আগে জাতীয় নির্বাচন হতে হবে, স্থানীয় নির্বাচন হবে না। নির্বাচিত সরকার স্থানীয় নির্বাচন আয়োজন করবে। ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে এমন মন্তব্য করেছে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট (এনপিপি)।

আজ শনিবার জাতীয় সংসদের এলডি হলে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে এ কথা বলেন এনপিপির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ। বৈঠকে জোটের ১১ জন নেতা অংশ নিয়েছেন। তাঁদের সমন্বয়ক হিসেবে রয়েছেন ফরিদুজ্জামান ফরহাদ।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ১৬৬ প্রস্তাবের মধ্যে এনপিপি ১১২টায় একমত, ২৬টায় একমত নয় এবং ২৮টায় আংশিক একমত হয়েছে জানান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ।

ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচন হওয়ার পর সেই পার্লামেন্ট স্থানীয় নির্বাচন করবে।’ জাতীয় নির্বাচন ও স্থানীয় নির্বাচন একই সঙ্গে করা যায় কি না, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনই বলেছে, বাংলাদেশে একসঙ্গে জাতীয় নির্বাচন ও স্থানীয় নির্বাচন সম্ভব না।’

সংলাপে মানবিক করিডর নিয়ে অসন্তুষ্টির কথা জানিয়েছে এনপিপি। এ বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করেনি।

ফরিদুজ্জামান ফরহাদ আরও বলেন, ‘দেশের সঙ্গে একটা বৈদেশিক চুক্তি হতে হলে একটা নির্বাচিত সরকারের পার্লামেন্ট সরকারকে করতে হবে। এটা অনির্বাচিত সরকারের পক্ষে সম্ভব না।’

ফরিদুজ্জামান আরও বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি নির্বাচন সংসদ সদস্য দ্বারা হতে হবে। সংসদ সদস্যের বাইরে ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ ও স্থানীয় সংসদ নির্বাচন, এটা একসঙ্গে করা যাবে না।’

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে এনপিপির বৈঠক শেষে ফরিদুজ্জামান আরও বলেন, বিচার বিভাগের প্রধানকে বয়সের জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে নিয়োগ দিতে হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ এক মাস বাড়িয়ে তিন থেকে চার মাস করা দরকার। বৈঠকের জোটের সদস্যরা পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রতি গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানান।

সংলাপের সূচনা বক্তব্যে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, বিভিন্ন রকম আদর্শিক অবস্থান থেকে তাদের মতামত দিয়েছে। আমরা আশা করি জাতীয় স্বার্থে, রাষ্ট্র পুনর্গঠনের প্রশ্নে, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য প্রতিটা দল ও জোট কিছুটা ছাড় দিতে প্রস্তুত থাকবে। কারণ, আমরা সবাই মিলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র পুনর্গঠন, বিনির্মাণের জন্য সবাই সমবেত হয়েছি। আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’

আরও পড়ুনআশা করি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় রাজনৈতিক দলগুলো ছাড় দেবে: আলী রীয়াজ৪ ঘণ্টা আগে

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় এই বৈঠক উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বদিউল আলম মজুমদার, ইফতেখারুজ্জামান।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সরক র র সদস য এনপ প

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই সনদের বাস্তবায়নে দেরি হলে জনগণ আবারও রাস্তায় নামবে: জামায়াত নেতা রফিকুল

জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি এখন দেশের ১৮ কোটি মানুষের দাবি বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, ‘এই সনদ নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে জারি করা হোক এবং প্রয়োজনে গণভোটের আয়োজন করা হোক। তবে এই গণভোট অবশ্যই জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই হতে হবে, নির্বাচনের পরে নয়।’

আজ বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে জুলাই সনদের বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে তৃতীয় ধাপে তৃতীয় দিনের আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন রফিকুল ইসলাম খান। এ সময় উপস্থিত ছিলে জামায়াতের আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ।

জুলাই সনদের বাস্তবায়নে দেরি হলে জনগণ স্বাভাবিকভাবেই আবারও রাস্তায় নেমে আসবে বলে মন্তব্য করেন রফিকুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, ১৯৯০ সালের গণ-অভ্যুত্থানের পর সে সময়কার দলগুলোর ঐকমত্য থাকা সত্ত্বেও ক্ষমতায় থাকা দলগুলো সেটি (তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা) যথাসময়ে বাস্তবায়ন করেনি। পরে আন্দোলনের মাধ্যমেই তা সংবিধানে যুক্ত হয়।

জামায়াতের এই নেতা আরও বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল হয়েছিল বিচারপতি খায়রুল হকের রায়ের মাধ্যমে। আদালতের ওপর প্রভাব বিস্তার করে এ রায় দেওয়ানো হয়েছিল। তাই বিচার বিভাগকে আবার বিতর্কের মুখে না ফেলে সংবিধানিক আদেশের মাধ্যমে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পক্ষে জামায়াত।

জামায়াতের আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, ঐকমত্য কমিশন একটি বিশেষজ্ঞ কমিটির মাধ্যমে চারটি বিকল্প নিয়ে কাজ করেছে, যার মধ্যে কমিশন সংবিধানিক আদেশের প্রস্তাবটি সমর্থন করেছে। এই আদেশের মাধ্যমে জুলাই সনদের ২২টি আর্টিকেল বাস্তবায়িত হতে পারে। এটি আইনিভাবে সবচেয়ে শক্তিশালী ভিত্তি।

এক প্রশ্নের জবাবে হামিদুর রহমান বলেন, সংবিধানের মৌলিক কাঠামো পরিবর্তন করার এখতিয়ার সংসদের নেই, এবং এ ধরনের পরিবর্তন করতে হলে অবশ্যই গণভোটের প্রয়োজন হয়।

জামায়াতে ইসলামী জনগণের অভিপ্রায়কে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয় উল্লেখ করে জামায়াতের এ সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, জনগণের ইচ্ছা ও আকাঙ্ক্ষাই হচ্ছে দেশের সর্বোচ্চ আইন।

জুলাই সনদের যে আদর্শ ও চেতনা, তা বাস্তবায়ন হওয়া উচিত এবং যারা এই আদর্শের পথে হাঁটবে না, জনগণ তাদের ব্যাপারে সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে বলে মনে করেন হামিদুর রহমান আযাদ। উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ডাকসু নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়লাভ এটি প্রমাণ করে যে এ দেশের তরুণসমাজ ও জনগণ নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থা চায় এবং জুলাই বিপ্লবের যোদ্ধাদের পক্ষেই রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঐকমত্যের ভিত্তিতে সুষ্ঠু নির্বাচনের আশা
  • আমরা আশাবাদী একটা ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারব: বদিউল আলম মজুমদার
  • ঐকমত্যের জন্য আর কতকাল অপেক্ষা
  • জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি এখন ১৮ কোটি মানুষের দাবি: জামায়াত
  • সাংবিধানিক আদেশ ও গণভোটের সুপারিশ, একমত নয় দলগুলো
  • ‘সংবিধান আদেশ’ জারির সুপারিশ করতে পারে কমিশন: আলী রীয়াজ
  • জুলাই সনদের বাস্তবায়নে দেরি হলে জনগণ আবারও রাস্তায় নামবে: জামায়াত নেতা রফিকুল
  • কমিটি গঠন, প্রতিবেদন না আসা পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত 
  • বর্ধিত মেয়াদের আগেই জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি চূড়ান্ত করতে চায় কমিশন: আলী রীয়াজ
  • বিএনপি নির্বাচনমুখী কর্মসূচিতে যাবে