আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারপ্রক্রিয়ায় যেসব পরিবর্তন আনা হয়েছে, সেগুলো বিচারের মানকে আরও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উন্নীত করতে ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করেন ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের বিশেষ উপদেষ্টা টবি ক্যাডম্যান। তবে তিনি বলেছেন, ট্রাইব্যুনালের বিচারপ্রক্রিয়ায় আরও কিছু সংশোধন আনা প্রয়োজন। এ নিয়ে তিনি চিফ প্রসিকিউটরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছেন।

আজ বৃহস্পতিবার শুনানি শেষে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে টবি ক্যাডম্যান এসব কথা বলেন।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আদালত অবমাননার একটি মামলার শুনানি ছিল আজ। সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে শেখ হাসিনাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির হতে বলা হয়েছিল। তবে তিনি হাজির হননি। বিচারের স্বচ্ছতা, আসামিদের আবার সুযোগ দেওয়া এবং আইনের সঠিক ব্যাখ্যা গ্রহণের জন্য এই মামলায় সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ ওয়াই মশিউজ্জামানকে ‘অ্যামিকাস কিউরি’ (আদালতের আইনি সহায়তাকারী) হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।

শুনানি শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে টবি ক্যাডম্যান বলেন, এটি গুরুত্বপূর্ণ যে বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, যদিও এটি মূল অভিযোগ নয়। এটি উৎসাহব্যঞ্জক—ট্রাইব্যুনাল নিশ্চিত করেছে যে এই বিচারপ্রক্রিয়ায় অভিযুক্তের স্বার্থ রক্ষা করা হবে।

ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের বিশেষ উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের মানুষের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত যে বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছে এবং এটি সঠিক পথে আছে। শেখ হাসিনাকে যথাযথভাবে ট্রাইব্যুনালে হাজির হতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তিনি হাজির হননি। তিনি বিচারপ্রক্রিয়া বর্জন করেছেন। সেটা করার অধিকার তাঁর আছে। তা সত্ত্বেও ট্রাইব্যুনালকে যেকোনো অভিযুক্তের অধিকারকে যথার্থভাবে সুরক্ষা দিতে হবে। ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার স্বার্থে এই বিচারপ্রক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ব্যাপক সমর্থন প্রয়োজন।

বিচারপ্রক্রিয়ার সমালোচনা চলতে থাকবে—এমনটাই মনে করেন টবি ক্যাডম্যান। অবশ্য বিচারপ্রক্রিয়ায় অংশ না নিয়ে দূর থেকে সমালোচনা করার উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি।

বিচারের আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখতে কোনো ঘাটতি দেখছেন কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে টবি ক্যাডম্যান বলেন, তিনি এ কথা বলার কেউ নন যে এই বিচারপ্রক্রিয়া যথার্থ আছে। বিচারপ্রক্রিয়াকে সম্পূর্ণরূপে ন্যায্য করতে হলে তাতে পরিবর্তন আনার প্রয়োজন হয়। এই আইনি ব্যবস্থায় কিছু বিষয় আছে, যা তিনি পরিবর্তন দেখতে চান। আর এই পরিবর্তনের বাস্তবায়ন করার দায়িত্ব অবশ্যই সরকারের। বাংলাদেশের মানুষ এবং আন্তর্জাতিক অপরাধবিষয়ক বিচারব্যবস্থার জন্য আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে এই বিচার করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

আগের সরকার বিচারব্যবস্থাকে সম্পূর্ণরূপে ‘ছিনতাই’ করেছিল বলে মন্তব্য করেন ব্রিটিশ আইনজীবী টবি ক্যাডম্যান। তিনি বলেন, সেই প্রক্রিয়া বদলাতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকার সেটির পরিবর্তন এনেছে। যথার্থ মান বজায় রেখে এই সরকার বিচারপ্রক্রিয়া বাস্তবায়ন করছে।

যেভাবে বিচারকাজ এগিয়ে যাচ্ছে, তাতে কি আপনি খুশি—এমন প্রশ্নের জবাবে জবাবে টবি ক্যাডম্যান বলেন, এটা তাঁর খুশি হওয়ার প্রশ্ন নয়। বিচারপ্রক্রিয়াকে মূল্যায়ন (জাজ) করার তিনি কেউ নন। বাংলাদেশের মানুষ মূল্যায়ন করবে বিচারপ্রক্রিয়া সঠিক কি না। এই আদালত বাংলাদেশের মানুষের জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তাই তিনি খুশি কি না, তা সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিক। তিনি প্রসিকিউশনের পক্ষে কাজ করছেন। এই প্রসিকিউশন সর্বোচ্চ মান বজায় রেখে কাজ করছে বলে দাবি করেন তিনি।

আরও পড়ুনআইনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে শেখ হাসিনাকে ভারত ফেরত পাঠাবে, আশা টবি ক্যাডম্যানের১১ ডিসেম্বর ২০২৪.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এই ব চ র প রস ক র জন য সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

রাতে ঢাকা আসছেন শোয়েব আখতার

পাকিস্তানের কিংবদন্তি পেসার শোয়েব আখতার শনিবার দিবাগত রাতে ঢাকা আসছেন। আসন্ন বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) ঢাকা ক‌্যাপিটালসের মেন্টর হিসেবে যুক্ত হয়েছেন তিনি। 

ঢাকা ক্যাপিটালসের সিইও আতিক ফাহাদ রাইজিংবিডিকে বলেছেন, ‘‘ঢাকা ক্যাপিটালসের মেন্টর শোয়েব আখতার ১৩ থেকে ১৫ ডিসেম্বর এখানে কয়েকটি অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন। ১৬ তারিখ তিনি ফিরে যাবেন। পরবর্তীতে আমাদের সঙ্গে আবার যুক্ত হবেন।’’ 

ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৬১.৩৭ কিলোমিটার গতির বলের মালিক শোয়েবকে নিয়ে ঢাকা ক্যাপিটালস লিখেছে, ‘‘কৌশলের সঙ্গে গতির মেলবন্ধ। আমাদের মেন্টর- শোয়েব আখতার। গর্জন শুরু হোক!।’’

গত আসর দিয়ে বিপিএলে অভিষেক হয়েছিল ঢাকা ক্যাপিটালসের। প্রথম মৌসুমে মেন্টর হিসেবে তারা সঙ্গে পেয়েছিল পাকিস্তানের অফ স্পিন কিংবদন্তি সাঈদ আজমলকে। এবার নতুন রূপে, নতুন পরিকল্পনায় মেন্টর হিসেবে যুক্ত করেছে ‘রাওয়ালপিন্ডি এক্সপ্রেস’ শোয়েবকে। 

২০১১ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ শেষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানান শোয়েব। এরপর চ্যারিটি ফ্র্যাঞ্চাইজিতে খেললেও পেশাদার কোনো টুর্নামেন্টে ৫০ বছর বয়সী সাবেক পাকিস্তানি পেসারকে আর মাঠে দেখা যায়নি। 

খেলার ছাড়ার পর ধারাভাষ্যকার ও নিজের ইউটিউব চ্যানেলে ম্যাচ বিশ্লেষণ করতে দেখা যায়। 

ঢাকা ক্যাপিটালস তাদের বিপিএল অভিযান শুরু করবে ২৭ ডিসেম্বর সিলেটে। তাদের প্রথম প্রতিপক্ষ রাজশাহী ওয়ারিয়র্স।

ঢাকা/ইয়াসিন

সম্পর্কিত নিবন্ধ