দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে (২৭ থেকে ৩০ এপ্রিল) লেনদেনে অংশ নেওয়া কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলোর মধ্যে বিমা খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি প্রগ্রেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের শেয়ারের দাম সবচেয়ে বেশি কমেছে। বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ কম থাকায় কোম্পানিটির শেয়ার ডিএসইর সাপ্তাহিক দাম কমার তালিকার শীর্ষে উঠে এসেছে।

শনিবার (৩ মে) ডিএসইর সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনা সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

তথ্য মতে, বিদায়ী সপ্তাহে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম কমেছে ২৫.

১২ শতাংশ। বিদায়ী সপ্তাহের আগের সপ্তাহে কোম্পিানিটির শেয়ারের সমাপনী মূল্য ছিল ৬০.১০ টাকা। আর বিদায়ী সপ্তাহ শেষে কোম্পানিটির শেয়ারের সমাপনী মূল্য দাঁড়িয়েছে ৪৫ টাকা। এর ফলে কোম্পানিটির শেয়ারের ডিএসইর সাপ্তাহিক দাম কমার তালিকার শীর্ষে উঠে এসেছে।

ডিএসইতে সাপ্তাহিক দাম কমার শীর্ষ তালিকায় উঠে আসা অন্যান্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে- শাহজিবাজার পাওয়ারের ১৩.৫১ শতাংশ, ডেসকোর ১২.৮৭ শতাংশ, পাওয়ার গ্রিডের ১২.৩০ শতাংশ, এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশনের ১০.৭১ শতাংশ, মীর আখতারের ১০.৩১ শতাংশ, জিল বাংলার ৯.৩৭ শতাংশ, আনলিমা ইয়ার্নের ৮.০৫ শতাংশ, কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্সের ৮.০০ শতাংশ ও এইচ আল টেক্সটাইলের ৭.৯০ শতাংশ শেয়ারদর কমেছে।

ঢাকা/এনটি/ইভা

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স প ত হ ক দ ম কম র

এছাড়াও পড়ুন:

সুবিধা কম, তাই তালিকাভুক্তিতে আগ্রহ নেই বহুজাতিক কোম্পানির

পুঁজিবাজার-সংশ্লিষ্ট সরকারের নীতিনির্ধারকেরা বলছেন, এ দেশে কার্যক্রম পরিচালনাকারী বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তি নিশ্চিত করা জরুরি। শুধু মূলধন জোগানের জন্য নয়, এ দেশের মানুষের স্বার্থেই তাদের শেয়ারবাজারে আনা উচিত। আর কোম্পানিগুলোরও উচিত দায়বদ্ধতা থেকে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া। তবে বহুজাতিক কোম্পানির প্রতিনিধিরা বলছেন, শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হলে তাঁরা বাড়তি কোনো সুবিধা পান না। বিদ্যমান করহার বেশি, তালিকাভুক্ত হওয়ার প্রক্রিয়াও জটিল। ফলে অর্থায়নের বিকল্প উৎস থাকতে তাঁরা শেয়ারবাজারে আসতে চান না।

রাজধানীর নিকুঞ্জে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ভবনে ‘মিট অ্যান্ড গ্রিট: ডিসকাশন অন দ্য কারেন্ট স্টেট অব বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট’ শীর্ষক এক সভায় বক্তারা এ কথাগুলো বলেন। ডিএসই ব্রোকারস অ্যাসোসিয়েশন বা ডিবিএ আজ বুধবার দুপুরে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার অর্থবিষয়ক বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ। সভায় আরও বক্তব্য দেন রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবু আহমেদ, ডিএসইর চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম, শেয়ার সংরক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) চেয়ারম্যান তপন চৌধুরী, ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফআইসিসিআই) সভাপতি জাভেদ আখতার। সভাপতিত্ব করেন ডিবিএর সভাপতি সাইফুল ইসলাম। এতে পুঁজিবাজার-সংশ্লিষ্ট অংশীজনেরা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে ফরেন চেম্বারের সভাপতি জাভেদ আখতার বলেন, বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর মূলধন সংগ্রহের বিকল্প অনেক উপায় রয়েছে। দেশের পুঁজিবাজার থেকে মূলধন সংগ্রহের বাস্তবতা নেই। তাহলে তারা কেন পুঁজিবাজারে আসবে। বর্তমানে যে করহার, সেটি বহুজাতিক কোম্পানিকে শেয়ারবাজারের প্রতি আকর্ষণ করার জন্য পর্যাপ্ত নয়। নির্ধারিত করের চেয়ে কার্যকর করহার অনেক বেশি। এ ছাড়া শেয়ারবাজারে আরও অনেক নীতিগত অসংগতি রয়েছে। এসব দূর করে আস্থা বাড়ানো গেলে বহুজাতিক কোম্পানি বাজারে আনা সম্ভব হবে।

সিডিবিএলের চেয়ারম্যান তপন চৌধুরী বলেন, বলা হচ্ছে বহুজাতিক কোম্পানি কেন শেয়ারবাজারে আসছে না। আসলে টাকা যদি না লাগে তাহলে শেয়ারবাজার থেকে টাকা সংগ্রহ করার তো কোনো যুক্তি নেই।

তবে এই দুই ব্যবসায়ীর কথার সঙ্গে ভিন্নমত প্রকাশ করেন আইসিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবু আহমেদ। তিনি বলেন, বহুজাতিক কোম্পানিগুলো টাকার প্রয়োজন হলেই কেবল পুঁজিবাজারে আসবে, এটি সত্য নয়। অন্য অনেক দেশে তারা জনস্বার্থে বাজারে আসতে বাধ্য হয়েছে। দেশে বহুজাতিক একটা ব্যাংক মাত্র কয়েকটা শাখা নিয়ে ৩ হাজার ৩০০ কোটি টাকা মুনাফা করেছে। সেখানে দেশের শীর্ষ চারটি ব্যাংক মিলে ৩ হাজার কোটি টাকা মুনাফা করেছে। তা সত্ত্বেও বহুজাতিক ব্যাংকটি শেয়ারবাজারে নেই। তাহলে এখানে কি জনস্বার্থ নেই, মানুষ কি শুধু গ্রাহক হয়েই থাকবে? অন্যান্য দেশে তো তারা তালিকাভুক্ত রয়েছে।

অনুষ্ঠানের শেষের দিকে বহুজাতিক কোম্পানির তালিকাভুক্তি নিয়ে কথা বলেন বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ। তিনি বলেন, ‘বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর শুধু টাকার প্রয়োজনে নয়; বরং মানুষের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে পুঁজিবাজারে আসা উচিত। কর আরোপ বা অন্য কোনো প্রশাসনিক প্রক্রিয়ায় আমরা তাদের আনতে চাই না। আশা করব তারা তাদের দায়িত্বের জায়গা থেকে আসবে।’

দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়ন শেয়ারবাজারমুখী করতে হবে

অনুষ্ঠানে ডিএসইর চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে সুদহার বেশি হওয়ায় শেয়ারবাজার থেকে সবাই টাকা সরিয়ে ব্যাংকিং বা ট্রেজারি উপকরণে বিনিয়োগ করছে। অন্যদিকে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মধ্যে যারা আইপিও বা বন্ডের জন্য আবেদন করছে, তাদের দশটির মধ্যে নয়টিরই আর্থিক প্রতিবেদনে বড় ধরনের অসংগতি রয়েছে। আর্থিক প্রতিবেদনে স্বচ্ছতা যত দিন না আসবে, তত দিন পর্যন্ত বাজার ভালো হবে না।

এ প্রসঙ্গে বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ বলেন, দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নকে কীভাবে ব্যাংক থেকে শেয়ারবাজারমুখী করা যায়, সেটি নিয়ে কাজ চলছে। এ বিষয়ে কাজ করতে চলতি বা পরবর্তী সপ্তাহে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির একটা জয়েন্ট টাস্কফোর্স গঠন করা হবে। একই সঙ্গে বন্ড-সংশ্লিষ্ট নীতিমালা ও ঋণাত্মক ঋণের (নেগেটিভ ইকুইটি) বিষয়েও সংস্কার করা হবে বলে জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার অর্থবিষয়ক বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, শেয়ারবাজারের ঋণাত্মক ঋণের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হবে। এ ক্ষেত্রে ঋণাত্মক ঋণকে বন্ডে রূপান্তর করার একটা পরামর্শ এসেছে। সেটি যাচাই করে দেখা হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ডিএসইতে সাপ্তাহিক দাম কমার শীর্ষে ফারইস্ট ফাইন্যান্স
  • ডিএসইতে সাপ্তাহিক দাম বাড়ার শীর্ষে ব্যাংক এশিয়া পার্পেচুয়াল বন্ড
  • ডিএসইতে সাপ্তাহিক লেনদেনের শীর্ষে লাভেলো আইসক্রিম
  • ডিএসইর পিই রেশিও বেড়েছে ১.৫৩ শতাংশ
  • পুঁজিবাজারে মূলধন বেড়েছে ১৭ হাজার ৫৪২ কোটি টাকা
  • সিগারেট উৎপাদন বাড়াতে ৩০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ বিএটিবিসির
  • শেষ কার্যদিবসে সূচকের উত্থান, বেড়েছে লেনদেন
  • সুবিধা কম, তাই তালিকাভুক্তিতে আগ্রহ নেই বহুজাতিক কোম্পানির