বিচার চেয়ে যা বললেন শাহরুখ-প্রিয়াঙ্কা-সালমানরা
Published: 23rd, April 2025 GMT
ভারতের কাশ্মীরে জঙ্গি হামলায় অন্তত ২৫ পর্যটক নিহত হয়েছেন। একে সাম্প্রতিক সময়ে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা বলে অভিহিত করেছে কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলার পহেলগাঁওয়ের বাইসারানে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ এ হামলার বিচার চেয়েছেন শাহরুখ, সালমান খানসহ বলিউডের তারকারা।
ভারতীয় গণমাধ্যমকে শাহরুখ খান বলেন, ‘পহেলগাঁওতে ঘটা এমন অমানবিক ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি আমি। এরকম সময়ে, আমরা শুধু ঈশ্বরের শরণাপন্ন হতে পারি। আর নিহতদের পরিবারের জন্য প্রার্থনা করতে পারি। আমরা এক দেশ, এক জাতি হিসেবে এই ঘৃণ্য কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ন্যায়বিচার চাইছি।’
সালমান খানের মন্তব্য, ‘যে কাশ্মীরকে পৃথিবীর ভূস্বর্গ বলা হত, সেটা এখন নরকে পরিণত হয়েছে। নিরীহ মানুষদের টার্গেট করা হচ্ছে। নিহতদের পরিবারের প্রতি আমার সমবেদনা রইল। একটা নিরীহ মানুষকে হত্যা করা পুরো বিশ্বজগততে মেরে ফেলার সমান।”
পাশাপাশি নিহতদের পরিবারের উদ্দেশে সমবেদনা জানিয়েছেন প্রিয়াঙ্কা চোপড়া। তার প্রতিক্রিয়া, “পহেলগাঁওতে যা ঘটেছে তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। মানুষ সেখানে কেউ ছুটি কাটাতে, কেউ মধুচন্দ্রিমা করতে আবার কেউ বা পরিবারের সঙ্গে উদযাপন করতে গিয়েছিল। শুধুমাত্র কাশ্মীরের সৌন্দর্য উপভোগ করতে গিয়েছিল। এই নিরীহ মানুষগুলো এমন এক ঝড়ের কবলে পড়ল, যেটা তারা কোনওদিন কল্পনাও করতে পারেনি। এই জঘন্য ঘটনা মানবতার বিবেককে অন্তত নাড়া দিক।’
অভিনেত্রী-সাংসদ কঙ্গনা রনৌতে ভাষ্য, ‘ওঁরা নিরীহ নাগরিকদের উপর নির্বিচারে গুলি চালিয়ে দিল। যাঁদের কাছে নিজেদের রক্ষা করার জন্য কোনও অস্ত্রও ছিল না। ইতিহাসের প্রতিটি যুদ্ধ কেবল যুদ্ধক্ষেত্রেই হয়েছে, আর যখন থেকে এই নপুংসকদের হাতে অস্ত্র উঠেছে, এরা কেবল নিরীহ মানুষদেরই হত্যা করে চলেছে। এদের বিচার হবে।’
অনুপম খের বলেন, ‘আমি হাত জোড় করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ এবং সমগ্র সরকারের কাছে অনুরোধ জানাই- এবার এই সন্ত্রাসীদের এমন উচিত শিক্ষা দেওয়া হোক, যাতে তারা পরবর্তী সাত জন্মেও এই ধরনের কাজ না করতে পারে। সন্ত্রাসবাদীদের প্রতি কোনও দয়ামায়া নয়। নিজের শব্দচয়নের ক্ষেত্রে সংযত হলে চাইলেও পারছি না।’ সূত্র: আনন্দবাজার ও সংবাদ প্রতিদিন
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: পর ব র র
এছাড়াও পড়ুন:
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস আজ
‘উদয়ের পথে শুনি কার বাণী/ ভয় নাই ওরে ভয় নাই/ নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান/ ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই’। তাঁদের নিঃশেষে প্রাণদানের স্মৃতি আজ গভীর বেদনায় স্মরণ করবে জাতি। আজ থেকে ৫৪ বছর আগে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীরা হানাদার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নীলনকশার শিকার হয়ে নির্মম হত্যার শিকার হয়েছিলেন।
অমিত বিক্রম বাঙালির জীবনপণ যুদ্ধে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর চূড়ান্ত পরাজয় তখন ছিল কেবল দিনগণনার বিষয়। সেই অনিবার্য পরাজয়ের প্রাক্কালে মরণকামড় দেওয়ার চেষ্টা করেছিল ঘাতক বাহিনী। স্বাধীনতা অর্জন করলেও বাঙালি জাতি যেন মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে, সেই চক্রান্ত করেছিল তারা। দেশের সেরা বুদ্ধিজীবীদের তালিকা করে তাঁদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্মম নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছিল। এ কাজে পাকিস্তানি সেনাদের সরাসরি সহায়তা করেছিল তাদের মিত্র এ দেশি রাজাকার, আলবদর বাহিনী। এরাই ঘাতক সেনাদের নিয়ে গিয়ে চিনিয়ে দিয়েছে বুদ্ধিজীবীদের বাড়ি। চিনিয়ে দিয়েছে সেই নিরীহ মানুষগুলোকে।
মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ে পরে মিরপুরে রায়েরবাজার পরিত্যক্ত ইটখোলা ও মিরপুরে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া সেসব বুদ্ধিবৃত্তিক পেশায় যুক্ত মানুষের মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়। তাঁদের অনেকের ছিল পিছমোড়া করে হাত ও চোখ বাঁধা। ভয়ানক নির্যাতনের চিহ্ন ছিল শরীরে। তাঁদের মরদেহ উদ্ধার হওয়ার মধ্য দিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বুদ্ধিজীবী হত্যার গভীর ষড়যন্ত্র প্রকাশ হয়ে পড়ে। এর পর থেকেই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা ও শোক প্রকাশ করে ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়ে আসছে।
শুধু ঢাকাতেই নয়, সারা দেশেই বুদ্ধিবৃত্তিক কাজে যুক্ত মানুষদের হত্যা করেছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। এই হত্যাকাণ্ডের ছিল দুটি পর্যায়। ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে হানাদার সেনারা রাজধানীতে গণহত্যা শুরু করেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকায় সাধারণ নিরীহ জনসাধারণের পাশাপাশি শিক্ষক, চিকিৎসকদেরও হত্যা করে। এরপর থেকে হানাদাররা সারা দেশের শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, শিল্পী, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, গবেষক, সংস্কৃতিসেবীসহ মেধা মনন সৃজনশীল কাজে যুক্ত মানুষদের বেছে বেছে হত্যা করতে থাকে। মুক্তিযুদ্ধে শেষ পর্যায় তারা এই বুদ্ধিবৃত্তিক মানুষদের নিঃশেষ করে দেওয়ার জন্য তালিকা করে হত্যা চালাতে থাকে। তাঁদের মধ্যে যেমন প্রবীণ প্রাজ্ঞজনেরা ছিলেন, তেমনি ছিলেন উদিত যৌবনের বহু সম্ভাবনাময় তরতাজা প্রাণ। আজ তাঁদের স্মৃতির স্মরণ করা হবে সারা দেশে।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক বাণী দিয়েছেন।
কর্মসূচিশহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আন্তমন্ত্রণালয়ের সভায় জানানো হয়েছে, আজ রোববার সকাল ৭টা ৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং ৭টা ৬ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। তাঁরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে সেখানে নীরবে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবেন। এ সময় বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টাকে রাষ্ট্রীয় স্যালুট প্রদান করবে।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার পুষ্পস্তবক অর্পণের পর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসরাত চৌধুরী, শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্য এবং হুইলচেয়ারধারী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।