আলোচিত কন্টেন্ট ক্রিয়েটর আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলমের বিরুদ্ধে ধর্ষণসহ মারধর করে গর্ভপাত ঘটানোর অভিযোগে মামলা করেছেন এক নারী। মামলায় হিরো আলমসহ ছয়জনকে আসামি করা হয়েছে। রবিবার (৪ মে) বগুড়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালত-১ এ তিনি মামলা করেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন, হিরো আলমের মেয়ে আলো বেগম, ব্যক্তিগত সহকারী আল আমিন, মালেক, স্ত্রী জেরিন এবং আহসান হাবাবী সেলিম। মামলার পর আদালতের বিচারক মো.
আদালতে দায়েরকৃত মামলায় বাদির অভিযোগে বলা হয়েছে, ওই নারীকে অভিনয়ের সুযোগ দেয়ার আশ্বাস দিলে তিনি হিরো আলমের সঙ্গে ওঠাবসা শুরু করেন। এরপর এক সময় হিরো আলম তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করেন। এর মধ্যে মৌলভী ডেকে এনে কবুল পড়িয়ে বিভিন্ন জায়গায় বাসা ভাড়া নিয়ে তারা সংসার করতে থাকেন। এরই মধ্যে শর্ট ফ্লিম তৈরির জন্য তার কাছ থেকে হিরো আলম ১৫ লাখ টাকা ধার নেন। পরে বিয়ের কাবিনের জন্য চাপ দিলে হিরো আলম গত ১৮ এপ্রিল ওই নারীকে বগুড়ার বাড়িতে নিয়ে আসেন এবং তাকে তার গর্ভের সন্তান নষ্ট করার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। কিন্তু ওই নারী গর্ভের সন্তান নষ্ট করতে রাজি না হলে অন্য আসামিরা গত ২১ এপ্রিল তাকে মারধর করলে রক্তক্ষরণ শুরু হয়। এরপর ওই দিন তাকে বগুড়া শহরের একটি ক্লিনিকে ভর্তি করা হলে তার গর্ভের সন্তান নষ্ট হয়। তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২৪ এপ্রিল ভর্তি করা হলে সেখানে ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত চিকিৎসা নেন।
আরো পড়ুন:
হাসনাতের উপর হামলা: থানায় হত্যাচেষ্টা মামলা
ঝিনাইদহে মাদক মামলায় গ্রেপ্তার দম্পতি আদালতে
এ বিষয়ে হিরো আলম বলেন, ‘‘মামলার বিষয়ে আমি এখনো জানি না। তবে করলে করতে পারে। রিয়া চক্রান্ত করে করাতে পারেন। যেহেতু রিয়াকে আমি ডিভোর্স দিয়েছি, হয়ত তিনি চাচ্ছেন এরকম মামলা দিয়ে আমাকে আটকাতে। এ সব বিষয়ে কথা বলতে আমি আপনাদের খুব শিগগির ডাকবো।’’
বগুড়া পিবিআইর ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক জাহিদ হোসেন জানান, মামলার কাগজপত্র এখনো তাদের কাছে আসেনি। আগামীকাল এ বিষয়ে খোঁজ নেবেন।
ঢাকা/এনাম/বকুল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন য আলম র
এছাড়াও পড়ুন:
চাকরির আশায় গিয়ে রণাঙ্গনে নাজির, পরিবারে উদ্বেগ
প্যাকেজিং কোম্পানিতে চাকরির আশ্বাসে ১২ লাখ টাকায় রাশিয়ায় যান টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার নাজির উদ্দিন (৩৭)। প্রথম কিছুদিন সব ঠিকই ছিল। কিন্তু কয়েক দিন পর তাঁকে পাঠানো হয় সামরিক প্রশিক্ষণে। এরপর রণাঙ্গনে। এখন ইউক্রেনের বিরুদ্ধে ভারী অস্ত্র হাতে সম্মুখযুদ্ধে নাজির। দুই সপ্তাহের বেশি সময় পরিবারের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ নেই। এই পরিস্থিতিতে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় দিন কাটছে নাজিরের মা, বাবা ও স্ত্রীর।
ঘাটাইলের দীঘলকান্দি ইউনিয়নের কুরমুশী গ্রামের ফয়েজ উদ্দিন ও নূরজাহান বেগম দম্পতির একমাত্র সন্তান নাজির উদ্দিন। তাঁর স্ত্রী ও তিন বছরের কন্যাসন্তান রয়েছে।
পারিবারিক সূত্র জানায়, সংসারে সচ্ছলতা আনতে ২০১৭ সালে ইরাকে গিয়েছিলেন নাজির। তিন বছর সেখানে থেকে দেশে ফিরে ব্যবসা শুরু করেন; কিন্তু সফল হননি। পরে আবার বিদেশে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। যোগাযোগ করেন ঢাকার মিরপুর এলাকার একটি জনশক্তি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে। ওই প্রতিষ্ঠানের মামুন মিয়া নামের এক ব্যক্তির মাধ্যমে রাশিয়া যাওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত হয়। এ জন্য গুনতে হয় ১২ লাখ ২০ হাজার টাকা।
ফয়েজ উদ্দিন বলেন, ‘চড়া সুদে ১২ লাখ টাকা ঋণ করে ২০২৪ সালের ১৫ ডিসেম্বর আমার ছেলেকে রাশিয়া পাঠাই। তাকে প্যাকেজিং কোম্পানিতে কাজ দেওয়া হয়। কিছুদিন ভালোই চলছিল। এর মধ্যে মাসখানেক আগে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় নাজির। গত ১৬ এপ্রিল সকালে হঠাৎ সে ফোন করে বলে, তোমাদের সঙ্গে আমার আর দেখা নাও হতে পারে। আমাকে ক্ষমা করে দিও। আমাকে যুদ্ধ করতে ইউক্রেনে নেওয়া হচ্ছে। ১৪ দিনের সামরিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এসব কিছু করা হয়েছে জোর করে।’
এটাই ছিল ছেলের সঙ্গে অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক ফয়েজ উদ্দিনের শেষ কথা। এরপর আর তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ হয়নি। ফয়েজ উদ্দিন বলেন, ‘সরকার যেন আমার ছেলেকে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করে। যারা মিথ্যা আশ্বাসে তাকে রাশিয়ায় নিয়ে যুদ্ধের ময়দানে ঠেলে দিয়েছে, তাদের বিচার চাই।’
নাজিরের মা নূরজাহান বেগম মানসিক প্রতিবন্ধী। ছেলে যে কঠিন বিপদে আছে, তা তিনি বুঝতে পারছেন না। এদিকে নাজিরের চিন্তায় নাওয়া-খাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন তাঁর স্ত্রী কুলসুম বেগম। তিনি বলেন, ‘আমার স্বামী বেঁচে আছে, নাকি মরে গেছে– কিছুই জানি না। মেয়েটা সারাক্ষণ বাবা বাবা করে। প্রতিদিন বাবার আশায় মোবাইল ফোনের দিকে তাকিয়ে থাকে। সরকারের প্রতি অনুরোধ, আমার স্বামীকে যেন ফেরানোর ব্যবস্থা করা হয়।’
এর আগে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে তিন বাংলাদেশি নিহতের খবর পাওয়া গেছে। তারা হলেন নাটোরের সিংড়া উপজেলার হুমায়ুন কবির, ময়মনসিংহের গৌরীপুরের ইয়াসিন মিয়া শেখ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের আকরাম হোসেন। সারাদেশে আরও কয়েকজনের খবর পাওয়া গেছে, যারা এখন রাশিয়ায় যুদ্ধক্ষেত্রে রয়েছেন।