চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে রপ্তানি শুল্ক আদায়ে ২০ হাজার শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। যেকোনো ধরনের শুল্ক আদায়ে এত প্রবৃদ্ধি আগে কখনো হয়নি বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তারা।

এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, গত জুলাই-মার্চ সময়ে শুল্ক বিভাগ রপ্তানি শুল্ক আদায় হয়েছে ৬ কোটি ৩ লাখ টাকা। গত অর্থবছরের একই সময়ে রপ্তানি শুল্ক আদায়ের পরিমাণ ছিল মাত্র ৩ লাখ টাকা। সেই হিসাবে রপ্তানি শুল্কে প্রবৃদ্ধি ২০ হাজার শতাংশ। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে রপ্তানি শুল্ক আদায়ের লক্ষ্য ছিল প্রায় ৪৭ কোটি টাকা। অবশ্য সেই লক্ষ্যের ধারেকাছেও নেই রপ্তানি শুল্ক খাতটি।

বিদেশ থেকে পণ্য আমদানি করার সময়ে নানা ধরনের শুল্ক-কর দিতে হয়। কিন্তু বাংলাদেশ থেকে কিছু পণ্য রপ্তানি করতে গেলেও রপ্তানি শুল্ক দিতে হয়। এই শুল্কের হার ১৫ থেকে ২০ শতাংশ।

রপ্তানি শুল্ক আছে, এমন পণ্যের তালিকায় আছে ধান-চালের তুষ (ব্র্যান), তুলা বর্জ্য, ইট ও ইটের সামগ্রী (বিল্ডিং ব্রিকস), বিভিন্ন ধরনের সিসা ইত্যাদি। সাধারণত এসব পণ্য ভারত, মিয়ানমার, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ায় রপ্তানি হয়। এনবিআর ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে এই শুল্ক আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭০ কোটি টাকা।

চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে এসব পণ্য রপ্তানির বিপরীতে শুল্ক আদায়ের লক্ষ্য ধরা হয়েছিল ৬৬ কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে তা কিছুটা কমিয়ে ৬৩ কোটি টাকা করা হয়। এনবিআরের তথ্য-উপাত্ত বলছে, এই বছর সব মিলিয়ে ৩ লাখ টাকা আদায় হয়েছিল।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের তথ্য বলছে, ২০১৪-১৫ অর্থবছর থেকে ২০২২-২৩ পর্যন্ত আট অর্থবছরে রপ্তানি শুল্ক বাবদ সরকার মোট আয় করেছে ২৫৪ কোটি টাকা।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রব দ ধ লক ষ য

এছাড়াও পড়ুন:

তাপমাত্রা বেড়ে দেশের ক্ষতি ২১ হাজার কোটি টাকা, কীভাবে হচ্ছে, কেন হচ্ছে

রাজধানীর কারওয়ানবাজারের দিনমজুর পারভিন আক্তার (৪৭)। তিনি এই বাজারে আলুর একটি আড়তে কাজ করেন। বসে বসে আলু বাছাই করা তাঁর কাজ। প্রতিদিন পান ৬০০ টাকা। সংসারে অসুস্থ স্বামী। তবে তিনি মাঝেমধ্যে রিকশা চালান। স্বামীর আয় নিয়মিত নয়। তাঁদের মেয়ে ও এক ছেলে সঙ্গে থাকে। মেয়েটির আবার দুটি সন্তান আছে। পুরো পরিবারটি পারভিনের আয়ের ওপর নির্ভরশীল।

গত এপ্রিল থেকে চলতি সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত নিজে অন্তত দুই বার এবং মেয়ে ও তাঁর ছেলেটি তিন বার করে অসুস্থ হয়ে পড়ে। পারভিন কাজে গেলে টাকা পান, না গেলে নেই। এভাবে অসুখের কারণে এ বছর ১১ দিন কাজে যেতে পারেননি, স্মরণ করে বলেন পারভিন। কারওয়ানবাজারে কাজের যে পরিবেশ, সেখানে গরমে ঘামতে হয়। কয়েক বছর ধরে গরমটা অসহনীয় বলে মনে হয় তাঁর কাছে।

পারভিন বলছিলেন, ‘ঘাম শরীরে বইসা অসুখ বাধায়। গরম এত বাড়ছে যে কওনের কথা নাই।’

পারভিনের মতো এমন অসংখ্য মানুষের এভাবেই গরমের কারণে কর্মদিবস নষ্ট হচ্ছে। এই তো গত বছরেই (২০২৪) ২১ হাজার কোটি টাকার মতো আর্থিক ক্ষতি হয়েছে বাংলাদেশের। বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে এ চিত্র উঠে এসেছে। প্রতিবেদনটির নাম ‘অ্যান আনসাস্টেইনেবল লাইফ: দ্য ইমপ্যাক্ট অব হিট অন হেলথ অ্যান্ড দ্য ইকোনমি অব বাংলাদেশ।’ এতে ১৯৭৬ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত দেশের তাপমাত্রা ও আর্দ্রতার তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে। সঙ্গে আছে ২০২৪ সালে করা একটি বড় জরিপ, যেখানে দুই ধাপে ১৬ হাজারের বেশি মানুষকে প্রশ্ন করা হয়।

১৯৮০ সালের পর থেকে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বেড়েছে ১ দশমিক ১°ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর এ সময় গরমের অনুভূতি বেড়েছে ৪ দশমিক ৫°ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে এ সময়ে ঢাকার গরম বেড়েছে ১ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাজধানী ঢাকার গরম জাতীয় গড়ের চেয়ে প্রায় ৬৫ শতাংশ বেশি। এর ফলে ডায়রিয়া, দীর্ঘ কাশি, শ্বাসকষ্ট আর প্রচণ্ড অবসাদ—এসব রোগ বেড়েছে।

অধ্যাপক আবদুস সালাম তাঁর একাধিক গবেষণায় দেখিয়েছেন, তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে দূষণের সম্পর্ক আছে। তিনি বলছিলেন, বিশেষ করে ঢাকার তাপমাত্রা বৃদ্ধির জন্য দায়ী কয়েকটি ক্ষতিকর গ্যাস। এর মধ্যে আছে ব্ল্যাক কার্বন, কার্বন ডাই–অক্সাইড ও মিথেন।

গরমের প্রভাবের দিক থেকে বাংলাদেশ বিশ্বের মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে আছে। ২০২৪ সালে গরমের কারণে বাংলাদেশে প্রায় ২৫ মিলিয়ন কর্মদিবস (আড়াই কোটি দিন) নষ্ট হয়েছে।

বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র অপারেশনস অফিসার এবং প্রতিবেদনের সহলেখক ইফফাত মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, অতিরিক্ত গরমে মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে এবং এর সঙ্গে সরাসরি উৎপাদনশীলতার ক্ষতিও ঘটছে। অনেক দেশের মতো বাংলাদেশও মানবসম্পদ ও উৎপাদনশীলতা হারানোর বাস্তব ঝুঁকির মুখে।’

আরও পড়ুনতাপমাত্রা এত বাড়ছে কেন?২১ এপ্রিল ২০২৪প্রখর রোদে ছাতা মাথায় মাঠের মধ্যে ধান শুকাচ্ছেন এক গৃহবধূ। কাইমউদ্দিন মাতুব্বরের ডাঙ্গী, নর্থ চ্যানেল, ফরিদপুর

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিনা মূল্যে কম্পিউটার প্রশিক্ষণের সুযোগ, সারা দেশে ৮টি কেন্দ্রে
  • শেয়ারহোল্ডারদের নগদ লভ্যাংশ দিলো ফেডারেল ইন্স্যুরেন্স
  • দক্ষিণ সিটির রাজস্ব আদায়ে ধস, আন্দোলনের ক্ষত এখনো কাটেনি
  • ২ কোম্পানির ক্রেডিট রেটিং নির্ণয়
  • ৪ কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনে অনিয়ম: ৭ অডিটর নিষিদ্ধ
  • সেপ্টেম্বরের ১৬ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ২০ হাজার কোটি টাকা
  • রাশিয়ার প্রয়াত বিরোধী নেতা নাভালনির শরীরে বিষ প্রয়োগ করা হয়েছিল: স্ত্রীর দাবি
  • রূপালী লাইফের আর্থিক হিসাবে ৬৯ কোটি টাকার গরমিল
  • তাপমাত্রা বেড়ে দেশের ক্ষতি ২১ হাজার কোটি টাকা, কীভাবে হচ্ছে, কেন হচ্ছে
  • বাংলাদেশ ব্যাংক এক দিনে ২৬ ব্যাংক থেকে ৩৫ কোটি ডলার কিনল কেন