ইরান ও ইসরায়েল: আক্রমণ ও প্রতিরক্ষা সক্ষমতায় কে এগিয়ে
Published: 13th, June 2025 GMT
ইসরায়েল আজ শুক্রবার ভোররাতে ইরানের সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনাগুলো লক্ষ্য করে ব্যাপক হামলা চালাল। মধ্যপ্রাচ্যের চির প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ দুটির মধ্যে চলমান দীর্ঘ উত্তেজনার সাম্প্রতিকতম অধ্যায় এটি।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, দুই শতাধিক যুদ্ধবিমান ইরানের ভেতরে শতাধিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে। এ আচমকা হামলায় ইরানের শীর্ষ তিনজন সামরিক কমান্ডারকে হত্যার দাবি করেছে ইসরায়েল।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী নিহত কমান্ডারদের নাম প্রকাশ করেছে—ইরানি সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মোহাম্মদ বাঘেরি, ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোরের (আইআরজিসি) কমান্ডার হোসেইন সালামি এবং খাতাম আল-আনবিয়া সেন্ট্রাল হেডকোয়ার্টারের কমান্ডার মেজর জেনারেল গোলাম আলী রাশিদ।
২০২৪ সালে ইরান ও ইসরায়েল পরস্পরের বিরুদ্ধে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছিল। গত ২ অক্টোবর ইরান ইসরায়েলের বড় বড় শহরে অন্তত ১৮০টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে।
আইআরজিসি জানায়, ফিলিস্তিনের গাজা ও লেবাননে ইসরায়েলি হামলায় বেসামরিক নাগরিকদের হত্যার প্রতিশোধ এবং আইআরজিসি, হামাস, হিজবুল্লাহ নেতাদের হত্যার জবাবেই ওই হামলা করা হয়। এর পাল্টা জবাবে গত ২৫ অক্টোবর ইসরায়েল ইরানে প্রায় ২০টি সামরিক স্থাপনায় হামলা চালায়, যা তাদের ভাষ্যমতে ‘ইরান ও এর প্রক্সিদের’ মাসব্যাপী হামলার প্রতিক্রিয়া ছিল।
তবে আজ ১৩ জুন, শুক্রবার ইসরায়েল যে হামলা চালিয়েছে, তা পরিস্থিতির নাটকীয় অবনতি ঘটিয়েছে। এর জবাবে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি ইসরায়েলকে ‘চড়া মূল্য’ দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন।
দীর্ঘদিনের শত্রু ইরান ও ইসরায়েল এখন সরাসরি সংঘাতের দিকে ধাবিত হচ্ছে। এমন পরিপ্রেক্ষিতে দুই দেশের সামরিক সক্ষমতা, আক্রমণ করার ক্ষমতা ও আত্মরক্ষার উপায় সম্পর্কে আলোকপাত করা হলো—
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে, ২০১৪ সালের যুদ্ধ নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে গ্রহণ করা ‘শিক্ষার বাস্তবায়ন’ করছে তারা.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েলি হামলায় ইরানের সেনাপ্রধান নিহত: রাষ্ট্রীয় টিভির খবর
ইসরায়েলের হামলায় ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ বাঘেরি নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া ইসরায়েলি হামলায় ইসলামী বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) প্রধান কমান্ডার মেজর জেনারেল হোসেইন সালামিসহ আরও বেশ কয়েকজন সামরিক ও বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন আইআরআইএনএন নিশ্চিত করেছে, ইসরায়েলি হামলায় সেনাপ্রধান মেজর জেনারেল বাঘেরি নিহত হয়েছেন। পৃথক হামলায় আইআরজিসির প্রধান মেজর জেনারেল সালামিও নিহত হন।
বাঘেরি ইরানের সর্বোচ্চ পদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ছিলেন। ইসরায়েলের নজিরবিহীন হামলায় নিহত দ্বিতীয় উচ্চপদস্থ ব্যক্তি তিনি।
এর আগে শুক্রবার সকালে ইরানের একাধিক রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর প্রধান হোসেইন সালামিও ইসরায়েলের হামলায় নিহত হয়েছেন।
ইরানি বার্তা সংস্থার খবরে জানানো হয়, ‘খাতাম আল-আনবিয়া’ সদর দপ্তরের কমান্ডার মেজর জেনারেল গোলাম আলী রশিদও একই হামলায় নিহত হয়েছেন।
পরমাণুবিজ্ঞানী ও ইসলামিক আজাদ ইউনিভার্সিটির প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ-মেহদি তাহরাঞ্চি এবং পরমাণুবিজ্ঞানী ও ইরানের পারমাণবিক শক্তি সংস্থার সাবেক প্রধান ফেরাইদুন আব্বাসিও পৃথক হামলায় নিহত হয়েছেন।
ইসরায়েলি বাহিনী আজ শুক্রবার ভোররাতের দিকে ইরানের রাজধানী তেহরানসহ অন্যান্য শহরে সামরিক হামলা শুরু করে।
ইসরায়েল তেহরানে আবাসিক ভবনেও হামলা চালিয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শী ও রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের সংবাদকর্মীরা জানান, তাঁরা নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে নারী ও শিশুর মরদেহ দেখতে পেয়েছেন।