৯ মাসে রপ্তানি শুল্ক আদায়ে প্রবৃদ্ধি ২০০০০%
Published: 26th, April 2025 GMT
চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে রপ্তানি শুল্ক আদায়ে ২০ হাজার শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। যেকোনো ধরনের শুল্ক আদায়ে এত প্রবৃদ্ধি আগে কখনো হয়নি বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তারা।
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, গত জুলাই-মার্চ সময়ে শুল্ক বিভাগ রপ্তানি শুল্ক আদায় হয়েছে ৬ কোটি ৩ লাখ টাকা। গত অর্থবছরের একই সময়ে রপ্তানি শুল্ক আদায়ের পরিমাণ ছিল মাত্র ৩ লাখ টাকা। সেই হিসাবে রপ্তানি শুল্কে প্রবৃদ্ধি ২০ হাজার শতাংশ। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে রপ্তানি শুল্ক আদায়ের লক্ষ্য ছিল প্রায় ৪৭ কোটি টাকা। অবশ্য সেই লক্ষ্যের ধারেকাছেও নেই রপ্তানি শুল্ক খাতটি।
বিদেশ থেকে পণ্য আমদানি করার সময়ে নানা ধরনের শুল্ক-কর দিতে হয়। কিন্তু বাংলাদেশ থেকে কিছু পণ্য রপ্তানি করতে গেলেও রপ্তানি শুল্ক দিতে হয়। এই শুল্কের হার ১৫ থেকে ২০ শতাংশ।
রপ্তানি শুল্ক আছে, এমন পণ্যের তালিকায় আছে ধান-চালের তুষ (ব্র্যান), তুলা বর্জ্য, ইট ও ইটের সামগ্রী (বিল্ডিং ব্রিকস), বিভিন্ন ধরনের সিসা ইত্যাদি। সাধারণত এসব পণ্য ভারত, মিয়ানমার, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ায় রপ্তানি হয়। এনবিআর ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে এই শুল্ক আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭০ কোটি টাকা।
চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে এসব পণ্য রপ্তানির বিপরীতে শুল্ক আদায়ের লক্ষ্য ধরা হয়েছিল ৬৬ কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে তা কিছুটা কমিয়ে ৬৩ কোটি টাকা করা হয়। এনবিআরের তথ্য-উপাত্ত বলছে, এই বছর সব মিলিয়ে ৩ লাখ টাকা আদায় হয়েছিল।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের তথ্য বলছে, ২০১৪-১৫ অর্থবছর থেকে ২০২২-২৩ পর্যন্ত আট অর্থবছরে রপ্তানি শুল্ক বাবদ সরকার মোট আয় করেছে ২৫৪ কোটি টাকা।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে নির্বিচার পাখির মতো গুলি করা হয়: মামুনুল হক
ইসলামি জনতাকে বারবার বুলেটের আঘাতে হত্যা করা হয়েছে দাবি করে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মামুনুল হক বলেছেন, ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে নির্বিচার পাখির মতো গুলি করা হয়। ২০২১ সালে মোদিবিরোধী আন্দোলনের কারণে আলেমদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। ২০২৪ সালে জুলাই বিপ্লবে এ দেশে আপামর তৌহিদি জনতা, ছাত্রজনতা, কৃষক–শ্রমিক–মজুরদের হত্যা করে বাংলাদেশকে রক্তে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
আজ বুধবার দুপুরে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলা শাখার আয়োজনে সরকারি মডেল পাইলট উচ্চবিদ্যালয় মাঠে নির্বাচনী গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মামুনুল হক এ কথা বলেন।
আগামীর বাংলাদেশ ইসলামের বাংলাদেশ হবে বলে দাবি করেন মামুনুল হক। তিনি জানান, বিগত সময়ে যারা ক্ষমতার মসনদে ছিল, তারা দেশের প্রতিনিধি নয়; বরং ভিনদেশি কৃতদাসী হিসেবে ক্ষমতা দখল করে রেখেছিল। এ দেশের মানুষের অধিকার আদায় নয়, ভিনদেশিদের স্বার্থ আদায় করাই ছিল তাদের মূল লক্ষ্য। দেশটাকে উজাড় করে সোনার বাংলাকে শ্মশান বানিয়ে মানুষের রক্ত ও জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলে দেশটাকে গুমের রাজত্বে পরিণত করা হয়েছিল। বাংলাদেশটাকে মৃত্যুকূপে পরিণত করা হয়েছিল।
বিগত সরকারের আমলে ইসলামি নেতাদের বছরের পর বছর বিনা বিচারে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছিল অভিযোগ করে মামুনুল হক বলেন, জেল–জুলুম–হুলিয়া চালানো হয়েছিল, ফাঁসির কাষ্ঠে ঝোলানো হয়েছিল। কারাগারে বিনা চিকিৎসায় আলেমদের ষড়যন্ত্রমূলকভাবে মৃত্যুর কোলে ঠেলে দেওয়া হয়েছিল। ২০০৮ থেকে ২০২৪ সাল—১৫টি বছর ছিল আলেম–ওলামা তথা ইসলামপন্থীদের রক্ত দেওয়ার, ত্যাগ ও কোরবানির সময়। সব জুলুম–নির্যাতনের পর চব্বিশের বিপ্লব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। চব্বিশের এ বিপ্লবে যারা বুক চিতিয়ে জীবন দিয়েছিল, তাদের সিংহভাগ ছিল আলেমসমাজ। জীবন ও রক্তের বিনিময়ে বিদেশি আধিপত্যমুক্ত করা হয়েছে। বাংলাদেশকে ফ্যাসিবাদমুক্ত করা হয়েছে। নতুন করে আবার বিদেশি পরাজিত শক্তি অন্য কারও মাথার ওপর ভর করে বাংলার মানুষকে যদি জিঞ্জিরাবদ্ধ করতে চায়, তা বরদাশত করা হবে না।
ঐক্যবদ্ধ জনগণ যাদের প্রতিহত করেছে, তারা ভিন্ন রাজনৈতিক দলের আশ্রয়ে বাংলাদেশের মানুষকে জিম্মি করার চেষ্টা চালাচ্ছে বলে উল্লেখ করেন মামুনুল হক। তিনি বলেন, ‘আমরা শপথ করছি, জীবন দিয়ে যেই ফ্যসিবাদ বিতাড়িত করেছি, সেই ফ্যাসিবাদ ভিন্নরূপে বাংলার ক্ষমতার মসনদে আসার পাঁয়তারা করলে আমরা রাজপথে লড়াই করে মোকাবিলা করব। নিজের বক্তব্যে চাঁদাবাজি, লুটপাট, দুর্নীতি বন্ধ ও জুলাই সনদের আইনিভিত্তি বাস্তবায়নে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতীকের পাশাপাশি গণভোটে হ্যাঁ ব্যালটে সিল দিতে সবার প্রতি আহ্বান জানাই।’
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস উপজেলা শাখার সভাপতি হাফেজ আবদুল লতিফের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব আতাউল্লাহ আমীন, নায়েবে আমির শাহ মুহাম্মদ সাঈদ নূর, মাওলানা হেদায়েতুল্লাহ হাদী, ফুলবাড়িয়া আসনে খেলাফত মজলিস মনোনীত প্রার্থী মুফতি আবদুল কাদের, জামায়াত মনেনানীত প্রার্থী অধ্যক্ষ কামরুল হাসানসহ খেলাফত মজলিসের অন্য নেতারা।
একই দিন বিকেলে ভালুকা সরকারি কলেজ মাঠে আয়োজিত সমাবেশেও প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন মামুনুল হক।