শুল্ক আলোচনার জন্য চীনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে যুক্তরাষ্ট্র
Published: 1st, May 2025 GMT
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ১৪৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের বিষয়ে আলোচনার জন্য চীনের সাথে যোগাযোগ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বৃহস্পতিবার চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের সাথে যুক্ত একটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাকাউন্ট এ তথ্য জানিয়েছে।
ইউয়ুয়ান তান্তিয়ান তার অফিসিয়াল ওয়েইবো সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে প্রকাশিত একটি পোস্টে বেনামি সূত্রের বরাত দিয়ে বলেছেন, “শুল্ক ইস্যুতে আলোচনা করার আশায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একাধিক চ্যানেলের মাধ্যমে সক্রিয়ভাবে চীনের সাথে যোগাযোগ করেছে।”
চলতি সপ্তাহে মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট এবং হোয়াইট হাউসের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা কেভিন হ্যাসেটসহ মার্কিন কর্মকর্তারাও বাণিজ্য উত্তেজনা কমানোর ক্ষেত্রে অগ্রগতির আশা প্রকাশ করেছেন।
হ্যাসেট সিএনবিসিকে জানান, শুল্ক আরোপ নিয়ে “উভয় সরকারের মধ্যেই হালকা আলোচনা” হয়েছে। কিছু মার্কিন পণ্যের উপর চীনের শুল্ক কমানো অগ্রগতির লক্ষণ।
বেইজিং শুল্কের প্রতি তার ক্ষোভ প্রকাশ্যেই জানিয়েছে। তাদের মতে, এই শুল্ক হুমকির সমতুল্য। তবে এটি বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির উত্থান থামাতে পারে না।
শুল্ক আরোপের বিরুদ্ধে পাল্টা আক্রমণ করার জন্য তার প্রচারণা যন্ত্রকে কাজে লাগানোর পাশাপাশি চীন নীরবে মার্কিন তৈরি পণ্যের একটি তালিকা তৈরি করেছে। মার্কিন শুল্কের প্রভাব কমাতে তারা এসব পণ্যকে প্রতিশোধমূলক ১২৫ শতাংশ শুল্ক থেকে অব্যাহতি দেবে। এসব পণ্যের মধ্যে রয়েছে নির্বাচিত ওষুধ, মাইক্রোচিপ এবং জেট ইঞ্জিন।
ফক্স বিজনেস নেটওয়ার্কের সাথে সাক্ষাৎকারে বেসেন্ট কোনো নির্দিষ্ট আলোচনার কথা উল্লেখ করেননি। তবে জানিয়েছেন, আলোচনা শুরু করার জন্য মার্কিন পক্ষ থেকে ১৪৫ শতাংশ এবং চীনা পক্ষ থেকে ১২৫ শতাংশ উচ্চ শুল্ক আরোপের উত্তেজনা হ্রাস করা প্রয়োজন।
তিনি বলেছেন, “আমি আত্মবিশ্বাসী যে চীনারা একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে চাইবে। এবং যেমনটি আমি বলেছি, এটি একটি বহু-পদক্ষেপ প্রক্রিয়া হতে চলেছে। প্রথমে, আমাদের উত্তেজনা কমাতে হবে এবং তারপর সময়ের সাথে সাথে আমরা একটি বৃহত্তর বাণিজ্য চুক্তির উপর মনোযোগ দিতে শুরু করব।”
তিনি জানান, প্রথম পদক্ষেপগুলোর মধ্যে একটি হবে ট্রাম্পের ২০২০ সালের ‘প্রথম ধাপ’ বাণিজ্য চুক্তির অংশ হিসেবে আমেরিকান পণ্যের জন্য ক্রয় প্রতিশ্রুতি পূরণে চীনের ব্যর্থতার পুনর্বিবেচনা করা।
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শ ল ক আর প র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস আজ
‘উদয়ের পথে শুনি কার বাণী/ ভয় নাই ওরে ভয় নাই/ নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান/ ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই’। তাঁদের নিঃশেষে প্রাণদানের স্মৃতি আজ গভীর বেদনায় স্মরণ করবে জাতি। আজ থেকে ৫৪ বছর আগে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীরা হানাদার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নীলনকশার শিকার হয়ে নির্মম হত্যার শিকার হয়েছিলেন।
অমিত বিক্রম বাঙালির জীবনপণ যুদ্ধে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর চূড়ান্ত পরাজয় তখন ছিল কেবল দিনগণনার বিষয়। সেই অনিবার্য পরাজয়ের প্রাক্কালে মরণকামড় দেওয়ার চেষ্টা করেছিল ঘাতক বাহিনী। স্বাধীনতা অর্জন করলেও বাঙালি জাতি যেন মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে, সেই চক্রান্ত করেছিল তারা। দেশের সেরা বুদ্ধিজীবীদের তালিকা করে তাঁদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্মম নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছিল। এ কাজে পাকিস্তানি সেনাদের সরাসরি সহায়তা করেছিল তাদের মিত্র এ দেশি রাজাকার, আলবদর বাহিনী। এরাই ঘাতক সেনাদের নিয়ে গিয়ে চিনিয়ে দিয়েছে বুদ্ধিজীবীদের বাড়ি। চিনিয়ে দিয়েছে সেই নিরীহ মানুষগুলোকে।
মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ে পরে মিরপুরে রায়েরবাজার পরিত্যক্ত ইটখোলা ও মিরপুরে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া সেসব বুদ্ধিবৃত্তিক পেশায় যুক্ত মানুষের মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়। তাঁদের অনেকের ছিল পিছমোড়া করে হাত ও চোখ বাঁধা। ভয়ানক নির্যাতনের চিহ্ন ছিল শরীরে। তাঁদের মরদেহ উদ্ধার হওয়ার মধ্য দিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বুদ্ধিজীবী হত্যার গভীর ষড়যন্ত্র প্রকাশ হয়ে পড়ে। এর পর থেকেই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা ও শোক প্রকাশ করে ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়ে আসছে।
শুধু ঢাকাতেই নয়, সারা দেশেই বুদ্ধিবৃত্তিক কাজে যুক্ত মানুষদের হত্যা করেছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। এই হত্যাকাণ্ডের ছিল দুটি পর্যায়। ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে হানাদার সেনারা রাজধানীতে গণহত্যা শুরু করেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকায় সাধারণ নিরীহ জনসাধারণের পাশাপাশি শিক্ষক, চিকিৎসকদেরও হত্যা করে। এরপর থেকে হানাদাররা সারা দেশের শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, শিল্পী, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, গবেষক, সংস্কৃতিসেবীসহ মেধা মনন সৃজনশীল কাজে যুক্ত মানুষদের বেছে বেছে হত্যা করতে থাকে। মুক্তিযুদ্ধে শেষ পর্যায় তারা এই বুদ্ধিবৃত্তিক মানুষদের নিঃশেষ করে দেওয়ার জন্য তালিকা করে হত্যা চালাতে থাকে। তাঁদের মধ্যে যেমন প্রবীণ প্রাজ্ঞজনেরা ছিলেন, তেমনি ছিলেন উদিত যৌবনের বহু সম্ভাবনাময় তরতাজা প্রাণ। আজ তাঁদের স্মৃতির স্মরণ করা হবে সারা দেশে।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক বাণী দিয়েছেন।
কর্মসূচিশহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আন্তমন্ত্রণালয়ের সভায় জানানো হয়েছে, আজ রোববার সকাল ৭টা ৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং ৭টা ৬ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। তাঁরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে সেখানে নীরবে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবেন। এ সময় বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টাকে রাষ্ট্রীয় স্যালুট প্রদান করবে।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার পুষ্পস্তবক অর্পণের পর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসরাত চৌধুরী, শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্য এবং হুইলচেয়ারধারী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।