রাতে এক ঘণ্টার ব্যবধানে সাভার-ধামরাইয়ে দুই বাসে আগুন
Published: 16th, November 2025 GMT
ঢাকার ধামরাই ও সাভার উপজেলায় রাতে প্রায় এক ঘণ্টার ব্যবধানে দুটি বাসে আগুন দেওয়া হয়েছে। এসব ঘটনায় কেউ হতাহত হননি।
রোববার রাত আনুমানিক ১০টার দিকে ধামরাইয়ের ঢুলিভিটা বাসস্ট্যান্ডের কাছে একটি বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত ১০টার দিকে দুটি মোটরসাইকেলে তিনজন ব্যক্তি এসে ডি–লিংক পরিবহনের পার্ক করা একটি বাসের পেছনের জানালা ভেঙে ভেতরে আগুন ধরিয়ে দেয়। এরপর মোটরসাইকেল নিয়ে দ্রুত সেখান থেকে চলে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন পানি ও বালু ছিটিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। খবর পেয়ে ধামরাই ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নেভায়। আগুনে বাসের ভেতরের অধিকাংশ আসন পুড়ে গেছে।
নৈশপ্রহরী ফারুক বলেন, তিনজন এসে প্রথমে বাসে ইট মারে। পরে গানপাউডার দিয়ে আগুন লাগিয়ে দ্রুত চলে যায়। এরপর উপজেলা সড়কের দিকে পালিয়ে যায়।
ধামরাই ফায়ার সার্ভিসের জ্যেষ্ঠ স্টেশন অফিসার মো.
ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, পার্ক করা বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্তে কাজ চলছে।
এর প্রায় আধা ঘণ্টা পর সাভারের বিরুলিয়া বেড়িবাঁধসংলগ্ন বটতলা এলাকায় অন্য একটি বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। সাভার মডেল থানার পুলিশ জানায়, রাত সাড়ে আটটার দিকে আলিফ পরিবহনের বাসটি পার্ক করে বাড়িতে খাবার খেতে যান মালিক আমজাদ হোসেন। রাত পৌনে ১১টার দিকে আগুন লাগার খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় আগুন নেভান।
আমজাদ হোসেন বলেন, পুরো বাসটাই পুড়ে গেছে। এতে অন্তত পাঁচ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
সাভার মডেল থানার বিরুলিয়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আবদুল ওয়াহাব বলেন, বাসের মালিক নিজেই চালক। ঋণ করে বাসটি কেনা হয়েছিল। রাতে বাসটি রেখে তিনি খাবার খেতে যান। পার্ক করা বাসে কে বা কারা আগুন দিয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
রোনালদোর লাল কার্ড, পর্তুগালকে চমকে দিল আয়ারল্যান্ড
বিশ্বকাপ বাছাইয়ে অবিশ্বাস্য এক রাত দেখল ডাবলিন। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়লেন, আর ট্রয় প্যারটের জোড়া গোল আয়ারল্যান্ডকে এনে দিল পর্তুগালের বিরুদ্ধে দারুণ ২-০ গোলের জয়। যা তাদের নিয়ে গেল হাঙ্গেরির সাথে গ্রুপ রানার্স-আপ নির্ধারণের লড়াইয়ে।
৪০ বছর বয়সী পর্তুগাল অধিনায়ক দ্বিতীয়ার্ধে বল ছাড়া পরিস্থিতিতে ডারা ও’শিয়াকে কনুই মেরে বসেন। ম্যাচে তখনো আধাঘণ্টার বেশি বাকি। কিন্তু স্বাগতিকরা এরই মধ্যে নিজেদের গল্প লিখে ফেলছিলেন। বিশ্ব র্যাংকিংয়ে পঞ্চম স্থানের দলকে হারিয়ে আইরিশ ফুটবলের ইতিহাসে নতুন অধ্যায় যোগ করার পথে।
আরো পড়ুন:
হামজার জোড়া গোলের পর ‘পুরোনো রোগে’ জয় বঞ্চিত বাংলাদেশ
‘যেভাবে বার্সেলোনা ছাড়ব ভেবেছিলাম, তা হয়নি’ মেসির হৃদয়ভরা আক্ষেপ
ডাবলিনে নেমেই রোনালদো বলেছিলেন তিনি “ভদ্র ছেলে” হয়ে থাকতে চান। কিন্তু মাঠে তার হাসিমুখ দ্রুতই রাগ, ক্ষোভ আর শেষ পর্যন্ত হতাশায় বদলে যায়। সুইডিশ রেফারি গ্লেন নিয়বেরগ যাকে ম্যাচের আগেই আয়ারল্যান্ড কোচ হেইমির হ্যালগ্রিমসনেরা বলেছিলেন যাতে রোনালদোর প্রভাব তাকে বিচলিত না করে। শেষ পর্যন্ত কঠোর সিদ্ধান্ত নিতেই বাধ্য হন।
যদিও শেষ পর্যন্ত জয়টা এনে দেয় প্যারটের প্রথমার্ধের দুই গোল। কিন্তু গোটা ম্যাচ জুড়েই আয়ারল্যান্ড দল দেখিয়েছে দারুণ চরিত্র, অসাধারণ ঐক্য। আর এই জয় মানে রবিবার বুদাপেস্টে আরেকটি এমন পারফরম্যান্সই তাদের ‘গ্রুপ-এফ’ এ রানার্স-আপ নিশ্চিত করবে।
হাঙ্গেরির জয়ের পর আয়ারল্যান্ড জানত তাদের কী করতে হবে। আগের মাসে লিসবনেও পর্তুগালের কাছে তারা কঠিন সময় তৈরি করেছিল। আর এবারও শুরুতে নিজেদের অর্ধে আটকে গেলেও ধীরে ধীরে আক্রমণে উঠতে থাকে।
এদিকে রোনালদো ম্যাচের শুরুতে একাধিক সুযোগ পেলেও কাজে লাগাতে পারেননি। বিরল আক্রমণে যখনই আয়ারল্যান্ড ওপরে উঠেছে, তখনই তারা বিপদ তৈরি করেছে। ১৭ মিনিটে গোলও আসে এমনই এক মুহূর্তে। প্যারট গোলরক্ষক দিয়োগো কস্তাকে ভুল করতে বাধ্য করেন। এরপর জশ কালেনের সেট-পিস থেকে লিয়াম স্কেলসের হেড ফিরিয়ে দেওয়া বলটা কাছ থেকেই জালে ঠেলে দেন প্যারট।
এরপর কিছুক্ষণ পরই প্রায় ব্যবধান দ্বিগুণ করে ফেলছিল আয়ারল্যান্ড। ও’শিয়ার লম্বা ক্লিয়ারেন্সে ছুটে গিয়ে ওগবেনে যে শট নেন, তা পোস্টে লেগে ফিরে আসে।
কেলেহের দারুণ সেভে ফেলিক্সকে আটকে দেন, দালোত দুবার লক্ষ ভ্রষ্ট করেন। কিন্তু বিরতির ঠিক আগে ও’শিয়ার লম্বা পাস ধরে প্যারট ডান দিক দিয়ে ঢুকে কস্তাকে নিকট পোস্টে পরাস্ত করলে আয়ারল্যান্ডের লিড দ্বিগুণ হয়।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই পর্তুগাল ফিরতে পারত। রেনাতো ভেইগার হেড থেকে বল পেয়ে ভিটিনিয়া গোল করতে ব্যর্থ হন। বল দখলে পর্তুগাল আধিপত্য বজায় রাখলেও তাদের সবচেয়ে বড় ধাক্কা আসে ৫৯ মিনিটে। প্রথমে রোনালদোকে শুধু হলুদ কার্ড দেখালেও ভিএআর পর্যালোচনায় রেফারি সিদ্ধান্ত বদলে সরাসরি লাল কার্ড দেখান।
মাঠ ছাড়ার সময় রোনালদো ও হ্যালগ্রিমসনের মধ্যে সংক্ষিপ্ত বাক্যালাপ ও করমর্দন হয়। কিন্তু দুজনেই বুঝে গিয়েছিলেন- এতেই ম্যাচের ভাগ্য ঠিক হয়ে গেছে।
শেষ দিকে পর্তুগালের চাপ বাড়লেও আয়ারল্যান্ড দৃঢ়তার সঙ্গে ম্যাচ শেষ করে। আর ডাবলিনে জন্ম নেয় আরেকটি স্মরণীয় রাত।
ঢাকা/আমিনুল