গাজীপুরের শ্রীপুরে এক বাসিন্দার তাৎক্ষণিক বুদ্ধিমত্তা এবং সাহসিকতার কারণে অল্পের জন্য দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছে বলাকা কমিউটার এক্সপ্রেস ট্রেন। 

বৃহস্পতিবার (৮ মে) সকালে শ্রীপুর উপজেলার বালিয়াপাড়া এলাকায় রেললাইনে ফাটল দেখতে পেয়ে স্ত্রীর লাল ওড়না দিয়ে সংকেত দেখিয়ে ট্রেন থামান মজিবুর রহমান (৫০)। এতে বলাকা কমিউটার এক্সপ্রেস ট্রেন ও ট্রেনের যাত্রীরা দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পায়। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শ্রীপুর-কাওরাইদ রেল স্টেশনের মাঝামাঝি স্থানে গোলাঘাট জিরাতি বাড়ি মোড় এলাকায় রেললাইনে ফাটল দেখতে পেয়ে এলাকাবাসী উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যান মজিবুর রহমান। ট্রেনের আসার শব্দ শুনে তাৎক্ষণিকভাবে স্ত্রীর লাল ওড়না নিয়ে লাইনের পাশে দাঁড়িয়ে চালককে সংকেত দিতে থাকেন তিনি। সংকেত পেয়ে চালক ট্রেনটি নিরাপদে থামিয়ে দেন।

সাহসী এই তাৎক্ষণিক উদ্যোগের জন্য মজিবুর রহমান স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে প্রশংসিত হচ্ছেন।

বলাকা কমিউটার এক্সপ্রেস ট্রেনটি ছিল ঢাকা থেকে জাজিরাগামী, যা ওই সময় শ্রীপুর স্টেশন পার হয়ে কাওরাইদ স্টেশনের দিকে যাচ্ছিল। পরবর্তীতে কাওরাইদ রেলওয়ে স্টেশন থেকে রেলওয়ে কর্মী সোহেল রানা এসে ফাটল পরীক্ষা করে তাৎক্ষণিকভাবে সমস্যার সমাধান করেন। এর পর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।

মজিবুর রহমান রাইজিংবিডিকে বলেন, “স্থানীয়দের চিৎকার শুনে দৌড়ে যাই। দেখি রেললাইনে বড় ফাটল। ট্রেনের আওয়াজ শুনে বুঝি, সময় খুব কম। স্ত্রীর লাল ওড়না নিয়ে সংকেত দিই। চালক ধীরে ধীরে ট্রেন থামান। আল্লাহর রহমতে বড় বিপদ থেকে বাঁচা গেছে।”

শ্রীপুর রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার মো.

সাইদুর রহমান রাইজিংবিডিকে বলেন, “৩৪০ এর ৪/৫ কিলোমিটার সেকশনে এই ফাটলটি দেখা দেয়। স্থানীয়দের সতর্কতায় বড় ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হয়েছে।”

রেলওয়ে সূত্র জানায়, মাঝে মাঝে রেললাইনে ফাটল দেখা দিতে পারে। সেগুলো সময়মতো না ধরতে পারলে বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা তৈরি হয়। বালিয়াপাড়ার এই ফাটল ঝুঁকিপূর্ণ ছিল বলেও স্বীকার করেন রেল কর্মকর্তারা।

ঢাকা/রফিক/টিপু 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর দ র ঘটন র লওয

এছাড়াও পড়ুন:

কোটিপতি হলেও পরিচ্ছন্নতা কর্মীর কাজ করেন তিনি

পর্যাপ্ত অর্থ সঞ্চয় করতে পারলেই আমাদের অনেকে কায়িক পরিশ্রম ছেড়ে দেন। আরাম-আয়েশে জীবন কাটান। কিন্তু সবাই তা করেন না। এমন একজন জাপানের কোইচি মাতসুবারা। ৫৬ বছর বয়সী এই জাপানি নাগরিকের বার্ষিক আয় প্রায় ৩ কোটি ইয়েন (প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা) হওয়া সত্ত্বেও তিনি এখনো নিয়মিত পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ করেন।

মাতসুবারা সপ্তাহে তিন দিন, প্রতিদিন চার ঘণ্টা করে কাজ করেন। তিনি সরকারি পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করেন। এ কাজের অংশ হিসেবে তাঁকে ছোটখাটো রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করতে হয়।

এ কাজ থেকে মাতসুবারা মাসে ১ লাখ ইয়েন (প্রায় ৮২ হাজার ৬৪ টাকা) আয় করেন, যা টোকিওর গড় বেতনের তুলনায় অনেক কম। তারপরও তিনি এ কাজ করেন। কারণ, তিনি এটাকে শারীরিক সক্রিয়তা ও মানসিক প্রশান্তির উপায় হিসেবে দেখেন।

মাতসুবারা ছোটবেলা থেকেই সঞ্চয়ী ছিলেন। মাধ্যমিকের পর তিনি একটি কারখানায় মাসে ১ লাখ ৮০ হাজার ইয়েন (প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা) বেতনে কাজ শুরু করেন। খরচ বাঁচিয়ে কয়েক বছরে প্রায় ৩০ লাখ ইয়েন (২৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা) সঞ্চয় করে তিনি প্রথম স্টুডিও ফ্ল্যাট কিনেছিলেন।

পরে বাড়ি কেনার ঋণ আগেভাগে পরিশোধ করে ধীরে ধীরে আরও ফ্ল্যাট কেনেন এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধি করেন মাতসুবারা। এখন টোকিও ও এর শহরতলিতে তাঁর সাতটি ফ্ল্যাট রয়েছে, যার সবই ভাড়া দিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করেছেন।

ধনবান হলেও মাতসুবারা সাদাসিধে জীবন যাপন করেন। এখনো তিনি সস্তা ফ্ল্যাটে থাকেন, নিজের খাবার নিজে বানান, নতুন জামাকাপড় কেনেন না, সাধারণ স্মার্টফোন ব্যবহার করেন এবং প্রধানত সাইকেলে চলাচল করেন। তাঁর জীবনদর্শন—‘প্রতিদিন কিছু না কিছু করার আশা করি, সুস্থ থাকতে চাই এবং নিজেকে নিয়ে চিন্তা করতে চাই।’

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে মাতসুবারাকে ‘অদৃশ্য কোটিপতি’ বলে উল্লেখ করা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর গল্প ছড়িয়ে পড়েছে। জাপানে ধনীদের এমন সাধারণ জীবনধারা অস্বাভাবিক নয়। দেশটিতে সাদাসিধে জীবনযাপন অনেকের মধ্যে দেখা যায়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ