নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ভারতের বিমানবাহিনী প্রধানের সাক্ষাৎ
Published: 4th, May 2025 GMT
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন দেশটির বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল এ পি সিং। পাকিস্তানের সঙ্গে অব্যাহত উত্তেজনার মধ্যে আজ রোববার এই সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে ২২ এপ্রিল পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যাঁদের বেশির ভাগই পর্যটক। এ হামলার পেছনে পাকিস্তানের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ করে আসছে নয়াদিল্লি। তবে এ অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছে পাকিস্তান। ওই হামলার পর থেকে পারমাণবিক শক্তিধর দুই প্রতিবেশীর মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা শুরু হয়।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে দেশটির বিমানবাহিনী প্রধানের এই বৈঠকের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে। তবে বৈঠকের বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানায়নি।
এর আগে গতকাল শনিবার প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল দিনেশ কে ত্রিপাঠী। এ সময় আরব সাগরের গুরুত্বপূর্ণ সমুদ্রপথের সার্বিক পরিস্থিতির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন নৌবাহিনী প্রধান।
এর আগে সফররত অ্যাঙ্গোলার প্রেসিডেন্ট জোয়াও লরেনচোর সঙ্গে শনিবার বৈঠকের পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, পেহেলগাম হামলার জন্য দায়ী সন্ত্রাসীদের এবং তাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে ‘কঠোর ও চূড়ান্ত’ পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে ভারত অঙ্গীকারবদ্ধ।
পেহেলগামে হামলার এক সপ্তাহের মাথায় ২৯ এপ্রিল ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেন। বৈঠকে ভারতের সশস্ত্র বাহিনীর সক্ষমতার ওপর পূর্ণ আস্থার কথা জানান তিনি। নরেন্দ্র মোদি বলেছিলেন, ভারতের পক্ষ থেকে জবাব দেওয়ার সময়, লক্ষ্যবস্তু নির্ধারণ এবং কোন প্রক্রিয়ায় জবাব দেওয়া হবে, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে সশস্ত্র বাহিনীর পূর্ণ স্বাধীনতা রয়েছে।
নরেন্দ্র মোদির ওই বক্তব্যের পর পাকিস্তানে যেকোনো সময় ভারতের হামলার আশঙ্কা করছেন কেউ কেউ। ইতিমধ্যে দুই দেশের মধ্যে সীমান্তে গোলাগুলি, নাগরিকদের ভিসা বাতিল, চুক্তি স্থগিত, কূটনীতিক বহিষ্কারসহ পাল্টাপাল্টি নানা পদক্ষেপ অব্যাহত রয়েছে।
আরও পড়ুনভারত–পাকিস্তানের উত্তেজনার মধ্যে কেন বাংকার নির্মাণ ও সংস্কারে ব্যস্ত কাশ্মীরের মানুষ০৩ মে ২০২৫আরও পড়ুনপাকিস্তানের ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা উত্তেজনা আরও বাড়াল১৭ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
আমরা ফিলিস্তিন টাইম জোনে ঢুকেছি: শেষ জাহাজ আটকের আগে ভিডিও বার্তায় শহিদুল
ফিলিস্তিনের গাজা অভিমুখে যাত্রা করা ত্রাণবাহী নৌবহর ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’র কাছ থেকে আলাদা অবস্থানে আছেন বলে জানিয়েছেন দৃকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও আলোকচিত্রী শহিদুল আলম। আজ শুক্রবার দুপুরে ফেসবুকে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় তিনি এ কথা বলেছেন।
তবে শহিদুল আলমের এই ভিডিওবার্তা ফেসবুকে দেওয়ার কিছুক্ষণ পর আজ সুমুদ ফ্লোটিলা’র সর্বশেষ জাহাজও আটক করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।
জাহাজ আটক হওয়ার আগে গাজামুখী নৌযান থেকে দেওয়া ভিডিও বার্তায় শহিদুল আলম বলেন, ‘আজ ৩ অক্টোবর ২০২৫। দেখতেই পাচ্ছেন, ঝকঝকা রোদ। আজ আমরা ফিলিস্তিন টাইম জোনে এসেছি। সুমুদ ফ্লোটিলায় যারা গিয়েছিলেন, তাঁরা ভিন্নভাবে গিয়েছিলেন। আমরা আলাদাভাবে যাচ্ছি। এভাবেই আমাদের পরিকল্পনা ছিল যে, ওদের ওপর কিছু হলেও আমরা যেন এগিয়ে যেতে পারি। জানতে পেরেছি, ইসরায়েল তাদের (সুমুদ ফ্লোটিলা) সব জাহাজ আটক করেছে।’
অনেক বড় জাহাজ নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন জানিয়ে শহিদুল আলম বলেন, ‘আমাদেরটা সবচেয়ে বড় জাহাজ। আমাদের সঙ্গে আরও আটটি ছোট নৌকা পাড়ি দিয়েছিল। তারা আমাদের একটু আগে পাড়ি দিয়েছিল। আমরাসহ এই মুহুর্তে এই নয়টি যানবাহন মুক্ত আছে। আমরা আজকে ফিলিস্তিনি টাইম জোনে এসেছি। এখনো দূরত্ব আছে। তবে আজ আমরা এই আটটি ছোট নৌকাকে পার হয়ে যাব। এরপর থেকে আমাদের এই জাহাজটিই সবচেয়ে আগে থাকবে। এতে বোঝাই যাচ্ছে, আক্রোশটা আমাদের ওপরই পড়বে। কিন্তু আমরা একেবারেই প্রতিজ্ঞাবদ্ধ, আমরা একেবারেই গাজা পর্যন্ত যাব এবং কোনো বাধাই গ্রহণ করব না।’
ত্রাণ নয়, অবরোধ ভাঙার উদ্দেশ্য নিয়ে গাজার দিকে যাচ্ছেন বলে উল্লেখ করেছেন শহিদুল আলম। তিনি বলেন, ‘এটা বলা প্রয়োজন, সুমুদ ফ্লোটিলায় যে নৌকাগুলো ছিল, তাদের কিন্তু দায়িত্ব ছিল ত্রাণ নিয়ে যাওয়ার। আমরা কিন্তু ত্রাণের জন্য যাচ্ছি না। আমরা একটা অবৈধ অবরোধকে ভাঙব, সেই উদ্দেশ্য নিয়ে যাচ্ছি।’
শহিদুল আলম বলেন, ‘এই নৌকাতে অনেক সাংবাদিক আছেন, চিকিৎসক আছেন। সঙ্গে অন্য কর্মীরাও আছেন। কিন্তু আমরা ত্রাণ দেওয়ার অজুহাতে যাচ্ছি তা না। আমরা লড়াই করতে যাচ্ছি, ফিলিস্তিনে আমাদের থাকার–যাওয়ার অধিকার আছে। ইসরায়েল যত মানুষ খুন করেছে এবং যত সাংবাদিক ও যত চিকিৎসক খুন করেছে, সেটার প্রতিবাদ আমরা জানাব।’
শহিদুল আলম আরও বলেন, ‘গত রাতেই মেডিসিন সান ফ্রন্টিয়ার্সের (এমএএফ) ১৪ জন চিকিৎসককে খুন করা হয়েছে। আমরা দেখব, ফ্রান্স সেটার ক্ষেত্রে কী করে। এ পর্যন্ত তারা তেমন কিছুই করেনি, মিষ্টি কথা বলা ছাড়া। এখন কথার সময় পেরিয়ে গেছে। এখন লড়াইয়ের সময়, এখন কাজ করার সময়। আমরা সেটাই করছি নাগরিক হিসেবে।’
বাংলাদেশি এই আলোকচিত্রী বলেন, ‘আমরা যেটা করতে পারি, যেহেতু এই দেশগুলোর নেতা–নেত্রীরা অনেক ক্ষেত্রেই বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। সে ক্ষেত্রে নাগরিক হিসেবে আমরা যেটা করতে পারি, সেটাই আমরা করতে চাইব। আপনাদের ভালোবাসাই আমাদের অনুপ্রেরণা।’
শহিদুল আলম বলেন, ‘যেমনটা দেখা যাচ্ছে, আজ সকালে সমুদ্র বেশ শান্ত। এটা অপ্রত্যাশিত, কারণ মুহূর্তের মধ্যেই এটা বদলে যেতে পারে। গতকাল খুব খারাপ অবস্থা ছিল। আমি একটু অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম। তবে এখন পুরো চাঙা, লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত।’
‘আমরা জয়ী হব, ফিলিস্তিন মুক্ত হবে’ জানিয়ে ভিডিওর ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন, তাঁদের জাহাজে ৯৬ জন মানুষ আছেন। এরঁ মধ্যে ৮২ জন গণমাধ্যম ও চিকিৎসা পেশাজীবী। এ ছাড়া আয়োজক, ফ্লোটিলা কো-অর্ডিনেশন কমিটির সদস্য ও জাহাজের ক্রুরা আছেন।
আরও পড়ুনফ্লোটিলা আটক আন্তর্জাতিক ‘জলদস্যুতা’, বিশ্বজুড়ে ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ: দেখুন ছবিতে২ ঘণ্টা আগে