‘সুবিধাজনক সময়ে ঢাকা সফর করবেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী’
Published: 28th, April 2025 GMT
পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারের বাংলাদেশ সফর পারস্পরিক সুবিধাজনক সময়ে অনুষ্ঠিত হবে।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্রসচিব এম জসীম উদ্দিনের সঙ্গে ঢাকায় নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে এ বিষয়টি আলোচনা হয়েছে।
বৈঠকের বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বৈঠককালে উভয় পক্ষই গঠনমূলক আলোচনা করেন। বৈঠকে তারা গত ১৭ এপ্রিল ঢাকায় বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের দ্বিপক্ষীয় ষষ্ঠ দফা সভা সফলভাবে সমাপ্তিতে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা জোরদার করার দিকে এটিকে তারা একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে তুলে ধরেন।
আরো পড়ুন:
বল ঘুরল, বাংলাদেশ হাসল
এপ্রিলের ২৬ দিনে রেমিট্যান্স এলো ২২৭ কোটি ডলার
পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে আলোচিত বিষয়গুলো সম্পর্কে উভয়পক্ষের অব্যাহত পর্যবেক্ষণ ও গুরুত্বের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। পাকিস্তানের হাইকমিশনার আঞ্চলিক বিষয়গুলো সম্পর্কে পররাষ্ট্র সচিবকে অবহিত করেছেন। তিনি নির্দিষ্ট পণ্য ও ঢাকায় অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ-পাকিস্তান ব্যবসায়িক ফোরামের ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে উচ্চ পর্যায়ের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলের চলমান সফর সম্পর্কেও পররাষ্ট্র সচিবকে অবহিত করেন।
উভয়পক্ষই আশা প্রকাশ করেছে, পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফর পারস্পরিক সুবিধাজনক সময়ে অনুষ্ঠিত হবে।
পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারের গত ২৭ এপ্রিল ঢাকা সফরের কথা ছিল। তবে কাশ্মীর ইস্যুকে কেন্দ্র করে ভারত-পাকিস্তানে উত্তেজনা তৈরি হওয়ায় সেই সফর স্থগিত হয়ে যায়।
এর আগে গত রবিবার পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এম তৌহিদ হোসেন জানিয়েছিলেন, আমরা দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি চাই। আমরা জানি যে ভারত-পাকিস্তানের সঙ্গে দীর্ঘদিন সংঘাতয় সম্পর্ক চলছে। আমরা চাই না এখানে কোনো সংঘাত সৃষ্টি হোক, এই অঞ্চলের মানুষের জন্য বিপদের কারণ হোক।
ভারত-পাকিস্তান দুদেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক বিদ্যমান। আমরা চাই আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে তারা এই সমস্যার সমাধান করুক। আমরা দেখেছি, দু-একটা দেশ থেকে ইতোমধ্যেই মধ্যস্থতারও প্রস্তাব এসেছে। এখন আলাপ-আলোচনা হোক, মধ্যস্থতা হোক, যেভাবেই হোক এই সংকটের সমাধান হোক।
ঢাকা/হাসান/সাইফ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পরর ষ ট রমন ত র ও পরর ষ ট র অন ষ ঠ ত
এছাড়াও পড়ুন:
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস আজ
‘উদয়ের পথে শুনি কার বাণী/ ভয় নাই ওরে ভয় নাই/ নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান/ ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই’। তাঁদের নিঃশেষে প্রাণদানের স্মৃতি আজ গভীর বেদনায় স্মরণ করবে জাতি। আজ থেকে ৫৪ বছর আগে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীরা হানাদার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নীলনকশার শিকার হয়ে নির্মম হত্যার শিকার হয়েছিলেন।
অমিত বিক্রম বাঙালির জীবনপণ যুদ্ধে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর চূড়ান্ত পরাজয় তখন ছিল কেবল দিনগণনার বিষয়। সেই অনিবার্য পরাজয়ের প্রাক্কালে মরণকামড় দেওয়ার চেষ্টা করেছিল ঘাতক বাহিনী। স্বাধীনতা অর্জন করলেও বাঙালি জাতি যেন মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে, সেই চক্রান্ত করেছিল তারা। দেশের সেরা বুদ্ধিজীবীদের তালিকা করে তাঁদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্মম নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছিল। এ কাজে পাকিস্তানি সেনাদের সরাসরি সহায়তা করেছিল তাদের মিত্র এ দেশি রাজাকার, আলবদর বাহিনী। এরাই ঘাতক সেনাদের নিয়ে গিয়ে চিনিয়ে দিয়েছে বুদ্ধিজীবীদের বাড়ি। চিনিয়ে দিয়েছে সেই নিরীহ মানুষগুলোকে।
মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ে পরে মিরপুরে রায়েরবাজার পরিত্যক্ত ইটখোলা ও মিরপুরে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া সেসব বুদ্ধিবৃত্তিক পেশায় যুক্ত মানুষের মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়। তাঁদের অনেকের ছিল পিছমোড়া করে হাত ও চোখ বাঁধা। ভয়ানক নির্যাতনের চিহ্ন ছিল শরীরে। তাঁদের মরদেহ উদ্ধার হওয়ার মধ্য দিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বুদ্ধিজীবী হত্যার গভীর ষড়যন্ত্র প্রকাশ হয়ে পড়ে। এর পর থেকেই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা ও শোক প্রকাশ করে ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়ে আসছে।
শুধু ঢাকাতেই নয়, সারা দেশেই বুদ্ধিবৃত্তিক কাজে যুক্ত মানুষদের হত্যা করেছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। এই হত্যাকাণ্ডের ছিল দুটি পর্যায়। ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে হানাদার সেনারা রাজধানীতে গণহত্যা শুরু করেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকায় সাধারণ নিরীহ জনসাধারণের পাশাপাশি শিক্ষক, চিকিৎসকদেরও হত্যা করে। এরপর থেকে হানাদাররা সারা দেশের শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, শিল্পী, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, গবেষক, সংস্কৃতিসেবীসহ মেধা মনন সৃজনশীল কাজে যুক্ত মানুষদের বেছে বেছে হত্যা করতে থাকে। মুক্তিযুদ্ধে শেষ পর্যায় তারা এই বুদ্ধিবৃত্তিক মানুষদের নিঃশেষ করে দেওয়ার জন্য তালিকা করে হত্যা চালাতে থাকে। তাঁদের মধ্যে যেমন প্রবীণ প্রাজ্ঞজনেরা ছিলেন, তেমনি ছিলেন উদিত যৌবনের বহু সম্ভাবনাময় তরতাজা প্রাণ। আজ তাঁদের স্মৃতির স্মরণ করা হবে সারা দেশে।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক বাণী দিয়েছেন।
কর্মসূচিশহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আন্তমন্ত্রণালয়ের সভায় জানানো হয়েছে, আজ রোববার সকাল ৭টা ৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং ৭টা ৬ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। তাঁরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে সেখানে নীরবে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবেন। এ সময় বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টাকে রাষ্ট্রীয় স্যালুট প্রদান করবে।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার পুষ্পস্তবক অর্পণের পর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসরাত চৌধুরী, শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্য এবং হুইলচেয়ারধারী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।