অভিযুক্ত হিটু বললেন, ‘হামিদা আর আকাশকে ধরেন সত্য বেরিয়ে আসবে’
Published: 5th, May 2025 GMT
মাগুরার আলোচিত ৮ বছরের শিশু আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় ষষ্ঠ দিনের মতো সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। আজ সোমবার সকাল ১১টায় জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম জাহিদ হাসানের আদালতে সাক্ষ্য নেওয়া হয়। এদিন চার জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। এর আগে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে কারাগার থেকে আসামিদের আদালতে হাজির করা হয়।
এদিন মামলার প্রধান আসামি হিটু শেখ আদালত থেকে বের হওয়ার সময় সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে বলেন, সজীবের (তার ছেলে) স্ত্রী হামিদার সঙ্গে আকাশ নামে এক যুবকের অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে। ওই জেরে এ হত্যাকাণ্ড। তাদের ধরেন; তাহলে সব সত্য ঘটনা বেরিয়ে আসবে। এ সময় তিনি মামলার সঠিক তদন্ত দাবি করেন।
যদিও হিটু শেখ ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দেওয়ার সময় এ ঘটনার সঙ্গে তিনি একাই জড়িত বলে জানান।
বাদীপক্ষের আইনজীবী ও নারী শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের পিপি মনিরুল ইসলাম মুকুল জানান, সোমবার চারজনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। তারা হচ্ছেন- মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো.
আদালতে সাক্ষ্য দেওয়া সবাই ধর্ষণের ফলে আছিয়ার মৃত্যু হয়েছে বলে সাক্ষ্য দেন। সোমবারসহ গত ৬ কার্যদিবস একটানা সাক্ষ্যগ্রহণ চলেছে। এনিয়ে মোট ২৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হলো। এ মামলায় মোট ৩৭ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হবে। মঙ্গলবার ফরেনসিক বিভাগের দুইজন চিকিৎসকের সাক্ষ্যগ্রহণের দিন রয়েছে।
প্রসঙ্গত, বোনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে ৬ মার্চ রাতে মাগুরা সদরের নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের শ্বশুর হিটু শেখ ৮ বছরের শিশু আছিয়াকে ধর্ষণ করে। পরে তাকে মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা সিমএমএইচে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৩ মার্চ শিশুটি মারা যায়।
এ ঘটনায় শিশু আছিয়ার মা আয়েশা আক্তার আছিয়ার বোনের শ্বশুর হিটু শেখ, ভগ্নীপতি সজীব শেখ, তার ভাই রাতুল শেখ ও হিটু শেখের স্ত্রী রোকেয়া বেগমের নামে মাগুরা সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশ মামলায় অভিযুক্ত সব আসামিদের গ্রেপ্তার করে ও আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ চার আসামির সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করেন। বিচারক প্রধান আসামী হিটু শেখকে ৭ দিন ও অপর তিন আসামীর ৫ দিনের রিমান্ড প্রদান করেন। রিমান্ডে প্রধান আসামি হিটু শেখ ধর্ষণের কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জন র স ক ষ য
এছাড়াও পড়ুন:
দিনাজপুরে টাকা চুরির অভিযোগ তোলায় যুবককে পিটিয়ে হত্যা
দিনাজপুরের বিরামপুরে টাকা চুরির অভিযোগ তোলায় সাজেদুল ইসলাম (৩৮) নামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে উপজেলার কাটলা ইউনিয়নের দক্ষিণ দাউদপুর গ্রামের জোলাপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত সাজেদুল ইসলাম ওই গ্রামের মৃত অছির উদ্দিনের ছেলে। তিনি মৌসুমি ফল ব্যবসায়ী ছিলেন।
অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন একই গ্রামের রায়হান কবির (২২) ও তাঁর চাচাতো ভাই নুরুন্নবী ইসলাম (২৩)। ঘটনার পর তাঁরা পলাতক।
নিহত ব্যক্তির পরিবার ও প্রতিবেশীদের বরাতে জানা যায়, গতকাল বিকেলে রায়হান কবির সাজেদুলের কাছে টাকা ধার চান। সাজেদুল টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানান। কিছুক্ষণ পর বাড়িতে রাখা সাজেদুলের গচ্ছিত ছয় হাজার টাকা হারিয়ে যায়। তিনি এ ঘটনায় রায়হান কবিরকে জিজ্ঞেস করলে প্রথমে অস্বীকার করেন। এ নিয়ে বাগ্বিতণ্ডার পর রায়হান তাঁর চাচাতো ভাই নুরুন্নবীকে ডেকে আনেন। পরে দুজনে মিলে বাঁশের লাঠি দিয়ে সাজেদুলকে এলোপাতাড়ি মারধর করেন। মারধরের একপর্যায়ে তাঁরা সাজেদুলের বুকে ও অণ্ডকোষে লাথি মারেন। এতে গুরুতর আহত হয়ে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এ সময় বাধা দিতে গেলে সাজেদুলের মাকেও মারধর করা হয়। পরে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় পরিবার তাঁকে বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানকার চিকিৎসকেরা অবস্থার অবনতি দেখে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। কিন্তু পথে ফুলবাড়ি এলাকায় তাঁর মৃত্যু হয়।
বিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমতাজুল হক বলেন, ‘টাকা চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্ত দুজন পলাতক। তাঁদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’