রূপগঞ্জে কারখানায় বিস্ফোরণ: দগ্ধ ২ নিরাপত্তাকর্মীর মৃত্যু
Published: 5th, May 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে মঞ্জু টেক্সটাইল কারখানার গ্যাসের লাইজার বিস্ফোরণে দগ্ধ দুই নিরাপত্তা কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (৫ মে) সকালে ও রবিবার (৪ মে) দিবাগত রাতে ঢাকার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়।
দুই নিরাপত্তা কর্মী হলেন, লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার কালিকাপুর গ্রামের আব্দুল হান্নান (৫০) এবং রূপগঞ্জ উপজেলার রূপসী এলাকার কবির হোসেন (৪৫)। তারা দুই জনই মঞ্জু টেক্সটাইল মিলের নিরাপত্তা কর্মী ছিলেন।
জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের চিকিৎসক শাওন বিন রহমান মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আরো পড়ুন:
হাসপাতালে তত্ত্বাবধায়ককে মারধরের চেষ্টা চিকিৎসকের
চিকিৎসাদলকে সংবর্ধনা
বিস্ফোরণের পর ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল আরেফিন জানান, ১ মে শ্রমিক দিবসে কারখানাগুলোর উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ থাকায় উচ্চ চাপে গ্যাসের মিটার বাস্ট হয়। সেখান থেকে আগুন ধরে যায়। এতে চার নিরাপত্তাকর্মী দগ্ধ হন। বিস্ফোরণের পর ফায়ার সার্ভিস পৌঁছানোর আগেই কারখানার লোকজনের সহায়তায় স্থানীয়রা আগুন নিভিয়ে ফেলে।
রূপগঞ্জ থানার ওসি লিয়াকত আলী জানান, কারখানার কেউ মামলা করেননি। এ ঘটনার পর পুলিশের পক্ষ থেকে সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। নিহতদের পরিবার চাইলে মামলা নেওয়া হবে।
জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের চিকিৎসক শাওন বিন রহমান জানান, শরীরের ৫৩ শতাংশ দগ্ধ অবস্থায় বার্ন ইনস্টিটিউটের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন কবির হোসেন। সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তিনি মারা যান। এর আগের দিন রাত ২টা ৪০ মিনিটে আইসিইউতে মারা যান আব্দুল হান্নান। তার শরীরের ৪০ শতাংশ দগ্ধ ছিল।
তিনি আরো জানান, সাইফুল ইসলাম (৩২) নামে আরো একজন চিকিৎসাধীন আছেন। তার শরীরের ৩৪ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে।
গত ১ মে সকালে মঞ্জু টেক্সটাইল বন্ধ থাকা অবস্থায় গ্যাসের অতিরিক্ত চাপে মিটার বিস্ফোরণের পর আগুন ধরে যায়। এতে তিন নিরাপত্তা কর্মী গুরুতর আহত হয়।
ঢাকা/অনিক/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন হত আগ ন র পগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে
বাংলাদেশে বৈদেশিক প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ (এফডিআই) গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী এক বছরে ১৯ দশমিক ১৩ শতাংশ বেড়েছে। এর মধ্যে দিয়ে দেশে বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশের প্রতি আন্তর্জাতিক আস্থার প্রতিফলন দেখা গেছে।
বিশ্বব্যাংকের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, সম্প্রতি যেসব দেশে গণঅভ্যুত্থান ঘটেছে, সেসব দেশে পরবর্তী এক বছরে এফডিআই উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। এর মধ্যে শ্রীলঙ্কায় ২০২২ সালের পর এফডিআই কমেছে ১৯.৪৯ শতাংশ, চিলিতে ২০১৯ সালের পর কমেছে ১৫.৬৮ শতাংশ, সুদানে ২০২১ সালের পর ২৭.৬০ শতাংশ, ইউক্রেনে ২০১৪ সালের পর ৮১.২১ শতাংশ, মিশরে ২০১১ সালের পর ১০৭.৫৫ শতাংশ এবং ইন্দোনেশিয়ায় ১৯৯৮ সালের পর ১৫১.৪৯ শতাংশ কমেছে। এই ধারাবাহিক হ্রাসের মধ্যে বাংলাদেশে এফডিআইর ১৯.১৩ শতাংশ বৃদ্ধির চিত্র বিশেষভাবে নজরকাড়া।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেছেন, “বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় গুণ হলো—শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও অর্থনীতিকে পুনরায় চালু করার অদ্ভুত ক্ষমতা। এই পরিসংখ্যান তার দারুন একটা প্রতিফলন। সাধারণত, গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে বিদেশি বিনিয়োগ কমে যায়, কিন্তু আমরা উল্টা দেখছি। সঠিক নীতি নির্ধারণ, বাংলাদেশ ব্যাংক, এনবিআরসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার আন্তরিকতা এবং প্রাইভেট সেক্টরের অদম্য স্পৃহা কারণে এটি সম্ভব হয়েছে। আমরা সব সময় বিনিয়োগকারীদের সাহায্য করার চেষ্টা করেছি। সব সমস্যার সমাধান হয়নি, তবে সদিচ্ছার কোনো ত্রুটি ছিল না। শিগগিই সারা বছরের একটি আমলনামা (রিপোর্ট কার্ড) প্রকাশ করা হবে।”
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে বিদেশি বিনিয়োগ ছিল ৪৮৮ দশমিক ৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, ২০২২ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৬৭০ দশমিক ৭ মিলিয়ন ডলারে। ২০২৩ সালে বিনিয়োগের পরিমাণ হয় ৯২৪ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার, তবে ২০২৪ সালে কিছুটা কমে দাঁড়ায় ৬৭৬ দশমিক ৬ মিলিয়ন ডলারে। ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে বিদেশি বিনিয়োগ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯২ দশমিক ৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে।
অর্থনীতিবিদদের মতে, বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে এই ধারা বজায় থাকা অত্যন্ত ইতিবাচক। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, দীর্ঘমেয়াদি নীতি সহায়তা ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ ভবিষ্যতে আরো বড় পরিসরে বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে পারবে বলে মনে করছেন তারা।
ঢাকা/নাজমুল/রফিক