ভোলায় ধর্মঘট প্রত্যাহার, সকাল থেকে বাস চলাচল শুরু
Published: 29th, April 2025 GMT
বাস ধর্মঘটের এক দিন পর আজ মঙ্গলবার ভোর থেকে ভোলা-চরফ্যাশনসহ পাঁচটি রুটে নিয়মিত বাস চলাচল শুরু হয়েছে। জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে সমঝোতায় পৌঁছানোর পর বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়ন ও বাস মালিক সমিতি গতকাল সোমবার রাতেই ধর্মঘট প্রত্যাহার করে।
গতকাল বিকেলে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে ভোলা বাস মালিক সমিতি, বাস মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়ন, সিএনজিচালিত অটোরিকশা মালিক সমিতি ও সিএনজিশ্রমিক নেতাদের সঙ্গে জরুরি সভায় বসেন জেলা প্রশাসক আজাদ জাহান। পরে ভোলা জেলা বাস মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মিজানুর রহমান ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন।
মিজানুর রহমান বলেন, ‘জেলা প্রশাসক আমাদের দাবি মেনে নেওয়ার পর আমরা ধর্মঘট প্রত্যাহার করেছি। সোমবার রাতেই দুটি বাস চরফ্যাশনের উদ্দেশে ছেড়ে গেছে। আজ ভোর থেকে নিয়মিত বাস চলাচল শুরু হয়েছে।’
ভোলা জেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি আমিনুল ইসলাম খান বলেন, ‘মহাসড়ক ও আঞ্চলিক মহাসড়কে থ্রি–হুইলার চলাচল নিষিদ্ধ। কিন্তু ভোলায় তা মানা হচ্ছে না। তিন চাকার অটোরিকশায় অতিরিক্ত যাত্রী তোলা ও মহাসড়কে চলাচলের কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। বিষয়টি জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। প্রশাসন মানবিক দৃষ্টিতে তিন চাকার গাড়ি চলাচলের অনুমতি দিলেও দূরপাল্লার অটোরিকশায় তিনজনের বেশি যাত্রী বহন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ধাপে ধাপে মহাসড়কে তিন চাকার যান চলাচল বন্ধের আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে। তাই দুই পক্ষ মিলে সমঝোতায় পৌঁছেছি এবং ধর্মঘট প্রত্যাহার করেছি। এখন আর কোনো মারামারি বা হাতাহাতি হবে না।’
জেলা প্রশাসক মো.
সমঝোতা বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, নৌবাহিনীর কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তারা। উল্লেখ্য, চরফ্যাশন উপজেলা সদরে সিএনজিতে যাত্রী তোলা নিয়ে বাসশ্রমিক ও সিএনজিশ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় বাস ধর্মঘট আহ্বান করা হয়।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রে ইসরায়েলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হলেও প্রাণহানি কম যে কারণে
ইরানে নজিরবিহীন ইসরায়েলি হামলার পর পাল্টা জবাব দিচ্ছে তেহরান। হামলার তীব্রতাও বাড়ছে। তবে যুদ্ধ পরিস্থিতি মোকাবিলার লক্ষ্যে পরিকল্পিতভাবে ঘরবাড়ি ও স্থাপনা নির্মাণ এবং আগাম সতর্কতার কারণে ইসরায়েলে প্রাণহানি কম হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা পালন করছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর ‘হোম ফ্রন্ট কমান্ড অ্যাপ’।
এই অ্যাপের মাধ্যমে ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানার ১৫-৩০ মিনিট আগেই সতর্কবার্তা পেয়ে যাচ্ছেন ইসরায়েলিরা। এরপর তাঁরা আশ্রয় নিচ্ছেন বোমা সুরক্ষা কেন্দ্র (বোম্ব শেল্টার) ও নিরাপদ কক্ষে। প্রাণহানি এড়াতে ‘বোম্ব শেল্টার’ ও নিরাপদ কক্ষের কার্যকারিতা ইতিমধ্যে প্রমাণিত হয়েছে।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর ‘হোম ফ্রন্ট কমান্ড’ শনিবার জানিয়েছে, তারা ইরানের সম্ভাব্য ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ১৫-৩০ মিনিট আগে ইসরায়েলিদের ফোনে সতর্কবার্তা পাঠানো শুরু করেছে, যাতে মানুষ বোম্ব শেল্টারে পৌঁছানোর জন্য পর্যাপ্ত সময় পান।
হোম ফ্রন্ট কমান্ড অ্যাপের মাধ্যমে এই আগাম সতর্কবার্তা দেওয়া হচ্ছে। বেসামরিক নাগরিকদের বোম্ব শেল্টারের কাছাকাছি থাকতে নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। সামরিক কর্মকর্তারা বলেন, যাঁদের বাড়িতে বোমা প্রতিরোধী কক্ষ নেই, তাঁদের সময়মতো আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে এটি সহায়তা করবে।
ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের পর ইরান থেকে ইসরায়েলে পৌঁছাতে সাধারণত প্রায় ১০ মিনিট সময় লাগে। তবে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী সাধারণত ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার কয়েক মিনিট আগেই ইরানি সামরিক বাহিনীর প্রস্তুতির ওপর ভিত্তি করে হামলার বিষয়টি শনাক্ত করতে পারে।
একবার নিশ্চিত উৎক্ষেপণ শনাক্ত হলেই হোম ফ্রন্ট কমান্ড তাদের অ্যাপ ও মুঠোফোন সম্প্রচার পদ্ধতি (সেল ব্রডকাস্ট সিস্টেম) উভয়টি ব্যবহার করে একটি আগাম সতর্কতা দেয়, যাতে বেসামরিক নাগরিকেরা বোম্ব শেল্টারে যেতে পারেন। শুক্রবার থেকে এমনটি করে করে আসছে হোম ফ্রন্ট কমান্ড। এতে বেসামরিক নাগরিকেরা আশ্রয়কেন্দ্রে পৌঁছাতে প্রায় ১০ মিনিট সময় পাচ্ছেন।
ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানার প্রায় ৯০ সেকেন্ড আগে সাইরেন বাজে। সাইরেন বাজার সঙ্গে সঙ্গে বেসামরিক নাগরিকদের অবশ্যই তাৎক্ষণিক বোম্ব শেল্টারে প্রবেশ করতে হবে আর ‘অল-ক্লিয়ার (সবকিছু স্বাভাবিক)’ বার্তা না দেওয়া পর্যন্ত সেখানেই থাকতে হবে।
শুক্রবার রাতে ইরান যখন প্রথম ধাপে বেশ কয়েকটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছিল, তখন হোম ফ্রন্ট কমান্ড বেসামরিক নাগরিকদের বোম্ব শেল্টারের কাছাকাছি থাকতে নির্দেশনা দেয়। শনিবার বিকেলে এই নির্দেশনা প্রত্যাহার করা হয়।
হোম ফ্রন্ট কমান্ড জানিয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শেষ হয়েছে বলে মনে হলে তারা বেসামরিক নাগরিকদের বোম্ব শেল্টার ছেড়ে যাওয়ার অনুমতি এবং সেগুলোর কাছাকাছি থাকার আর প্রয়োজন হবে না, এমন একটি হালনাগাদ বার্তা দেবে। যদি আরেকটি হামলার আশঙ্কা থাকে, তবে শুরু থেকে যে প্রক্রিয়াটি মেনে চলা হয়েছে, তা একইভাবে অনুসরণ করা হবে।
হোম ফ্রন্ট কমান্ড জোর দিয়ে বলেছে, ভবন বা স্থাপনার ভূগর্ভস্থ পার্কিংয়ের জায়গা বোম্ব শেল্টার হিসেবে বিবেচিত হবে না, যদি না এটি সেভাবে উপযোগী করে নির্মাণ করা হয়।
ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সময় ইসরায়েলের হাইফায় একটি আশ্রয়কেন্দ্রের চিত্র