সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ পাথর কোয়ারি, শাহ আরেফিন টিলা ও বাংকার এলাকার পাথর লুটপাটের পর এবার ‘পাথরখেকো’দের নজর পড়েছে দেশের সুপরিচিত পর্যটনকেন্দ্র সাদা পাথর এলাকায়। গত ২৩ এপ্রিল থেকে চক্রটি সাদা পাথর এলাকায় পাথর লুট শুরু করেছে। ভোলাগঞ্জ পাথর কোয়ারি ও শাহ আরেফিন টিলা এলাকা এরই মধ্যে প্রায় পাথরশূন্য করে ফেলা হয়েছে। তবে পার্শ্ববর্তী বাংকার এলাকায় দেদার পাথর উত্তোলন চলছে।

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী ভোলাগঞ্জ সীমান্তের শূন্যরেখার কাছে সাদা পাথর পর্যটনকেন্দ্রের অবস্থান। প্রায় ১৫ একর এলাকাজুড়ে এ পর্যটনকেন্দ্র। ছোট-বড় অসংখ্য পাথরের ওপর দিয়ে প্রবাহিত জলের স্রোতোধারা এই পর্যটনকেন্দ্রের মূল আকর্ষণ। এই সৌন্দর্যের টানে প্রতিদিন দেশ-বিদেশের হাজারো পর্যটক ভিড় জমান। 

বাংকার এলাকাটি দেশের সবচেয়ে বড় পাথর কোয়ারি ভোলাগঞ্জের পাশে অবস্থিত। বাংলাদেশ রেলওয়ের একমাত্র রজ্জুপথটি (রোপওয়ে) এখানে অবস্থিত। রোপওয়ে এলাকাটিই মূলত সংরক্ষিত বাংকার হিসেবে পরিচিত। ১৯৬৪ সালে ভোলাগঞ্জ থেকে সুনামগঞ্জের ছাতকে পাথর পরিবহনে স্থল কিংবা জলযানের বিকল্প হিসেবে ১১৯টি খুঁটির মাধ্যমে তৈরি হয় রোপলাইন। ভোলাগঞ্জের রোপওয়ে এলাকাটি ৫৯ একর জায়গাজুড়ে অবস্থিত। এখানে টিলার মতো সামান্য উঁচু ভূমি আর সমতল স্থানের নিচে আছে ছোট-বড় অসংখ্য পাথর।

পাথর উত্তোলন বন্ধে প্রশাসন নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে। ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে দোষীদের কারাদণ্ডও দেওয়া হচ্ছে। পরিবেশ ও প্রতিবেশ রক্ষায় প্রয়োজনে তাঁরা আরও কঠোরতা দেখাবেন।সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ

এই দুই এলাকায় পাথর লুটের বিষয়ে জানতে চাইলে সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ বিষয়টি অবগত বলে স্বীকার করেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, পাথর উত্তোলন বন্ধে প্রশাসন নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে। ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে দোষীদের কারাদণ্ডও দেওয়া হচ্ছে। পরিবেশ ও প্রতিবেশ রক্ষায় প্রয়োজনে তাঁরা আরও কঠোরতা দেখাবেন।

প্রকৃতি ও পরিবেশের সুরক্ষায় দেশের ৫১টি পাথর কোয়ারির মধ্যে ১৭টি কোয়ারির ইজারা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। গত ২৭ এপ্রিল বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সারা দেশের গেজেটভুক্ত পাথর, সিলিকা, বালু, নুড়িপাথর, সাদা মাটির কোয়ারিগুলোর ব্যবস্থাপনা-সংক্রান্ত সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

ইজারা স্থগিত রাখা কোয়ারির অধিকাংশই সিলেটে অবস্থিত। এর মধ্যে ভোলাগঞ্জ পাথর কোয়ারিও রয়েছে। কোয়ারিটির ঠিক পাশেই সংরক্ষিত বাংকার ও সাদা পাথর এলাকা অবস্থিত। তবে এ দুটি এলাকা কোয়ারিভুক্ত না হলেও এখানে প্রচুর পরিমাণে ছোট-বড় পাথর রয়েছে। মূলত এসব পাথরই অবৈধভাবে উত্তোলন করা হচ্ছে।

নৌকা যাঁর, পাথর তাঁর

২৭ এপ্রিল বেলা সাড়ে ৩টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সাদা পাথর ও বাংকার এলাকায় সরেজমিনে দেখা গেছে, শ্রমিকেরা বেলচা, কোদাল ও শাবল ব্যবহার করে পাথর উত্তোলন করে অন্তত শতাধিক বারকি নৌকায় বোঝাই করেছেন। পরে সেসব পাথর বিক্রির জন্য ধলাই নদ দিয়ে ভোলাগঞ্জ ১০ নম্বর সাইট এলাকায় নিয়ে যাচ্ছেন।

বিকেল পৌনে ৫টার দিকে সাদা পাথর এলাকার পৃথক দুটি অংশে ২১ ব্যক্তিকে পানি থেকে হাতড়ে পাথর তুলে ১৭টি নৌকায় বোঝাই করতে দেখা গেল। আবার দুজন ব্যক্তিকে সাদা পাথরমুখী রাস্তায় ধলাই নদের পাড় খুঁড়ে পাথর তুলতে দেখা গেল।

বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে পার্শ্ববর্তী বাংকার এলাকায় অন্তত শতাধিক শ্রমিককে বেলচা, কোদাল ও শাবল দিয়ে মাটি খুঁড়ে পাথর তুলতে দেখা যায়। সেখানে খোঁড়াখুঁড়ির কারণে শত শত গভীর গর্ত তৈরি হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ এসব গর্ত থেকে তোলা পাথর স্তূপাকারে পাড়ে জমা করছেন অনেকে। আবার কেউ কেউ এসব পাথর টুকরিতে ভরে মাথায় নিয়ে কিছু দূর পর্যন্ত হেঁটে নৌকায় রাখছেন।

পরদিন ২৮ এপ্রিল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, প্রবল বৃষ্টির মধ্যেও বাংকার এলাকায় কিছু শ্রমিক পাথর উত্তোলন করে নৌকায় এনে রাখছিলেন। পাথরভর্তি চারটি নৌকাকে এ সময় বাংকার এলাকা থেকে ধলাই নদ দিয়ে ১০ নম্বর সাইট এলাকায় আসতে দেখা যায়।

কোয়ারিটির ঠিক পাশেই সংরক্ষিত বাংকার ও সাদা পাথর এলাকা অবস্থিত। তবে এ দুটি এলাকা কোয়ারিভুক্ত না হলেও এখানে প্রচুর পরিমাণে ছোট-বড় পাথর রয়েছে। মূলত এসব পাথরই অবৈধভাবে উত্তোলন করা হচ্ছে।

বাংকার এলাকায় কর্মরত দুজন শ্রমিক জানান, ২৬ এপ্রিল ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে পাথর উত্তোলনে জড়িত ৯ ব্যক্তিকে ২ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন। এতে অনেকে ভয় পেয়েছেন। অন্য দিন হাজারো শ্রমিক বাংকার এলাকায় পাথর উত্তোলন করতে এলেও ২৭ এপ্রিল থেকে তুলনামূলকভাবে কম শ্রমিকই আসছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বারকি নৌকার এক মালিক বলেন, যেহেতু ধলাই নদ পেরিয়ে পাথর নিয়ে আসতে হয়, তাই পরিবহনে এখানে কয়েক হাজার বারকি নৌকা আছে। মূলত শ্রমিকেরা পাথর তুলে এসব নৌকার মালিকদের কাছে বিক্রি করেন। পরে নৌকার মালিকেরা এসব পাথর ১০ নম্বর সাইট এলাকায় ক্রাশার মেশিন (পাথর ভাঙার কল) মালিকদের কাছে বিক্রি করেন। আবার অনেক নৌকামালিকের সরাসরি তত্ত্বাবধানেও পাথর উত্তোলন করেন শ্রমিকেরা। মূলত যাঁর নৌকা আছে, তাঁরা পাথর পরিবহনে সুবিধা ও মুনাফা বেশি পান। এককথায় নৌকা যাঁর, পাথরও তাঁর।

বিকেল পৌনে ৫টার দিকে সাদা পাথর এলাকার পৃথক দুটি অংশে ২১ ব্যক্তিকে পানি থেকে হাতড়ে পাথর তুলে ১৭টি নৌকায় বোঝাই করতে দেখা গেল। আবার দুজন ব্যক্তিকে সাদা পাথরমুখী রাস্তায় ধলাই নদের পাড় খুঁড়ে পাথর তুলতে দেখা গেল।

শ্রমিকেরা জানান, দিনের চেয়ে রাতের বেলায় প্রশাসনের নজরদারির কোনো ভয় থাকে না। তাই ওই সময় পাথর উত্তোলন বেশি হয়। কয়েক হাজার শ্রমিক বাংকার এলাকায় প্রতিদিন পাথর উত্তোলন করেন। তবে অভিযানের কারণে পরিস্থিতির অনেকটা বদল হয়েছে। একেকজন শ্রমিক পাথর উত্তোলন করে তিন থেকে চার হাজার টাকা আয় করেন বলে জানান।

স্থানীয় পাথর ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, বারকি নৌকাভর্তি ‘বোল্ডার’ (বড় পাথর) ৫ হাজার টাকা, ‘ভুতু’ (মাঝারি) ৪ হাজার থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকা এবং ‘সিঙ্গেল’ (ছোট পাথর) ৩ হাজার থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকায় শ্রমিকেরা বিক্রি করেন।

সংরক্ষিত রোপওয়ে এলাকা থেকে পাথর উত্তোলন করে নেওয়া হচ্ছে। সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক র এল ক য় এল ক য় প অবস থ ত ছ ট বড়

এছাড়াও পড়ুন:

‘ক্রিকেট ট্যুরিজমকে ঘিরে পর্যটনকে উন্নত করে অর্থনীতিতে অবদানই মূল লক্ষ্য’

ক্রিকেট ট্যুরিজম ঘিরে যেন এ দেশের পর্যটন খাতকে আরো উন্নত করা যায়, সেটিই মূল লক্ষ্য বলে মন্তব্য করেছেন সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) প্রেসিডেন্টস অ্যাডভাইজার কমিটির উপদেষ্টা ক্রীড়া সংগঠক মো. শাখাওয়াত হোসেন।

তিনি বলেন, “বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা ক্রিকেট। দেশে একাধিক আইসিসির আসর হওয়ায় এ খাতে আরো বাড়তি বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জন এবং কর্মসংস্থান দুটোই সম্ভব। এটাকেই মূল চিন্তায় নিয়ে ক্রিকেট ও অন্যান্য ক্রীড়াকে নিয়ে কিভাবে বাংলাদেশের পর্যটন খাতকে আরো গতিশীল করা যায় সেটা নিয়ে বিস্তৃতভাবে কাজ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।”

শাখাওয়াত হোসেন বলেন, “বাংলাদেশের যে সব অঞ্চল বিদেশি পর্যটকবান্ধব সেসব জায়গায় বিশেষ করে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, সিলেট, রাজশাহী ও খুলনা এসব বিভাগীয় শহরগুলোতে সামনের দিনে যেসব খেলা হবে, সেখানকার গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোকে ট্যুর প্ল্যানের অংশ হিসেবে সংযোগ করানোর জন্য কাজ করে যাচ্ছি। এতে করে অভ্যন্তরীণ আয়ের উৎস যেভাবে বাড়বে, বিদেশি পর্যটকদের কাছে বাংলাদেশের ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং জীবনাচার ক্রিকেট ট্যুরিজমের মধ্য দিয়ে ফুটিয়ে তোলা আরো সহজ হবে। এতে খেলার সঙ্গে এ দেশের ঐতিহ্য এবং অতীত নিয়েও জানতে পারবে পুরো দুনিয়া।”

বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুলের কাছে নিজের পরিকল্পনা সাজিয়ে পরিবেশন করার কথা জানিয়ে শাখাওয়াত বলেন, “সামনে ক্রিকেট ট্যুরিজম ঘিরে যাতে এ দেশের পর্যটন খাত আরো উন্নত হয় সেটিই আমার মূল লক্ষ্য।”

বিসিবি সভাপতির উপদেষ্টার পাশাপাশি তিনি ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টসের প্রধান নির্বাহী এবং ভোলা জেলার ক্রীড়া সংগঠক।

গত বৃহস্পতিবার বিসিবি পরিচালকদের সভায় ৩ জনকে অ্যাডভাইজার কমিটিতে মনোনীত করে। তাদের মধ্যে  শাখাওয়াত হোসেন মনোনীত হয়েছেন। অন্য ২ জন হলেন-সৈয়দ আবিদ হোসেন সামী ও ব্যারিষ্টার শাইখ মাহাদী। এদের মধ্য থেকে পর্যটন খাত বিশেষজ্ঞ শাখাওয়াত হোসেনেক ক্রিকেট পর্যটন উপদেষ্টা হিসেবে মনোনীত করেছেন। তিনি দীর্ঘদিন দেশের পর্যটন উন্নয়ন নিয়ে কাজ করেছেন। এই অঙ্গনে জাতীয় ও আন্তজার্তিক পর্যায়ে পুরষ্কার পেয়েছেন।

শুরু থেকেই তিনি ক্রিকেটের সঙ্গে ছিলেন। নিয়মিত খেলার সঙ্গে আছেন। কর্পোরেট বড় দুটি ক্রিকেট আয়োজনের মূল উদ্যোক্তা হিসেবে মো. শাখাওয়াত হোসেন গত কয়েক বছর যে সফলতা দেখিয়েছেন, তা নজর কাড়বে যে কারো। সম্প্রতি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড সভাপতির উপদেষ্টা হওয়ার পরিচয়ের আগেই হোটেল ও পর্যটন ব্যবসার সাফল্য তাকে বসিয়েছে অনেক উঁচু আসনে।

ভোলায় জন্ম নেওয়া এই কর্পোরেট ব্যক্তিত্বের আছে নিজস্ব ক্ষেত্রেও দারুণ সাফল্য। শাখাওয়াত হোসেন এ দেশের পর্যটন খাত ও হোটেল নিয়ে শুধু কাজই করেন না, তিনি এ বিষয়ে গবেষণা করেছেন এককভাবেই। যে কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের অন্য দুটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে তার কাছ থেকে এ বিষয়ে জ্ঞানার্জন করছেন শতশত শিক্ষার্থী। দেশের মূল জিডিপি থেকে প্রায় চার ভাগ (৩.৯৮) শতাংশ যে আয় আসে সেটি আরো বাড়িয়ে নেওয়ার জন্য তিনি চেষ্টা করছেন নতুন নতুন উদ্ভাবনী সব ধারণা ব্যবহারের মধ্য দিয়ে।

বিশ্বে বিভিন্ন প্রান্তে বড় বড় ক্রীড়া ইভেন্ট যেমন অলিম্পিক, ফুটবল বিশ্বকাপ কিংবা ঘরের পাশে ক্রিকেট বিশ্বকাপের সময় দেখা যায় সেখানে অঞ্চল ভেদে ওই ক্রীড়াযজ্ঞকে ঘিরে চলে ব্যাপক পরিবর্তন। যা জীবনমানে রেখে যায় দীর্ঘমেয়াদে উন্নতির ছাপ। সে কারণেই আধুনিক হোটেল ম্যানেজমেন্টে স্পোর্টস ট্যুরিজম দারুণ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।

নিজের জন্মস্থানেও ক্রিকেটের পৃষ্ঠপোষকতা করে আসছেন বেশ বড় একটা সময়। এ সঙ্গে যোগ হয়েছে সফলভাবে দুটি বিহা (বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল হোটেল অ্যাসোসিয়েশন) টুর্নামেন্ট। সদ্য সমাপ্ত আসরে ৫১টি হোটেল থেকে প্রধান ২০টি হোটেল অংশগ্রহণ করে। এছাড়া বাংলাদেশ হাউসকিপার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হিসেবে স্বতন্ত্র আরো একটি ক্রিকেট টুর্নামেন্ট নিয়মিত আয়োজন করে আসছেন তিনি।

আগামী দিনে তার হাত ধরে পর্যটন ও বাংলাদেশের ক্রিকেট আরো একটা ধাপ উঁচুতে পৌঁছে যাবে, এ আশা করতেই পারে সংশ্লিষ্টরা। শাখাওয়াত হোসেনের চাওয়া একটাই, নতুনভাবে বাংলাদেশের ইতিবাচক ছবি পুরো বিশ্বের কাছে ছড়িয়ে দেওয়া। যেখানে ক্রিকেট ট্যুরিজম শব্দটাও জায়গা করে নেবে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে।

শাখাওয়াত হোসেন হসপিটালিটি ও পর্যটন শিল্পে ২০ বছরেরও বেশি অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ব্যক্তিত্ব। যার মধ্যে ৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করেছেন। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পর্যটন ও আতিথেয়তা ব্যবস্থাপনায় ডক্টর অফ ফিলোসফি (পিএইচডি) করছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পর্যটন ও আতিথেয়তা ব্যবস্থাপনায় মাস্টার্স অফ ফিলোসফি (এমফিল) এবং এমবিএ।

তিনি বাংলাদেশের আতিথেয়তা ও পর্যটন শিল্পের একজন স্বনামধন্য পেশাদার ব্যক্তিত্ব। তার কর্মজীবনে বাংলাদেশের বিভিন্ন নামিদামি হোটেলে কাজ করেছেন এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে অনেক আন্তর্জাতিক ও জাতীয় প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেছেন। সর্বোপরি, তিনি বিভিন্ন ক্ষেত্রে তার  শক্তিশালী নেতৃত্বের দক্ষতা প্রদর্শন করেছেন। প্রতিযোগীদের শক্তি, অর্থনৈতিক প্রবণতা, সরবরাহ এবং চাহিদা সহ সামগ্রিক বাজার সম্পর্কে তার সুদৃঢ় জ্ঞান রয়েছে।

তিনি ওয়েস্টিন ঢাকাকে বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় হোটেল হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে অপরিসীম অবদান রেখেছেন এবং এখন তিনি ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টস পিএলসিকে সাফল্যের উচ্চ স্তরে নিয়ে যাওয়ার যাত্রা শুরু করেছেন।

এছাড়া তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয় এবং আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের একজন অ্যাডজাংক্ট ফ্যাকাল্টি।

শাখাওয়াত হোসেন একমাত্র বাংলাদেশি হসপিটালিটি ব্যক্তিত্ব যিনি একজন শিল্প বিশেষজ্ঞ, শিক্ষাবিদ এবং গবেষক। যিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পর্যটন ও আতিথেয়তা ব্যবস্থাপনা বিষয়ে পিএইচডি করছেন এবং একাধিক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরষ্কারে স্বীকৃত। বাংলাদেশের একমাত্র হোটেল ব্যবসায়ী যিনি তার কর্মজীবন শুরু করেছিলেন একেবারে প্রাথমিক স্তরে এবং এখন একটি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির অধীনে ৩টি কার্যকরী এবং ৩টি আসন্ন আন্তর্জাতিক হোটেল দেখাশোনা করেন।

দীর্ঘ কর্মজীবনে শাখাওয়াত হোসেন অসংখ্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছেন, যার মধ্যে রয়েছে- সাউথ এশিয়ান ট্রাভেল অ্যাওয়ার্ড (SATA) ২০২৪-এ দক্ষিণ এশিয়ার পর্যটন মুখ। ট্যুরিজম অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ কর্তৃক TITA-তে বাংলাদেশের আতিথেয়তা পেশাদার (২০২৪)। হোটেল ইন্ডাস্ট্রি আর্কিটেকচার, ইন্টেরিয়রস অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট কনফারেন্স ২০২৪-এ "বাংলাদেশের সেরা হোটেলিয়ার’ বিজনেস আমেরিকা কর্তৃক ২০২৩-এ আন্তর্জাতিক ব্যবসা শ্রেষ্ঠত্ব পুরস্কারে বর্ষসেরা সেরা আতিথেয়তা ব্যবসায় পেশাদার। লিডার্স ফোরাম বিডি কর্তৃক ২০২২-এ লিডারশিপ এক্সিলেন্স সামিট-এ আতিথেয়তা এবং পর্যটন নেতৃত্ব পুরস্কার। সাপ্তাহিক অর্থকণ্ঠ বিজনেস এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ডে বর্ষসেরা সেরা আতিথেয়তা ব্যবসায় পেশাদার ফেডারেশন অফ হসপিটালিটি, কর্তৃক আয়োজিত ৭ম আন্তর্জাতিক ব্যবসা জিনিয়াস বাংলাদেশ-২০২২ এর আইকন অফ দ্য হসপিটালিটি অ্যাওয়ার্ড ২০২২ ট্যুরিজম অ্যান্ড ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট (FoHTEM)। এশিয়ান কারি অ্যাওয়ার্ড ২০২১-এ বিজয়ী-এশিয়ান ক্যাটারিং ফেডারেশন, যুক্তরাজ্য কর্তৃক প্রদত্ত একটি একচেটিয়া আন্তর্জাতিক সম্মাননা।

এছাড়া তিনি বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িত, যার মধ্যে রয়েছে-সদস্য, পর্যটন মাস্টারপ্ল্যান মূল্যায়ন কমিটি, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় (MOCAT), গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক হোটেল অ্যাসোসিয়েশনের (BIHA) পরিকল্পনা ও উন্নয়ন স্থায়ী কমিটি। প্রধান উপদেষ্টা, শেফস ফেডারেশন অফ বাংলাদেশ (CFB)। পরিচালক, পর্যটন ও আতিথেয়তা শিল্প দক্ষতা কাউন্সিল (ISC), বাংলাদেশ। সদস্য, ঢাকা চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (DCCI) বাংলাদেশ। তিনি বাংলাদেশ ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি সিলেবাস কমিটির মেম্বার। পরিচালক, ওয়ার্ল্ড ট্যুরিজম নেটওয়ার্ক (WTN) ঢাকা চ্যাপ্টার। সহকর্মী সদস্য, বাংলাদেশ সোসাইটি ফর হিউম্যান রিসোর্সেস ম্যানেজমেন্ট (BSHRM)। অবৈতনিক পরামর্শদাতা, ট্যুরিজম রিসোর্ট ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ। কারিকুলাম কমিটির সদস্য, ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ। কারিকুলাম কমিটির সদস্য, ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। কারিকুলাম কমিটির সদস্য, ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ।-বিজ্ঞপ্তি

ঢাকা/সাজ্জাদ/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘ক্রিকেট ট্যুরিজমকে ঘিরে পর্যটনকে উন্নত করে অর্থনীতিতে অবদানই মূল লক্ষ্য’