রাজধানীর সায়েন্স ল্যাব মোড় এলাকায় শিক্ষার্থীদের মাঝে সম্ভাব্য সংঘর্ষ এড়াতে ঢাকা কলেজ, সিটি কলেজ ও আইডিয়াল কলেজের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এক জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) বিকেল পৌনে পাঁচটায় ধানমন্ডি মডেল থানায় অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিবেশ ও শৃঙ্খলা রক্ষায় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। বৈঠকে ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলমসহ তিন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও শিক্ষক প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে যেসব সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে—

আরো পড়ুন:

ভৈরবে দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ৩০

সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে টেঁটাবিদ্ধ হয়ে নিহত ১

১.

উচ্ছৃঙ্খল শিক্ষার্থীদের তালিকা তৈরি করে থানায় জমা দেওয়া হবে।
২. তালিকাভুক্ত শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের ডেকে সতর্ক করা হবে। সংশোধন না হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
৩. শৃঙ্খলা ভঙ্গকারীদের প্রয়োজনে টিসি (স্থানান্তর সনদ) দিয়ে কলেজ থেকে বহিষ্কার করা হবে।
৪. এক কলেজ থেকে টিসি পেলে যেন অন্য কলেজে ভর্তি না করানো হয়—এই লক্ষ্যে একটি অভিন্ন নীতিমালা তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
৫. পুলিশ প্রশাসন ও কলেজ প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খোলা হয়েছে, যেখানে সংশ্লিষ্ট তথ্য আদান-প্রদান চলবে।

ডিসি মাসুদ আলম বলেন, “আমরা প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ভবিষ্যতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ এড়াতে তারা নিজেদের মধ্যে সমঝোতা চুক্তি করবেন। ইতোমধ্যে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ গঠিত হয়েছে, যেখানে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষ যুক্ত আছেন।”

তিনি আরো জানান, ভবিষ্যতে বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রব কলেজ ও বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ কলেজকেও এই উদ্যোগে যুক্ত করা হবে।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অধ্যাপক পারভীন সুলতানা হায়দার, সিটি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এফ এম মোবারক হোসাইন এবং আইডিয়াল কলেজের অধ্যক্ষসহ অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দ।

ঢাকা/রায়হান/এনএইচ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ঘর ষ স ঘর ষ কল জ র

এছাড়াও পড়ুন:

প্রযুক্তি কি ডিমেনশিয়া বাড়িয়ে দিচ্ছে? ৫৭টি ভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে বিস্ময়কর তথ্য

প্রযুক্তির কল্যাণে হুটহাট বড় পরিবর্তন আসা নতুন কিছু নয়। করোনা মহামারির আগে বাসা থেকেও যে অফিস করা সম্ভব, সেটা মানতে চাইতেন না অনেকে। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হোম অফিস হয়েছে স্বাভাবিক। একই ঘটনা ঘটেছে ডিজিটাল দুনিয়ায়। একসময় যেকোনো তথ্য খুঁজে বের করার জন্য শরণাপন্ন হতে হতো সার্চ ইঞ্জিনের; এআই সেই উত্তর সবিস্তারে দিয়ে দিচ্ছে মুহূর্তেই। ফলে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন শুধু জীবনকে সহজতর করছে না, বাঁচিয়ে দিচ্ছে সময় ও পরিশ্রমও। কিন্তু এই বেঁচে যাওয়া সময় ও পরিশ্রম মস্তিষ্কের ওপর ঠিক কীভাবে প্রভাব ফেলছে?

যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস ও বেলোর ইউনিভার্সিটির এক যৌথ গবেষণায় দেখা গেছে, এত দিন প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে মানব মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা কমার যে গুঞ্জন ভেসে বেড়িয়েছে, তার কোনো সত্যতা নেই। ‘নেচার হিউম্যান বিহেভিয়ার’ জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণায় দেখা গেছে, ‘ডিজিটাল ডিমেনশিয়া’ নামে যে হাইপোথিসিস আছে, তার কোনো প্রমাণ নেই গবেষকদের কাছে। বরং পঞ্চাশোর্ধ্ব মানুষদের স্মার্টফোন, কম্পিউটার কিংবা ইন্টারনেট ব্যবহার তাঁদের স্বাভাবিক স্মৃতিভ্রম অনেকটা স্তিমিত করে।

ডিজিটাল ডিমেনশিয়া কী

২০১২ সালে প্রথম ‘ডিজিটাল ডিমেনশিয়া’ তত্ত্ব নিয়ে হাজির হন জার্মান স্নায়ুবিজ্ঞানী ও মনোবিদ ম্যানফ্রেড স্পিৎজার। মূলত যে হারে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে এবং মানুষ যান্ত্রিক পর্দার সামনে প্রতিদিনের বেশির ভাগ সময় কাটাচ্ছে, তাতে প্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীলতা বাড়ছে অনেকটাই। এতে নিত্যপ্রয়োজনীয় তথ্যগুলোও মনে রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে অনেকে। যেমন ফোন নম্বর। একসময় প্রিয়জনের ফোন নম্বর আমাদের মুখস্থ থাকত। এখন ফোন নম্বর ঠাঁই পায় মুঠোফোনের কনটাক্ট লিস্টে। ফোন নম্বর মনে রাখার চেষ্টাই করে না কেউ। আবার অনেকক্ষণ যান্ত্রিক পর্দার সামনে থাকলেও সেখান থেকে শেখার ইচ্ছা থাকে না অনেকের। চোখের সামনে যা আসছে, স্ক্রল করে চলে যাচ্ছে পরের কোনো কনটেন্টে। এতে মনোযোগ হারিয়ে যায় দ্রুত। আর প্রযুক্তির এমন অতিব্যবহার যে স্মৃতিশক্তি কমিয়ে দিচ্ছে, একেই ধরা হয় ‘ডিজিটাল ডিমেনশিয়া’ হিসেবে।

আরও পড়ুনডিজিটাল স্ক্রিন ব্যবহারের সময় ২০-২০-২০ নিয়ম মানাটা কেন জরুরি২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩গবেষণা যা বলছে

প্রায় ৪ লাখ ১১ হাজার পঞ্চাশোর্ধ্ব মানুষের ওপর চালানো ৫৭টি ভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে যে স্মৃতিভ্রম দেখা দেয়, তার অনেকটাই হ্রাস করে প্রযুক্তির ব্যবহার। প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহারের ফলে স্মৃতিশক্তি কমে আসার আশঙ্কা প্রায় ৫৮ শতাংশে নেমে আসে।

স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া বরং আরও কিছু সূচকের (যেমন সামাজিক, অর্থনৈতিক ও পারিবারিক অবস্থা) ওপর নির্ভর করে। মজার ব্যাপার হলো, নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার থেকেও বেশি কার্যকর প্রযুক্তির ব্যবহার।

তবে এর সবকিছুই নির্ভর করছে প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহারের ওপর। পঞ্চাশোর্ধ্ব ব্যক্তিরা বেশির ভাগ সময়ই অনলাইনে কাটান ইউটিউব ভিডিও অথবা ফেসবুক স্ক্রল করে। এতে তাঁদের মস্তিষ্কের ব্যবহার হয় না বললেই চলে। মস্তিষ্ক সচল রাখতে পারে এমন কনটেন্টে তাঁদের মনোযোগ সরিয়ে নিতে পারলে আনন্দ যেমন পাবেন, তেমনই ডিজিটাল দুনিয়া সম্পর্কে তাঁদের দৃষ্টিভঙ্গিও পালটে যাবে। এ ছাড়া অনলাইনের হাজারো গুজব ও উসকানি থেকে মুক্ত থাকবেন তাঁরা।

সূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট

আরও পড়ুনমাত্রাতিরিক্ত স্ক্রিনটাইম যেভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন০১ সেপ্টেম্বর ২০২৩

সম্পর্কিত নিবন্ধ