আড়াইহাজার থানার সেই ওসি এনায়েত অবশেষে বদলি
Published: 24th, April 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এনায়েত হোসেনকে অবশেষে ফরিদপুর জেলায় বদলি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি একেএম আওলাদ হোসেন স্বাক্ষরিত এক আদেশে তাকে ফরিদপুর জেলায় বদলি করা হয়। জনস্বার্থে এই আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে উল্লেখ করা হয় ওই আদেশে।
বদলি আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জ জেলার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (সি সার্কেল) মেহেদী ইসলাম।
এর আগে গত ১৮ এপ্রিল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওসির টাকা নেওয়ার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে।
ভিডিওতে দেখা যায়, জিডি বা অভিযোগের কাগজের সঙ্গে স্টেপলার করে রাখা কিছু টাকা হাতে নিয়ে ওসি এনায়েত হোসেন এক ব্যক্তির উদ্দেশে বলছেন, ‘এই টাকা দিলে মানসম্মান থাকে?’ এ সময় তার সামনে আরও দু-তিনজন ব্যক্তিকে বসে থাকতে দেখা যায়। আর ওসি এনায়েত হোসেন তার থানার কক্ষে চেয়ারে বসা অবস্থায় ছিলেন।
জানা যায়, ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওতে আড়াইহাজার উপজেলার খাগকান্দা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি বেলায়েত হোসেনের সঙ্গে ওসির কথোপকথনের ওই ভিডিও কেউ একজন ধারণ করেন। কোনো একটি বিষয়ে জিডি বা অভিযোগ করতে গেলে তাদের এ কথা হয়।
এই ঘটনা তদন্তে পৃথক দুটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। ১৯ এপ্রিল দিনব্যাপী দুই কমিটির সদস্যরা তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা শেষে প্রতিবেদন জমা দেন। এ রিপোর্ট জমা দেওয়ার পরই তাকে তাকে বদলি আদশ দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, গত সেপ্টেম্বরে আড়াইহাজারে তার যোগদানের পর থেকে উপজেলা ব্যাপী চুরি ডাকাতি ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায় । তাছাড়া তার বিরুদ্ধে নিরীহ মানুষদের হয়রানি ও মিথ্যা মামলায় জড়ানোর অভিযোগ রয়েছে।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, এনায়েত হোসেন থানায় যোগদানের পর থেকেই নানা বিতর্কিত কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়েন। সম্প্রতি তার ঘুষ গ্রহণের একটি (ভিডিও) ফুটেজ ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এনিয়ে তিনি বেশ বিতর্কের মুখে পড়েন।
এছাড়াও সম্প্রতি স্থানীয় দুপ্তারা বাজারে মহিলা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক পারভীন আক্তারের রাজনৈতিক তোরুণ নির্মাণকে কেন্দ্র করে ওসি এনায়েত হোসেন আইনী সহযোগিতা না করে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন।
ফাঁকা গুলিসহ খোকন নামে এক কর্মীকে মেরে ফেলার হুমকী দেয় স্থানীয় একদল সন্ত্রাসী। এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে ওসি কোন প্রকার আইনী পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। পরে সন্ত্রাসীরা আরও বেপরোয়া হয়ে পড়েন।
এক পর্যায়ে খোকনের ভাড়াবাড়িতে ভাংচুর ও ফাঁকা গুলি করে সন্ত্রাসীরা। পরে খোকন তার এসএসসি পরীক্ষার্থী ছেলেসহ পুরো পরিবার নিয়ে প্রাণ ভয়ে অন্যত্র আশ্রয় নেয়।
এ ঘটনায় পুলিশ প্রধান ও স্বরাষ্ট্র সচিব বরাবর ১৫ এপ্রিল বেবী আক্তার নামে এক নারী লিখিত অভিযোগ দেন।
এ ঘটনায় ২০ এপ্রিল জাতীয় দৈনিক মানবজমিন পত্রিকায় “সন্ত্রাসীদের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে এসএসসি পরীক্ষাথীসহ পুরো পরিবার” শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হয়।
অপর আরেক ঘটনায় জেলা যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও পারভীনের (পিএস) সালাউদ্দিন মোল্লা নামে এক ব্যক্তি পুলিশ প্রধান ও স্বরাষ্ট্র সচিব বরাবর আরেকটি লিখিত অভিযোগ দেন।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ঘটন য়
এছাড়াও পড়ুন:
আড়াইহাজারে শীর্ষ মাদক কারবারি সন্ত্রাসী সোহেল সহযোগীসহ গ্রেপ্তার
আড়াইহাজার উপজেলার শীর্ষ মাদক কারবারি ও সন্ত্রাসী সোহেল মেম্বার ওরফে ফেন্সি সোহেল ও তার সহযোগী ফজলুল হক ওরফে ফজুকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১১।
শুক্রবার (১৩ জুন) ভোরে কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি থানার দাউদকান্দি ব্রিজের টোল-প্লাজা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত সোহেল মেম্বার ওরফে ফেন্সি সোহেল (৩৮) আড়াইহাজারের বালিয়াপাড়া এলাকার মোঃ মকবুল হোসেনের পুত্র। অপরদিকে ফজলুল হক ওরফে ফজু (৩০) একই এলাকার আউয়ালের পুত্র।
গ্রেপ্তারকৃত আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা সূকৌশলে দীর্ঘদিন যাবৎ মাদক ক্রয়-বিক্রয়সহ সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িত ছিল মর্মে স্বীকার করে। গ্রেপ্তারকৃত আসামী সোহেল মেম্বার ফেন্সি সোহেল এর বিরুদ্ধে নারয়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন থানায় সন্ত্রাসী ও মাদক, অপহরণ, চুরি, হত্যা চেষ্টাসহ ১৪-১৫টি মামলা রয়েছে।
এছাড়া গ্রেপ্তারকৃত আসামি ফজলুল হক ফজু এর বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন থানায় সন্ত্রাসী, অপহরণ, ছিনতাইসহ ৪-৫টি মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত আসামিদ্বয়কে পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রমের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
শুক্রবার বিকেলে র্যাব-১১ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানার ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের বালিয়াপাড়ার মকবুল হোসেনের ছেলে সোহেল মেম্বার ফেন্সি সোহেল বিগত ইউপি নির্বাচনে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ইউপি সদস্য নির্বাচিত হয়। নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে সে আরও বেপোরোয়া হয়ে উঠে।
পরবর্তীতে সে অবৈধ মাদক সেবন ও ক্রয়-বিক্রয়ের সাথে জড়িয়ে পরে। পরবর্তিতে এক সময় সে এলাকায় শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিতি পায়। তখন থেকে সবাই ফেন্সি সোহেল হিসাবে ডাকে। দীর্ঘদিন ধরে মাদক বিক্রির সঙ্গে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করে আসছে। তার পুরো পরিবার মাদকের সঙ্গে জড়িত। প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
ফজলুল হক ফজু এই শীর্ষ সন্ত্রাসী-মাদক ব্যবসায়ী সোহেল মেম্বার ফেন্সি সোহেল এর একান্ত সহযোগী। তাদের ভয়ে এলাকাবাসী ভীত-সন্ত্রস্ত। যারাই তাদের এই সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও মাদক ব্যবসার বিরোধিতা করে তাদেরকেই সোহেল ও তার সহযোগীরা নির্মমভাবে নির্যাতন করে।