Samakal:
2025-08-03@04:34:08 GMT

আইনের হস্তই দীর্ঘ হউক

Published: 19th, June 2025 GMT

আইনের হস্তই দীর্ঘ হউক

দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সাম্প্রতিক সময়ে সংঘটিত শিশু-কিশোরী ধর্ষণের বেশ কয়েকটি খবর যেইভাবে সমকালসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে আসিয়াছে, উহা উদ্বেগজনক। আরও হতাশার বিষয়, কুষ্টিয়ায় নিতান্তই চপেটাঘাত দিয়া শিশু ধর্ষণের ন্যায় অপরাধের ‘বিচার’ সম্পন্ন হইয়াছে।

আমরা মনে করি, এহেন অপরাধের বিস্তারের পশ্চাতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কুপ্রভাব রহিয়াছে। উপরন্তু ধর্ষণের বিচারের ক্ষেত্রে কুষ্টিয়া যেই উদাহরণ তৈয়ার করিয়াছে, উহাতে দুঃখজনক সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গিও পরিস্ফুট। 

মঙ্গলবার সমকালে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, রবিবার হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে চলন্ত বাসে কলেজছাত্রী দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হইয়াছে। একই দিবসে গাজীপুরের শ্রীপুরে এটিএম বুথে ধর্ষণের শিকার হইয়াছে পোশাক শ্রমিক। রাজবাড়ীর পাংশায় দুই স্কুলছাত্রীকে জিম্মি ও ধর্ষণ করা হইয়াছে। শনিবার নাটোরের বড়াইগ্রামে কিশোরী ধর্ষণের শিকার হইয়াছে। মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার ঘটনা আরও ভয়ানক। তথায় গত বৃহস্পতিবার প্রেম ও ধর্ষণে ব্যর্থ হইয়া স্কুলছাত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হইয়াছে। এই সকল অঘটন প্রমাণ করিতেছে, ধর্ষণ মহামারির রূপ পরিগ্রহ করিয়াছে। 

গত মার্চ মাসে ধর্ষণের শিকার মাগুরার শিশু আছিয়ার হৃদয়বিদারক মৃত্যু দেশব্যাপী ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়াছিল। ইহার পর সরকার শিশু ধর্ষণের বিচার দ্রুত সম্পন্নকরণের লক্ষ্যে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিয়াছিল। ঐ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাইয়া অত্র সম্পাদকীয় স্তম্ভে আমরা বলিয়াছিলাম, ন্যায়বিচারের স্বার্থে শুধু ধর্ষণের তদন্ত ও বিচারের সময় সংক্ষিপ্ত করাই যথেষ্ট নহে; তদন্ত ও বিচারকার্যে নিয়োজিতদেরও নারী অধিকার সম্পর্কে সংবেদনশীল করিয়া তোলা জরুরি। বলা বাহুল্য, নাগরিক ও সমাজপতিদেরও যে এই সংবেদনশীলতা গুরুত্বপূর্ণ, কুষ্টিয়ার কথিত সালিশই উহার প্রমাণ।  

কেবল দ্রুত বিচারের আইন করিলেও যে ধর্ষণের ঘটনা হ্রাস পাইবে না– সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহই উহার সাক্ষ্যবহ। আমরা জানি, ধর্ষণের ঘটনায় সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ধর্ষণ কিংবা নারী নির্যাতনের ঘটনায় মামলাই হয় না। মামলা হইলেও আইনের মারপ্যাঁচে অপরাধী নিষ্কৃতি পায়। অনেক দিন ধরিয়াই ধর্ষণ আইন কঠোর করা ও দ্রুত বিচারের দাবি ছিল। অবশেষে উহা হইয়াছে, কিন্তু ধর্ষণ হ্রাস পাইতেছে না কেন? মার্চ মাসে মাগুরায় শিশু আছিয়ার ধর্ষণের প্রতিবাদে তরুণ প্রজন্ম ব্যাপকভাবে অংশগ্রহণ করিয়াছিল। আমরা মনে করি, তারুণ্যের এই জাগরণ ও প্রতিবাদ অব্যাহত রাখিতে হইবে।

সর্বোপরি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখিবার বিকল্প নাই। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর থাকিলে সড়ক-মহাসড়কে চলন্ত বাসে ধর্ষণের অঘটনা ঘটিবার কথা নহে। প্রশাসন কঠোর হইলে সমাজপতিরা চপেটাঘাতে ধর্ষণের ন্যায় অপরাধের বিচার সম্পন্ন করিতে সাহস করিত না। যথায় শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হইবার কথা, তথায় এহেন মীমাংসা সালিশের নামে প্রহসন বৈ কিছু নহে। বলা বাহুল্য, সামাজিক এহেন দৃষ্টিভঙ্গির কারণেই ধর্ষণের শিকার হইয়াও আত্মহত্যার ন্যায় অঘটন ঘটিয়া থাকে। এমনকি কন্যা ধর্ষিত হইবার পর পিতা মামলা করিলে পিতাকে হত্যার ঘটনাও এই সমাজে ঘটিয়াছে।

নারী ভুক্তভোগী হওয়া সত্ত্বেও কেন আদালতের দ্বারস্থ হইতে ভয়– তাহার জবাবও ইহাতে স্পষ্ট। আমরা চাই কেবল কথায় নহে, কাজেও ধর্ষণ-নির্যাতন রোধের দায়িত্বটি সরকার অগ্রাধিকারে রাখিবে। বিশেষ নির্দেশনার মাধ্যমে প্রশাসন ও পুলিশ এই ব্যাপারে আরও তৎপর হইতে পারে। সাম্প্রতিক প্রতিটি ধর্ষণের ঘটনার আসামিকে গ্রেপ্তার করিয়া দ্রুত সময়ের মধ্যে বিচারের ব্যবস্থা করিতে হইবে। বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণে ধর্ষণের ন্যায় অপরাধ যদ্রূপ বর্ধমান, তদ্রূপ অপরাধী আরও বেপরোয়া হইতেছে। আমরা প্রত্যাশা করি, প্রশাসনের দীর্ঘ হস্ত দিয়া সেই অপরাধীদের হস্তে লৌহবেড়ি পরাইতেই হইবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: কর য় ছ অপর ধ হইয় ছ র ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

সারা দেশে সাত দিনে যৌথ বাহিনীর অভিযানে আটক ২৮৮

ঢাকাসহ সারা দেশে বিগত সাত দিনে অভিযান চালিয়ে ২৮৮ জনকে আটক করেছে যৌথ বাহিনী। বিভিন্ন অপরাধের ঘটনায় তাঁদের আটক করা হয়েছে। আটক ব্যক্তিদের কাছ থেকে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র, গোলাবারুদ, ককটেলসহ বিভিন্ন জিনিস উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২৪ থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত সেনাবাহিনীর বিভিন্ন পদাতিক ডিভিশন ও স্বতন্ত্র ব্রিগেডের অধীনের ইউনিট এবং অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সমন্বয়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় কিছু যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসব অভিযানে চিহ্নিত শীর্ষ সন্ত্রাসী, অবৈধ অস্ত্রধারী, ছিনতাইকারী, মাদক ব্যবসায়ী এবং মাদকাসক্তসহ ২৮৮ জনকে আটক করা হয়।

আইএসপিআর জানিয়েছে, আটক ব্যক্তিদের কাছ থেকে ১৪টি অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র, ১৫৬টি বিভিন্ন ধরনের গোলাবারুদ, ২টি ককটেল, ৩টি ম্যাগাজিন, মাদকদ্রব্য, বিভিন্ন ধরনের দেশীয় অস্ত্র, চোরাই মালামাল ও নগদ অর্থ উদ্ধার করা হয়। প্রয়োজনীয় জিজ্ঞাসাবাদ এবং আইনি কার্যক্রম পরিচালনার জন্য তাঁদের সংশ্লিষ্ট এলাকার থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সেনাবাহিনীর এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে। সাধারণ জনগণকে যেকোনো সন্দেহজনক কার্যকলাপের বিষয়ে নিকটস্থ সেনা ক্যাম্পে তথ্য দিতে অনুরোধ জানানো হচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৫ আগস্ট ঘিরে শঙ্কা, সতর্ক অবস্থানে পুলিশ ও দলগুলো
  • গণ–অভ্যুত্থান শেষে ভিন্ন রাজনৈতিক পরিচয়ের মানুষ ভয়াবহ বিপদের মুখে
  • মৃত অবস্থায় আনা হয় হাসপাতালে, অভিযোগ নির্যাতনে মৃত্যু
  • একটি শরীর, একটি বুলেট এবং এক স্বৈরাচারের পতন
  • সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত আদালত গঠন করা হয়েছে: আইএসপিআর
  • রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত আদাল
  • সারা দেশে সাত দিনে যৌথ বাহিনীর অভিযানে আটক ২৮৮
  • ইউনিয়ন পরিষদে তালা দেয়ায় বিএনপি নেতা আটক
  • গোপালগঞ্জে এনসিপির অনেকের জীবননাশের হুমকি ছিল, আত্মরক্ষার্থে বলপ্রয়োগ করা হয়েছে
  • ‘ভূমিকম্পে ছিন্নভিন্ন হওয়া দেশকে স্থিতিশীলতায় ফিরিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার’