নরসিংদী জেলা কারাগারে রোকন মিয়া (৩৫) নামের এক কয়েদির মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে অসুস্থ অবস্থায় তাঁকে সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তবে স্বজনের দাবি, তাঁকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। রাত ৯টার দিকে রোকনের মৃত্যু হলেও ১৩ ঘণ্টা পর সকাল ১০টায় তাঁর স্বজনকে জানায় কারা কর্তৃপক্ষ। খবর পেয়ে স্বজন ও এলাকাবাসী নরসিংদী জেলা হাসপাতালে ভিড় করেন। নিহত রোকন মিয়া নরসিংদী সদর উপজেলার নজরপুর ইউনিয়নের মোহাম্মদ আলীর ছেলে। 

স্বজনের অভিযোগ, মঙ্গলবার রাত ৯টায় রোকন মারা যান। অথচ পরিবারকে জানানো হয়েছে পরদিন বুধবার সকাল ১০টায়। সে অসুস্থ হয়ে পড়লেও পরিবার ও স্বজনকে জানানো হয়নি। এমনকি মৃত্যুর ১৩ ঘণ্টা পর জানানোর কারণ জিজ্ঞাসা করলে কারা কর্তৃপক্ষ বলে, তাদের ভুল হয়েছে। তাঁকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন নিহতের স্বজন। 

নরসিংদী জেলা কারাগারের জেল সুপার শামীম ইকবাল বলেন, ২০২৩ সালের একটি মাদক মামলায় তিনি কারাগারে ছিলেন। মঙ্গলবার রাতে রোকন নামে ওই কয়েদি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। ডায়াবেটিস বা মাদকাসক্তের কোনো কারণে তাঁর মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। ময়নাতদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে।

তিনি বলেন, নিহতের স্বজন অভিযোগ করতেই পারে। কারাগারে এতগুলো মানুষ থাকে, এখানে কাউকে মেরে ফেলার ঘটনা কারাগারের ইতিহাসে কোনো দিনই ছিল না। এটা মানুষের একটি ভ্রান্ত ধারণা। 

নরসিংদীর সহকারী কমিশনার ও ম্যাজিস্ট্রেট রাফিউর রহমান বলেন, হাসপাতালের প্রতিবেদনে পরিষ্কার বলা আছে, তাঁকে যখন হাসপাতালে আনা হয়, সে মৃত ছিল। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁকে মৃত অবস্থায় পেয়েছে। ময়নাতদন্তের পর বিস্তারিত বলা যাবে। 

পুলিশ জানায়, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ স্বজনের কাছে হস্তান্তর করা হবে। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ময়ন তদন ত স বজন

এছাড়াও পড়ুন:

গাইবান্ধায় চোর সন্দেহে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা, নারী আটক

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে গরুচোর সন্দেহে আবদুস সালাম (৫০) নামের এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ শনিবার ভোররাতে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বেলকা ইউনিয়নের বেলকা নবাবগঞ্জ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত আবদুস সালাম একই ইউনিয়নের রামডাকুয়া গ্রামের ওমেদ আলীর ছেলে। সালাম মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন। এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দুলালী বেগম (৪৩) নামের এক নারীকে আটক করেছে পুলিশ। আটক দুলালী বেলকা নবাবগঞ্জ গ্রামের আবদুল গণি মিয়ার স্ত্রী।

পুলিশ ও এলাকাবাসী জানান, গত শুক্রবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে বেলকা নবাবগঞ্জ গ্রামের গণি মিয়ার গোয়ালঘরে ঢোকেন সালাম। টের পেয়ে গণি মিয়ার স্ত্রী দুলালী বেগম বিষয়টি তাঁর স্বামীকে জানান। পরে তাঁরা গিয়ে গোয়ালঘরে সালামকে দেখতে পান। এরপর দুলালী বেগম আশপাশের লোকজন ও আত্মীয়স্বজনকে খবর দেন। তাঁরা এসে সালামকে রশি দিয়ে বেঁধে বেধড়ক মারধর শুরু করেন। একপর্যায়ে সালাম অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে পুকুরের তীরে বেঁধে রাখা হয়। আজ ভোররাতে তাঁকে গোয়ালঘরে নিয়ে গিয়ে আবারও নির্যাতন চালানো হয়। এতে ঘটনাস্থলেই আবদুস সালাম মারা যান।

গোয়ালঘরের মালিক আবদুল গণি মিয়া বলেন, ‘কয়েক দিন আগে আমার একটি শ্যালো মেশিন হারিয়েছে। রাতে যখন গোয়ালে গিয়ে সালামকে দেখতে পাই, তখন প্রতিবেশী ও আত্মীয়স্বজনকে খবর দিই। পরে তারা এসে মারধর করেছে।’
খবর পেয়ে সুন্দরগঞ্জ থানা–পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। বিকেলে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। শনিবার বিকেল পাঁচটায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত থানায় মামলা হয়নি। সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি আবদুল হাকিম আজাদ বলেন, ঘটনার তদন্ত চলছে। ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নিহত ব্যক্তির স্বজনেরা জানান, আবদুস সালাম দীর্ঘদিন ধরে মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন। তিনি মানুষের বাড়িতে কাজ করতেন। এর আগে কখনো তাঁর বিরুদ্ধে চুরি বা অপকর্মের অভিযোগ ওঠেনি। তাঁরা দাবি করেন, সালামকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির ছোট তিনটি ছেলে সন্তান রয়েছে, বাবাকে হারিয়ে তারা এখন নিঃস্ব হয়ে পড়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাইবান্ধায় চোর সন্দেহে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা, নারী আটক