়োজনীয় তথ্যগুলোও মনে রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে অনেকে। যেমন ফোন নম্বর। একসময় প্রিয়জনের ফোন নম্বর আমাদের মুখস্থ থাকত। এখন ফোন নম্বর ঠাঁই পায় মুঠোফোনের কনটাক্ট লিস্টে। ফোন নম্বর মনে রাখার চেষ্টাই করে না কেউ। আবার অনেকক্ষণ যান্ত্রিক পর্দার সামনে থাকলেও সেখান থেকে শেখার ইচ্ছা থাকে না অনেকের। চোখের সামনে যা আসছে, স্ক্রল করে চলে যাচ্ছে পরের কোনো কনটেন্টে। এতে মনোযোগ হারিয়ে যায় দ্রুত। আর প্রযুক্তির এমন অতিব্যবহার যে স্মৃতিশক্তি কমিয়ে দিচ্ছে, একেই ধরা হয় ‘ডিজিটাল ডিমেনশিয়া’ হিসেবে।

আরও পড়ুনডিজিটাল স্ক্রিন ব্যবহারের সময় ২০-২০-২০ নিয়ম মানাটা কেন জরুরি২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩গবেষণা যা বলছে

প্রায় ৪ লাখ ১১ হাজার পঞ্চাশোর্ধ্ব মানুষের ওপর চালানো ৫৭টি ভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে যে স্মৃতিভ্রম দেখা দেয়, তার অনেকটাই হ্রাস করে প্রযুক্তির ব্যবহার। প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহারের ফলে স্মৃতিশক্তি কমে আসার আশঙ্কা প্রায় ৫৮ শতাংশে নেমে আসে।

স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া বরং আরও কিছু সূচকের (যেমন সামাজিক, অর্থনৈতিক ও পারিবারিক অবস্থা) ওপর নির্ভর করে। মজার ব্যাপার হলো, নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার থেকেও বেশি কার্যকর প্রযুক্তির ব্যবহার।

তবে এর সবকিছুই নির্ভর করছে প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহারের ওপর। পঞ্চাশোর্ধ্ব ব্যক্তিরা বেশির ভাগ সময়ই অনলাইনে কাটান ইউটিউব ভিডিও অথবা ফেসবুক স্ক্রল করে। এতে তাঁদের মস্তিষ্কের ব্যবহার হয় না বললেই চলে। মস্তিষ্ক সচল রাখতে পারে এমন কনটেন্টে তাঁদের মনোযোগ সরিয়ে নিতে পারলে আনন্দ যেমন পাবেন, তেমনই ডিজিটাল দুনিয়া সম্পর্কে তাঁদের দৃষ্টিভঙ্গিও পালটে যাবে। এ ছাড়া অনলাইনের হাজারো গুজব ও উসকানি থেকে মুক্ত থাকবেন তাঁরা।

সূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট

আরও পড়ুনমাত্রাতিরিক্ত স্ক্রিনটাইম যেভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন০১ সেপ্টেম্বর ২০২৩

সম্পর্কিত নিবন্ধ