ট্রাম্পের সঙ্গে ইউক্রেন নিয়ে আলোচনা দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্টের
Published: 24th, April 2025 GMT
দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা বৃহস্পতিবার বলেছেন, তিনি ইউক্রেন সংঘর্ষ নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাঁরা শিগগির বৈঠক করার পরিকল্পনা করছেন।
দক্ষিণ আফ্রিকায় সফররত ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকের পর সিরিল রামাফোসা এ কথা বলেন।
তবে বুধবার দিবাগত রাতে কিয়েভে রাশিয়ার ভয়াবহ হামলার পর দক্ষিণ আফ্রিকার সফর সংক্ষিপ্ত করার কথা জানান জেলেনস্কি। সামাজিক মাধ্যমে তিনি লেখেন, রাত্রিকালীন হামলায় ইউক্রেনের রাজধানীতে অন্তত নয়জন নিহত হয়েছেন। আমি ‘অবিলম্বে ইউক্রেনে ফিরে যাব’।
দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ইউক্রেন শান্তিপ্রক্রিয়া নিয়ে কথা বলেছি। অপ্রয়োজনীয় প্রাণহানি কমাতে আমরা এই যুদ্ধ দ্রুত শেষ করার বিষয়ে সম্মত হয়েছি। আমরা শিগগিরই বৈঠক করার বিষয়ে একমত হয়েছি। বৈঠকে আমরা দক্ষিণ আফ্রিকা-যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের নানা দিক নিয়ে আলোচনা করব।’
গত জানুয়ারিতে ট্রাম্প ক্ষমতা নেওয়ার পর থেকে প্রিটোরিয়া ও ওয়াশিংটনের মধ্যে সম্পর্ক খারাপ হতে থাকে। গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ নিয়ে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) মামলা করেছে প্রিটোরিয়া। এই পদক্ষেপসহ দেশটির বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক নীতির সমালোচনা করেছেন ট্রাম্প। উত্তেজনার একপর্যায়ে গত মাসে দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করে যুক্তরাষ্ট্র।
দক্ষিণ আফ্রিকায় ‘শ্বেতাঙ্গবিরোধী ভূমিনীতি’ চলছে, এমন অভিযোগ এনে দেশটির আর্থিক সহায়তাও বন্ধ করেছেন ট্রাম্প। পাশাপাশি দেশটিতে ‘নির্যাতিত’ শ্বেতাঙ্গ আফ্রিকানদেরও শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি।
তবে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রামাফোসা লিখেছেন, ‘আমি ও ট্রাম্প আমাদের দুই দেশের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে একমত হয়েছি।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইউক র ন
এছাড়াও পড়ুন:
ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশকে ‘অশ্বডিম্ব’ বললেন সিপিবি সভাপতি
আট মাস আলোচনার পর জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন যে সুপারিশ দিয়েছে, তাকে ‘অশ্বডিম্ব’ বলেছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি সাজ্জাদ জহির চন্দন।
‘জগাখিচুড়ি মার্কা’ কমিশনের সুপারিশের পর পরিস্থিতি জটিলতার দিকে মোড় নেওয়ার দিকটি নিয়ে তিনি বলেছেন, ‘আট মাস আলোচনার পর একটা অশ্বডিম্বের মতো একটা অবস্থা।’
আজ শনিবার সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে এক সংলাপে ‘পলিটিকস ল্যাব: পাবলিক ডায়ালগ’ শীর্ষক সংলাপে এ কথা বলেন সাজ্জাদ জহির। এ সংলাপের আয়োজন করে সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস)।
তরুণ রাজনীতিকদের মধ্যে মতাদর্শভিত্তিক সংলাপ ও গণতান্ত্রিক চর্চা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে জার্মান ফাউন্ডেশন ফ্রেডরিখ এবার্ট স্টিফটুং (এফইএস)-এর সহযোগিতায় ‘পলিটিকস ল্যাব’ শিরোনামে চারটি ধারাবাহিক কর্মশালা করেছে সিজিএস। তার সমাপনী অনুষ্ঠান হিসেবে আজকের সংলাপ হয়।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গত মঙ্গলবার জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে হস্তান্তরের পর রাজনৈতিক অঙ্গনে তা নিয়ে মতভেদ দেখা দেয়। নানা প্রশ্নে বিভিন্ন দলের আপত্তির বিষয়গুলো সনদ বাস্তবায়ন আদেশের খসড়ার তফসিলে না থাকা নিয়ে যেমন সমালোচনা হচ্ছে, আবার গণভোটের সময় নিয়েও দলগুলোর মধ্যে বিরোধ দেখা দিয়েছে।
এই সংকট তৈরির জন্য ঐকমত্য কমিশনকে দায়ী করে সাজ্জাদ জহির বলেন, ‘এটার সমাধানটা কী? এই গণভোটের সমাধানটা কী? জুলাই সনদ কীভাবে বাস্তবায়ন হবে? সে বিষয়ে কোনো দিকনির্দেশনা কিন্তু নেই। মানে একধরনের হাওয়ার ওপরে সবকিছু চলছে। এখানে ৮৪টা পয়েন্ট নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ২০টাতে একমত হয়েছে, বাকিগুলোতে একমত হয়নি। তাহলে কোন বিষয়ে ভোটটা হবে।’
জুলাই সনদে স্বাক্ষর না করা সিপিবি সভাপতি বলেন, ‘আমরা দেখলাম জুলাই সনদে স্বাক্ষর হলো। এরপর সর্বশেষ সংস্কার কমিশন তারা আবার আরেকটা খেলা খেলল এখানে। দেখেন কী অবস্থা! তারা বলছে যে নোট অব ডিসেন্ট কিছুই থাকবে না। ভিন্ন মত থাকবে না। আমার তো ভিন্নমত আছে, কেন থাকবে না?’
গণভোট নিয়ে তিনি বলেন, ‘সংবিধানে কোথাও গণভোটের কোনো বিধান নেই। একটা আছে যেটা ১৪২ ধারা। যেটা নির্বাচিত সংসদে যদি কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে মতভেদ তীব্রতর হয়, তাহলে সেই বিষয়ের ওপরে নির্বাচিত সংসদ জনগণের আহ্বান করতে পারে। কিন্তু এই মুহূর্তে গণভোট সংবিধানসম্মত নয়।’
সিপিবির সভাপতি বলেন, এসব জটিলতা এড়াতে প্রয়োজনীয় কিছু সংস্কার করে দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা নিতে গত বছরের অক্টোবর মাসে তাঁরা প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছিলেন। তবে ‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে’ সরকার সেটি শোনেনি।