গরমে ব্যালকনি হোক স্বস্তির জায়গা, সাজিয়ে ফেলুন কয়েকটি উপায়ে
Published: 23rd, April 2025 GMT
গরমে ব্যালকনি মানেই স্বস্তির জায়গা। কড়া রোদের শেষে হাওয়া-বাতাসের আশায় বারান্দায় পা রাখছেন বাড়ির মালিকেরা। গরমের ছুটিতে বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনা না থাকলে বিকেলের পর বারান্দাই হতে পারে আপনার শান্তির ঠিকানা। অথবা অতিথি এলে আপনার ছোট ব্যালকনিতেই জমে উঠতে পারে আড্ডা। তা হলে দেরি না করে অনন্য করে তুলুন বর্গাকার বা আয়তাকার ব্যালকনি।
প্রকৃতির ছোঁয়া: দামি দামি জিনিস কিনে বারান্দায় এনে রাখলেই হয় না। বরং কম খরচে ছোটখাটো গাছপালা এনে সাজালে সুন্দরের পাশাপাশি প্রাণবন্ত হয়ে উঠবে আপনার ব্যালকনি। সুস্থ হাওয়া-বাতাসে আরও আরামদায়ক মনে হবে বাড়ির এই ছোট্ট কোণটিকে। টবে লাগানো গাছপালা মেঝেতে রাখতে পারেন। কিন্তু সবচেয়ে ভাল হয়, দেওয়ালে ঝুলন্ত প্ল্যান্টার ব্যবহার করলে। এতে জায়গাও বাঁচবে, পাশাপাশি অভিনব হয়ে উঠবে গৃহসজ্জা।
বসার জায়গা: বারান্দার ব্যবহার বাড়াতে আরামদায়ক বসার ব্যবস্থা কিন্তু অপরিহার্য। দামি আসবাবপত্রের বদলে ফোল্ডিং চেয়ার-টেবিল এনে রাখতে পারেন। বৃষ্টির সময়ে প্রয়োজনে সেগুলি ঘরের ভিতরে নিয়ে যেতে পারবেন। যদি বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচার জন্য বারান্দায় কাচের জানালা থাকে, তা হলে নিচু, মেঝেতে রাখার সোফাও ব্যবহার করতে পারেন। এর পাশাপাশি ছোট দোলনা টাঙিয়ে দিন এক পাশে। তা হলে অনেকের বসার বন্দোবস্ত হয়ে যাবে। তা ছাড়া স্টোরেজ বেঞ্চও রাখতে পারেন। একাধারে বসে আড্ডা এবং জিনিসপত্র রাখার কাজ, দু’টিই হয়ে যাবে।
গালিচা অথবা ঘাস-কার্পেট: বারান্দার মেঝেকে আরও আরামদায়ক করতে হলে নরম রঙিন গালিচা পেতে দিতে পারেন। অথবা কৃত্রিম ঘাসের কার্পেটও রাখতে পারেন। সে ক্ষেত্রে নীচে বসার সুবিধা পাবেন, আবার হাঁটাচলাতেও আরাম হবে। উপরন্তু, ছোট্ট বারান্দাটি দেখতে সুন্দর লাগবে।
আলোকসজ্জা: সন্ধ্যার পর বারান্দাকে আলোকোজ্জ্বল দেখাতে আলো দিয়ে সাজিয়ে তুলুন। মস্ত ঝাড়লণ্ঠন বা ল্যাম্পশেড নয়। এতে জায়গা নষ্ট হবে। টুনি বাল্ব দিয়ে মাথার উপর ঝুলিয়ে দিতে পারেন। অথবা দেওয়াল জুড়ে টুনি বাল্ব সেঁটে দিতে পারেন। কিংবা পুরনো দিনের লণ্ঠনের মতো আলো দেওয়ালে পেরেক দিয়ে টাঙিয়ে দিতে পারেন। জায়গা বাঁচবে, দেখতেও সুন্দর লাগবে।
নিজস্বতার ছোঁয়া: নিজে হাতে রঙ করা পাত্র, নিজের আঁকা, হাতে তৈরি কুশন অথবা অরিগ্যামির মতো আপনার নিজস্ব জিনিসপত্র দিয়ে ব্যালকনি সাজালে, তাতে অন্য মাত্রা যোগ হয়। অন্য সব সজ্জিত বারান্দার পাশে আপনার ব্যালকনি হয়ে উঠতে পারে অনন্য।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আপন র
এছাড়াও পড়ুন:
আরপিওর বিধানের বৈধতার রায় রিভিউর জন্য হলফনামার অনুমতি
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থনসংবলিত স্বাক্ষরযুক্ত তালিকা মনোনয়নের সঙ্গে যুক্ত করাসংক্রান্ত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের বিধানের বৈধতা দিয়ে ১৪ বছর আগে রায় দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ। এই রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে আবেদনের জন্য হলফনামার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছেন দুজন আইনজীবীসহ সাত ব্যক্তি। শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব আজ সোমবার হলফনামা করার অনুমতি দিয়েছেন।
আবেদনকারী সাত ব্যক্তি হলেন ব্যারিস্টার এম সারোয়ার হোসেন, মেজর (অব.) এস এম হারুনুর রশীদ, কাজী জাহেদুল ইসলাম, আইনজীবী এস এম আজমল হোসেন, মেজর (অব.) নিয়াজ আহমেদ জাবের, মেজর (অব.) মো. জিয়াউল আহসান ও সালাহ উদ্দিন।
আদালতে আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ওমর ফারুক। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এ মামলায় আবেদনকারীরা পক্ষ ছিলেন না। যে কারণে তৃতীয় পক্ষ হিসেবে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন দায়েরের জন্য হলফনামা করার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন তাঁরা। চেম্বার আদালত হলফনামা দায়ের করার অনুমতি দিয়েছেন। আনুষঙ্গিক প্রক্রিয়া শেষে শিগগিরই রিভিউ আবেদন করা হবে।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) ১২(৩ক)(ক) বিধান অনুযায়ী নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থনসংবলিত স্বাক্ষরযুক্ত তালিকা মনোনয়নপত্রের সঙ্গে যুক্ত করে দিতে হবে। তবে শর্ত থাকে যে কোনো স্বতন্ত্র প্রার্থী ইতিপূর্বে জাতীয় সংসদের কোনো নির্বাচনে সদস্য নির্বাচিত হয়ে থাকলে ওই তালিকা প্রদানের প্রয়োজন হবে না।
আইনজীবীর তথ্য অনুসারে, ঢাকার একটি আসন থেকে ২০০৭ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাহবুব আহমেদ চৌধুরী নামে এক ব্যক্তি মনোনয়নপত্র নেন। পরে নির্বাচনের ওই তারিখ পিছিয়ে যায়। অন্যদিকে ২০০৮ সালে আরপিও দফা ১২(৩ক)–তে সংশোধনী আনা হয়। এই বিধান সংবিধানের কয়েকটি অনুচ্ছেদ ও আরপিওর ১২(১) ধারার পরিপন্থী উল্লেখ করে মাহবুব আহমেদ চৌধুরী ২০১০ সালে হাইকোর্ট রিট করেন। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল দেন। চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১০ সালের ১৬ আগস্ট হাইকোর্ট রুল ডিসচার্জ (খারিজ) করে রায় দেন। দফা (৩ক) সংবিধান পরিপন্থী নয় বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়।
হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে ২০১০ সালে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেন রিট আবেদনকারী। শুনানি শেষে আপিল বিভাগ ২০১১ সালের ২৩ জানুয়ারি লিভ টু আপিল খারিজ করে রায় দেন। স্বতন্ত্র প্রার্থীর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থনসংবলিত স্বাক্ষরযুক্ত তালিকা মনোনয়নের সঙ্গে যুক্ত করাসংক্রান্ত আরপিওর ১২(৩ক)–তে বেআইনি কিছু পাননি বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়।
ওই রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে দুই আইনজীবীসহ সাত ব্যক্তি আবেদন করতে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তাঁদের আইনজীবী ওমর ফারুক। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিতে ভোটারের গোপনীয়তা রক্ষা করতে হবে। ভোটার কোন প্রার্থীকে ভোট দেবেন বা দেবেন না, এটি একান্তই তাঁর চিন্তা ও মতপ্রকাশের অধিকার। সিক্রেট ব্যালটে হামলা হলে ভোট বাতিলও হয়। সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদে প্রার্থীর যোগ্যতা নির্ধারণ করা আছে। রাজনৈতিক দল হলে ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থন লাগবে না, অথচ স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে গেলে লাগবে অর্থাৎ একই মনোনয়নপত্র ঘিরে দ্বৈত বিধান। ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থন থাকার ওই বিধানের মাধ্যমে স্বতন্ত্র প্রার্থীকে নির্বাচন থেকে বিরত রাখার সুযোগ তৈরি হয়েছে, যা সংবিধান সমর্থন করে না এবং ভোটারের গোপনীয়তারও লঙ্ঘন—এসব যুক্তি তুলে ধরে আবেদনটি করা হয়।