কিশোরীকে উদ্ধারে এসে কাঠের বাটামের আঘাতে আহত ৩ পুলিশ
Published: 6th, May 2025 GMT
১৪ বছরের এক কিশোরীকে উদ্ধারে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে এসে মারধরের শিকার হয়েছেন যশোর কোতোয়ালি থানা-পুলিশের তিন সদস্য। সোমবার বিকেলে উপজেলার বাকুলিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। রাতেই পুলিশ অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
আহতরা হলেন- যশোর কোতোয়ালি থানার এএসআই তাপস কুমার পাল, কনস্টেবল রাবেয়া খাতুন ও ফারজানা খাতুন। এ ঘটনায় যশোর চাঁচড়া পুলিশ ফাঁড়ির এটিএসআই শওকত হোসেন ১৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় ৬০-৭০ জনের বিরুদ্ধে কালীগঞ্জ থানায় মামলা করেন।
জানা গেছে, কালীগঞ্জ পৌরসভার বাকুলিয়া গ্রামের সুজন হোসেন সম্প্রতি যশোরের এক কিশোরীকে নিয়ে এসে পরিবারের অমতে বিয়ে করেন। এ ঘটনায় মেয়ের পরিবারের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার তাকে উদ্ধারে এসে মারধরের শিকার হন পুলিশের তিন সদস্য।
মামলা থেকে জানা গেছে, কিশোরীকে উদ্ধারে যশোরের পুলিশ সদস্যরা সোমবার কালীগঞ্জে আসেন। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে কালীগঞ্জ থানার সহযোগিতায় মেয়েটিকে উদ্ধারে তারা বাকুলিয়া গ্রামে যান। তাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসার সময় বাড়ির লোকজনসহ স্থানীয়রা বাধা দেন ও গালাগাল শুরু করেন। একপর্যায়ে পুলিশের কাছ থেকে মেয়েটিকে ছিনিয়ে নিতে লাঠি ও কাঠের বাটাম দিয়ে তাদের বেধড়ক মারধর করে জখম করেন। খবর পেয়ে কালীগঞ্জ থানার ওসিসহ পুলিশ সদস্যরা আহত পুলিশ সদস্য ও মেয়েটিকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন। পরে পুলিশ সদস্যদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
পুলিশ সদস্যদের মারধর ঠেকাতে গিয়ে আহত হন পৌর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আছাদুজ্জামান আসাদের স্ত্রী মোছাম্মদ মাছুরা খাতুন। এ ঘটনায় রাতে কালীগঞ্জ থানায় মামলা হয়। পুলিশ রাতেই অভিযান চালিয়ে বাকুলিয়া গ্রামের রাজু আহম্মেদ, মামুন ও আতিকুল ইসলাম মিন্টুসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেন।
আহত কনস্টেবল রাবেয়া খাতুনের ভাষ্য, তারা ঘটনাস্থল থেকে কিশোরীকে উদ্ধার করে নিয়ে আসার প্রথমে ছয়-সাত জন পুরুষ এসে তাকে ছেড়ে দিতে বলেন। কিন্তু না ছাড়ায় তাঁকে এবং সঙ্গে থাকা নারী কনস্টেবলকে মারধর শুরু করে। পরে তিন পুলিশ সদস্যকেই মারধর করেছে।
এ বিষয়ে কালীগঞ্জ থানার ওসি শহিদুল ইসলাম হাওলাদার বলেন, আহত পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে যশোরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। গ্রেপ্তার চারজনকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: যশ র ঝ ন ইদহ আহত প ল শ সদস য ম রধর এ ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
নওগাঁর দুই সীমান্ত দিয়ে আরও ১৮ জনকে ঠেলে পাঠাল বিএসএফ
নওগাঁর ধামইরহাট ও সাপাহার সীমান্ত দিয়ে নারী, শিশুসহ ১৮ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে এ ঘটনা ঘটে। পরে তাঁদের আটক করে সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে বিজিবি।
বিজিবি, পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে জানা যায়, ধামইরহাট উপজেলার কালুপাড়া সীমান্ত এলাকা দিয়ে গতকাল রাতের কোনো এক সময় ১৪ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠায় বিএসএফ। পরে রাত ৩টার দিকে ২৭১/১ এস সীমান্ত পিলারের কাছে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে কালুপাড়া এলাকা থেকে তাঁদের আটক করে বিজিবি। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাঁদের ধামইরহাট থানার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। আটক ১৪ জনের মধ্যে ৯ জন নারী ও পাঁচজন পুরুষ। তাঁদের বাড়ি খুলনা, নড়াইল ও যশোরের বিভিন্ন এলাকায় বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে।
নওগাঁর পত্নীতলা ১৪ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এ বিষয়ে ধামইরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমাম জাফর জানান, বিজিবির হস্তান্তর করা ওই ১৪ জনকে থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা নিজেদের বাংলাদেশি বলে দাবি করেছেন। তাঁদের দাবি করা পরিচয় যাচাই-বাছাইয়ের কাজ চলছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে তাঁদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
এদিকে গতকাল রাতের কোনো এক সময় সাপাহার উপজেলার বামনপাড়া এলাকা দিয়ে চারজনকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠায় বিএসএফ। রাত সাড়ে ৩টার দিকে সীমান্তের ২৪৬/২ এস পিলারের কাছে বাংলাদেশের অভ্যন্তর থেকে ওই চারজনকে আটক করে বিজিবি। পরে তাঁদের সাপাহার থানার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
সাপাহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল আজিজ বলেন, বিজিবির হস্তান্তর করা ওই চারজনের মধ্যে দুজন পুরুষ ও দুজন নারী। তাঁরা একই পরিবারের সদস্য। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা জানিয়েছেন, তাঁদের বাড়ি নড়াইল জেলার কালিয়া উপজেলায়। তাঁদের দাবি করা পরিচয় যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।
এর আগে গত ৩১ জুলাই নওগাঁর ধামইরহাট সীমান্তের আগ্রাদ্বিগুণ এলাকা দিয়ে ১০ জনকে ঠেলে পাঠায় বিএসএফ।