ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামের পশ্চিম অংশের ধুবড়ি জেলায় একটি মন্দিরের চত্বরে পশুর মাংস পড়ে থাকা নিয়ে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। এ ঘটনার পর সেখানে মানুষের জমায়েত এবং ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সন্দেহ করা হচ্ছে, এই মাংস গরুর। এ ঘটনার জেরে গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, গত রোববার সকালে ধুবড়ি শহরের একটি হনুমান মন্দির চত্বরে পশুর মাংস পড়ে থাকতে দেখা যায়। এ ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর গত সোমবার সকাল থেকে এলাকায় ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়। মন্দির–সংলগ্ন একটি রাস্তা অবরোধ করেন বাসিন্দারা। তাঁরা স্লোগান দেন এবং টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখান।

স্থানীয় প্রশাসন প্রাণীর দেহাবশেষ সরাতে গেলে তাদের বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। বিক্ষোভকারীরা দাবি করেছে, অভিযুক্ত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার না করা পর্যন্ত দেহাবশেষ সরাতে দেওয়া হবে না। স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, এ নিয়ে তৃতীয়বার ওই মন্দিরে এমন ঘটনা ঘটল। আসাম বিজেপিশাসিত রাজ্য।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। প্রশাসনের ঘোষণা দিয়েছে, ওই এলাকায় সভা-সমাবেশ ও মিছিল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ ছাড়া ধুবড়ি টাউনে সব দোকানপাট বন্ধ থাকবে। কেবল চিকিৎসা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, দমকল ও জরুরি পরিষেবা প্রভৃতি খোলা থাকবে। পুলিশ, সেনাবাহিনী, আধা–সামরিক বাহিনী এবং নিরাপত্তাবিষয়ক অন্য সরকারি কর্মকর্তাদের ছাড় দেওয়া হবে।

ভারতের সংবাদমাধ্যম ‘ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’–কে ধুবড়ির জেলা শাসক দিবাকর নাথ বলেছেন, সন্দেহ করা হচ্ছে, স্থানীয় হনুমান মন্দিরের কাছে গরুর দেহাবশেষ পাওয়া যায়। এর জেরে সোমবার থেকে সেখানে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেলেও গতকাল রাতে উত্তেজনা অনেকটাই কমে এসেছে। সব সম্প্রদায়কে নিয়ে শান্তি কমিটি গঠন করার পাশাপাশি এলাকায় পুলিশ এবং আধা সামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া

আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা আজ বুধবার এই বিষয়ে উসকানিমূলক বিবৃতি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘মুসলিমরা গরুর মাংস খায়, হিন্দু এলাকায় ফেলে দেয়, হিন্দুদের তাড়িয়ে দেয়, তারপর জায়গা দখল করে। গরুর মাংসকে একটা অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এটা আমরা সহ্য করব না। আমরা এটা কখনই হতে দেব না।’

হিমন্তের এই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্সে’ প্রকাশ করেছেন আসামের স্বাস্থ্য, পরিবার কল্যাণ এবং সেচ মন্ত্রকের দায়িত্বে থাকা জ্যেষ্ঠ মন্ত্রী অশোক সিংঘল।

অশোক ঘটনার সময় থেকে ধারাবাহিকভাবে উত্তেজনায় মদদ দিচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তিনি ধারাবাহিকভাবে ‘এক্সে’ যা লিখছেন, তার বিষয়বস্তু নিয়ে সর্বভারতীয় ও আঞ্চলিক সংবাদমাধ্যম একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

সিংঘল রোববার থেকে নিয়মিত যা লিখছেন, তার মোটামুটি বিষয়বস্তু হলো—ধুবড়িতে যে ঘটনা ঘটছে, তা হঠাৎ ঘটছে না। তা দীর্ঘদিন ধরে চলা কংগ্রেসের রাজনীতির ফল। এখন মুসলিম সম্প্রদায় গরু খেয়ে তার দেহাবশেষ হিন্দুদের মন্দিরে ফেলছে। সিংঘলের মতে, এর কারণ ধুবড়ির হিন্দু জনসংখ্যা ক্রমশ কমছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: মন দ র মন ত র

এছাড়াও পড়ুন:

পুরুষ সম্পর্কে যে মন্তব্য করলেন ফাতিমা 

বলিউড অভিনেত্রী ফাতিমা সানা শেখ লিঙ্গ সমতা নিয়ে বিভিন্ন সময়ে কথা বলেছেন। তার মতে, এই সমাজে শুধু নারীরাই নন, অনেক পুরুষও প্রতিনিয়ত পুরুষতন্ত্রের শিকার হচ্ছেন।

সম্প্রতি ভারতীয় গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা প্রসঙ্গে ফাতিমা  বলেন, ‘‘ বিষাক্ত সম্পর্কে অনেক পুরুষও থাকেন। তবে অদ্ভুত বিষয় হচ্ছে, কোনো বিষাক্ত সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসার পরে তারা নিজেদের কথা বলতে পারেন না। যদি বলেন তাহলে তাদের নিয়ে হাসাহাসি করা হয়। এই রীতিও পুরুষতন্ত্রের একটা দিক। পুরুষ কাঁদতে পারেন না। এর কারণ, পুরুষতন্ত্রই শিখিয়ে দিয়েছে, পুরুষদের কাঁদতে নেই।’’ 

ফাতিমা মনে করেন সম্পর্কে সমতা প্রতিষ্ঠা করার জন্য বোঝাপড়াটা জরুরি।

আরো পড়ুন:

বাবা হারালেন চিত্রনায়িকা মিষ্টি জান্নাত

২৫ বছরের অভিনয় ক্যারিয়ার: ৫ হাজার টাকার জন্য দরকষাকষি করেন শিখা

এই নায়িকা বলেন, ‘‘ যেকোনো সম্পর্কে সমতা বজায় রাখা খুব জরুরি। এর জন্য আমাকে পুরুষ হয়ে উঠতে হবে না। আমি আমার নারী সত্ত্বা ধরে রাখতে চাই। আমি চাই আমার সঙ্গে যে পুরুষ থাকবেন, তিনিও যেন তার মতোই থাকেন।’’

ফাতিমা তার জীবন সঙ্গীকে বদলে দিতে চান না। বরং সঙ্গীর  বৈশিষ্ট্যগুলোকে ভালোবাসতে চান। আর তিনি মনে করেন সঙ্গীর প্রতি সম্মান থাকলে সব কিছুই ঠিক থাকে।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি ‘মেট্রো ইন দিনো’ এবং ‘আপ য্যায়সা কোই’ সিনেমায় অভিনয় করেছেন ফাতিমা। ‘আপ য্যায়সা কোই’ সিনেমাতে তাকে একজন প্রগতিশীল বাঙালি নারীর চরিত্রে দেখা গেছে। ফাতিমা এই সিনেমাতে অভিনয় করেছেন মাধবন-এর বিপরীতে।

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ