শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিবেশ-শৃঙ্খলা রক্ষায় কঠোর অবস্থানে তিন কলেজ
Published: 23rd, April 2025 GMT
রাজধানীর সায়েন্স ল্যাব মোড় এলাকায় শিক্ষার্থীদের মাঝে সম্ভাব্য সংঘর্ষ এড়াতে ঢাকা কলেজ, সিটি কলেজ ও আইডিয়াল কলেজের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এক জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) বিকেল পৌনে পাঁচটায় ধানমন্ডি মডেল থানায় অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিবেশ ও শৃঙ্খলা রক্ষায় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। বৈঠকে ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলমসহ তিন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও শিক্ষক প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে যেসব সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে—
আরো পড়ুন:
ভৈরবে দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ৩০
সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে টেঁটাবিদ্ধ হয়ে নিহত ১
১.
২. তালিকাভুক্ত শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের ডেকে সতর্ক করা হবে। সংশোধন না হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
৩. শৃঙ্খলা ভঙ্গকারীদের প্রয়োজনে টিসি (স্থানান্তর সনদ) দিয়ে কলেজ থেকে বহিষ্কার করা হবে।
৪. এক কলেজ থেকে টিসি পেলে যেন অন্য কলেজে ভর্তি না করানো হয়—এই লক্ষ্যে একটি অভিন্ন নীতিমালা তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
৫. পুলিশ প্রশাসন ও কলেজ প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খোলা হয়েছে, যেখানে সংশ্লিষ্ট তথ্য আদান-প্রদান চলবে।
ডিসি মাসুদ আলম বলেন, “আমরা প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ভবিষ্যতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ এড়াতে তারা নিজেদের মধ্যে সমঝোতা চুক্তি করবেন। ইতোমধ্যে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ গঠিত হয়েছে, যেখানে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষ যুক্ত আছেন।”
তিনি আরো জানান, ভবিষ্যতে বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রব কলেজ ও বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ কলেজকেও এই উদ্যোগে যুক্ত করা হবে।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অধ্যাপক পারভীন সুলতানা হায়দার, সিটি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এফ এম মোবারক হোসাইন এবং আইডিয়াল কলেজের অধ্যক্ষসহ অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দ।
ঢাকা/রায়হান/এনএইচ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ঘর ষ স ঘর ষ কল জ র
এছাড়াও পড়ুন:
দোয়ার ফজিলত ও আদব
দোয়া শব্দের আভিধানিক অর্থ আহ্বান করা বা প্রার্থনা করা। পরিভাষায় দোয়া হলো কল্যাণ ও উপকার লাভের উদ্দেশ্যে এবং ক্ষতি ও অপকার রোধে মহান আল্লাহকে ডাকা এবং তাঁর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা।
প্রিয় নবীজি (সা.) বলেন, ‘দোয়াই ইবাদত।’ (বুখারি ও মুসলিম) ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে কিছু চায় না, আল্লাহ তাআলা তার প্রতি অসন্তুষ্ট হন।’ (তিরমিজি: ৩৩৭৩)
আল–কোরআনের বর্ণনা, ‘আর তোমাদের রব বলেন, “তোমরা আমাকে ডাকো, আমি তোমাদের জন্য সাড়া দেব। নিশ্চয় যারা অহংকারবশত আমার ইবাদত থেকে বিমুখ থাকে, তারা অচিরেই লাঞ্ছিত অবস্থায় জাহান্নামে প্রবেশ করবে।”’ (সুরা-৪০ মুমিন, আয়াত: ৬০)
মুমিনের পরিচয়ে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তাদের পার্শ্বদেশ শয্যা থেকে আলাদা থাকে। তারা তাদের পালনকর্তাকে ডাকে ভয়ে ও আশায় এবং আমি তাদের যে রিজিক দিয়েছি, তা থেকে ব্যয় করে। কেউ জানে না তার কৃতকর্মের জন্য তাদের কী কী চোখজুড়ানো প্রতিদান লুকায়িত আছে।’ (সুরা-৩২ সাজদা, আয়াত: ১৬-১৭)
‘আর আমার বান্দাগণ যখন আমার সম্পর্কে আপনাকে জিজ্ঞাসা করে, (তখন বলে দিন যে) নিশ্চয় আমি অতি নিকটে। আহ্বানকারী যখন আমাকে আহ্বান করে, আমি তার আহ্বানে সাড়া দেই। কাজেই তারাও আমার ডাকে সাড়া দিক এবং আমার প্রতি ইমান আনুক, যাতে তারা সঠিক পথে চলতে পারে।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১৮৬)
দোয়া কবুলের অন্যতম শর্ত হলো হালাল উপার্জন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে রাসুলগণ! তোমরা পবিত্র বস্তু থেকে আহার করো এবং সৎকাজ করো; তোমরা যা করো, সে সম্বন্ধে আমি সবিশেষ অবহিত।’ (সুরা-২৩ মুমিনুন, আয়াত: ৫১)দোয়া ও আমল কবুল হওয়ার মূল শর্ত হলো ইখলাস। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তিনি চিরঞ্জীব, তিনি ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই। অতএব, তাঁকে ডাকো খাঁটি ইবাদতের মাধ্যমে।’ (সুরা-৪০ মুমিন, আয়াত: ৬৬)
দোয়া কবুলের অন্যতম শর্ত হলো হালাল উপার্জন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে রাসুলগণ! তোমরা পবিত্র বস্তু থেকে আহার করো এবং সৎ কাজ করো; তোমরা যা করো, সে সম্বন্ধে আমি সবিশেষ অবহিত।’ (সুরা-২৩ মুমিনুন, আয়াত: ৫১) ‘হে ইমানদারগণ! তোমরা পাক পবিত্র বস্তুসামগ্রী আহার করো, যেগুলো আমি তোমাদের রিজিক হিসেবে দান করেছি।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১৭৩)
নবীজি (সা.) বলেন, ‘উষ্কখুষ্ক ধুলায় ধূসরিত অবস্থায় দীর্ঘ সফরকারী একজন যে স্বীয় দুই হাত আকাশের দিকে প্রসারিত করে বলে, “হে প্রভু! হে প্রভু!” অথচ তার খাদ্য হারাম, পানীয় হারাম, পোশাক হারাম এবং সে হারাম দ্বারা লালিত, তার দোয়া কীভাবে কবুল হবে?’ (মুসলিম: ১৬৮৬)
নির্জনে নীরবে বিনয়ের সঙ্গে দোয়া করা উত্তম। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা স্বীয় প্রতিপালককে ডাকো কাকুতি মিনতি করে এবং সংগোপনে। তিনি সীমা অতিক্রমকারীদের পছন্দ করেন না।’ (সুরা-৭ আরাফ, আয়াত: ৫৫)। ‘পৃথিবীকে কুসংস্কারমুক্ত ও ঠিক করার পর তাতে ফ্যাসাদ সৃষ্টি করো না। তাকে আহ্বান করো ভয় ও আশাসহকারে। নিশ্চয় আল্লাহর করুণা সৎকর্মশীলদের নিকটবর্তী।’ (সুরা-৭ আরাফ, আয়াত: ৫৫-৫৬)
দোয়ার আদব হলো দৃঢ়সংকল্প ও আকুতির সঙ্গে দোয়া করা, দোয়া কবুলে প্রবল আশাবাদী হওয়া।
হজরত জাকারিয়া (আ.) তাঁর দোয়ায় বলেন, ‘হে আমার প্রতিপালক! আপনার কাছে দোয়া করে আমি কখনো ব্যর্থ হইনি।’ (সুরা-১৯ মারিয়াম, আয়াত: ৪) হজরত ইব্রাহিম (আ.) বলেন, ‘আশা করি, আমার প্রতিপালকের নিকট দোয়া করে আমি বিফল হব না।’ (সুরা-১৯ মারিয়াম, আয়াত: ৪৮)
মুফতি মাওলানা শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী
যুগ্ম মহাসচিব, বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতি; সহকারী অধ্যাপক, আহ্ছানিয়া ইনস্টিটিউট অব সুফিজম
[email protected]