ডিএসইতে সাপ্তাহিক দাম কমার শীর্ষে প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স
Published: 15th, November 2025 GMT
দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে (৯ থেকে ১৩ নভেম্বর) লেনদেনে অংশ নেওয়া কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডগুলোর মধ্যে বিমা খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স পিএলসির শেয়ারের দাম সবচেয়ে বেশি কমেছে। বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ কম থাকায় কোম্পানিটির শেয়ার ডিএসইর সাপ্তাহিক দাম কমার তালিকার শীর্ষে উঠে এসেছে।
শনিবার (১৫ নভেম্বর) ডিএসইর সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনা সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
তথ্য মতে, বিদায়ী সপ্তাহে কোম্পানিটির শেয়ার দর কমেছে ৩৭.
ডিএসইতে সাপ্তাহিক দাম কমার শীর্ষ তালিকায় উঠে আসা অন্যান্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে- ফনিক্স ফাইন্যান্সের ৩২.১৪ শতাংশ, আনোয়ার গ্যালভানাইজিংয়ের ৩১.৩৯ শতাংশ, নূরানী ডাইংয়ের ২৯.৪১ শতাংশ, অ্যাপোল ইস্পাতের ২৮.৫৭ শতাংশ, রিজেন্ট টেক্সটাইলের ২৮.৫৭ শতাংশ, প্রাইম ফাইন্যান্সের ২৭.৭৮ শতাংশ, ফারইস্ট ফাইন্যান্সের ২৭.০৬ শতাংশ, বে-লিজিংয়ের ২৭.০৩ শতাংশ ও লাভেলোর ২৬.৭২ শতাংশ শেয়ার দর কমেছে।
ঢাকা/এনটি/ইভা
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স প ত হ ক দ ম কম র
এছাড়াও পড়ুন:
পাঁচ মাস পর সর্বোচ্চ দরপতন, কমেছে ৯২% কোম্পানির শেয়ারদর
দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বছরের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দরপতন হয়েছে আজ বৃহস্পতিবার। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে এদিন ঢাকার বাজারের প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১২৩ পয়েন্ট বা আড়াই শতাংশের বেশি কমেছে। এর আগে সর্বশেষ চলতি বছরের ৭ মে এই সূচক ১৪৯ পয়েন্ট বা ৩ শতাংশের বেশি কমেছিল।
কয়েক মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ এই দরপতনে ডিএসইএক্স সূচকটি কমে ৪ হাজার ৭০৩ পয়েন্টে নেমে এসেছে। প্রায় পাঁচ মাসের ব্যবধানে এটি ডিএসইএক্সের সর্বনিম্ন অবস্থান। ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, এর আগে সর্বশেষ চলতি বছরের ২৩ জুন ডিএসইএক্স সূচকটি ৪ হাজার ৬৯৫ পয়েন্টের সর্বনিম্ন অবস্থানে ছিল।
বাজারের এই দরপতনের জন্য বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা কয়েকটি কারণের কথা জানান। তাঁরা জানান, সম্প্রতি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত পাঁচ ব্যাংকের শেয়ারের দাম শূন্য ঘোষণা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। তাতে ব্যাংকগুলোর শেয়ারের লেনদেন বন্ধ করে দেওয়া হয়। শেয়ারের দাম শূন্য ঘোষণা করায় এসব শেয়ারের বিনিয়োগকারীরা কিছুই পাবেন না। ফলে এ নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে হতাশা দেখা দেয়। এরপর পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) করা মার্জিন ঋণ–সংক্রান্ত নতুন বিধানের বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব রয়েছে বাজারে। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতা। কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের অনলাইনে ঘোষিত ‘লকডাউন’ ঘিরে গতকাল জনমনে একধরনের আতঙ্ক বিরাজ করে। এ কারণে যান চলাচল থেকে শুরু করে মানুষের চলাচলও সীমিত। এ কারণে বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউসে বিনিয়োগকারীর উপস্থিতিও ছিল কম; যার প্রভাবও বাজারে পড়েছে।
বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা আরও বলেন, এমনিতে বেশ কিছুদিন ধরে বাজারে মন্দাভাব চলছে। তাতে ধারাবাহিকভাবেই সূচক কমছে। এর মধ্যে ৬ নভেম্বর বিএসইসি মার্জিন ঋণসংক্রান্ত নতুন বিধিমালা প্রকাশ করে। তাতে শেয়ারের বিপরীতে ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে নতুন করে নানা শর্ত যুক্ত করা হয়। পাশাপাশি এরই মধ্যে বিতরণ করা ঋণ হিসাবে যেসব শেয়ার ঋণ অযোগ্য হয়ে গেছে, সেসব শেয়ার ছয় মাসের মধ্যে বিক্রি করে দেওয়ার শর্তারোপ করা হয়। এ ছাড়া নতুন করে ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রেও নানা ধরনের কঠোরতা আরোপ করা হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে বাজারে ঋণ করে যাঁরা বিনিয়োগ করেন এবং যাঁরা বিনিয়োগকারীদের ঋণ প্রদান করেন, তাঁদের মধ্যে শেয়ার বিক্রির প্রবণতা বেড়ে যায়। যার প্রভাব কয়েক দিন ধরে বাজারে পড়ছে।
সাম্প্রতিক কয়েকটি সিদ্ধান্ত পুঁজিবাজারকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করেছে। পাঁচ ব্যাংকের শেয়ারের দাম শূন্য ঘোষণা, মার্জিন ঋণসংক্রান্ত নতুন বিধিমালার নানা শর্ত ও সর্বশেষ যুক্ত হয়েছে রাজনৈতিক অস্থিরতা—শাকিল রিজভী, পরিচালক, ডিএসইডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, গত ১০ কার্যদিবসে ডিএসইএক্স সূচকটি ৪১৯ পয়েন্ট বা ৮ শতাংশের বেশি কমেছে। গত ৩০ অক্টোবর ডিএসইএক্স সূচকটি ৫ হাজার ১২২ পয়েন্টের অবস্থানে ছিল। আজ তা ৪ হাজার ৭০০ পয়েন্টের ঘরে নেমে আসে। এদিন ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৮৪ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৩৫২টি বা ৯২ শতাংশের দরপতন হয়েছে। দাম বেড়েছে ১৫টির বা প্রায় ৪ শতাংশের আর অপরিবর্তিত ছিল ১৭টির বা প্রায় ৪ শতাংশের।
জানতে চাইলে ডিএসইর পরিচালক শাকিল রিজভী প্রথম আলোকে বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে একসঙ্গে কয়েকটি সিদ্ধান্ত পুঁজিবাজারকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করেছে। প্রথমত পাঁচ ব্যাংকের শেয়ারের দাম শূন্য ঘোষণা করা, এরপর মার্জিন ঋণসংক্রান্ত নতুন বিধিমালার নানা শর্ত বাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। এর সঙ্গে সর্বশেষ যুক্ত হয়েছে রাজনৈতিক অস্থিরতা। পুঁজিবাজার যেহেতু খুবই সংবেদনশীল, তাই বড় বড় এ সিদ্ধান্তে বাজার পড়বে—এটাই স্বাভাবিক। এ অবস্থান থেকে উত্তরণ ঘটাতে হলে পাঁচ ব্যাংকের শেয়ারধারীদের কী হবে, সেটি সরকার ও বিএসইসির পক্ষ থেকে পরিষ্কার করে জানিয়ে দিতে হবে। আর মার্জিন ঋণ নিয়ে যেসব সমস্যা দেখা দিয়েছে, সেগুলোর বাস্তবভিত্তিক সমাধান করতে হবে। তাহলে বাজার আবার স্বাভাবিক ধারায় ফিরতে পারে। যদিও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার বিষয়ে কারও কিছু করণীয় নেই।
শেয়ারবাজারের শীর্ষস্থানীয় ব্রোকারেজ হাউস লঙ্কাবাংলা সিকিউরিটিজের তথ্য অনুযায়ী, ঢাকার বাজারে আজ সূচকের পতনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা ছিল ভালো মৌলভিত্তির কোম্পানির। এসব কোম্পানির মধ্যে রয়েছে ব্র্যাক ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, বেক্সিমকো ফার্মা, লাফার্জহোলসিম সিমেন্ট, বীকন ফার্মা, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, রেনাটা, রবি আজিয়াটা, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন বা বিএসসি ও লাভেলো আইসক্রিম। এই ১০ কোম্পানির শেয়ারের দরপতনেই ডিএসইএক্স সূচকটি কমেছে প্রায় ৩৯ পয়েন্ট। দরপতনের এদিনে ঢাকার বাজারে খাতভিত্তিক লেনদেনের শীর্ষে ছিল প্রকৌশল খাতের কোম্পানি। ঢাকার বাজারে মোট লেনদেনের মধ্যে ২৪৩ কোটি টাকায় ছিল এ খাতের কোম্পানিগুলোর লেনদেন।
ঢাকার বাজারে আজ দিন শেষে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৩৮৩ কোটি টাকা, যা আগের দিনের চেয়ে ৯৩ কোটি টাকা বেশি। গতকাল বুধবার ঢাকার বাজারে লেনদেন হয়েছিল ২৯০ কোটি টাকার। গত ২৩ জুনের পর বুধবারই ঢাকার বাজারে লেনদেন সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমেছিল। সেখান থেকে আজ লেনদেনের কিছুটা উন্নতি হয়েছে।