কেউই চায় না দুর্নীতি বন্ধ হোক: ফাওজুল কবির খান
Published: 21st, June 2025 GMT
এ দেশের রাজনীতিবিদ-আমলা-কেউই চায় না দুর্নীতি বন্ধ হোক। অন্তর্বর্তী সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এ কথা বলেছেন। তিনি আরও বলেন, অপচয়ের পরিসীমা নেই। এসব যেন ভবিষ্যতে আর না ঘটে, সেদিকে নজর দেওয়া হচ্ছে।
ফাওজুল কবির আরও বলেন, অপচয়, দুর্নীতি ও অদক্ষতা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রধান অন্তরায়। পানির উৎস থেকে ছয় কিলোমিটার দূরে কেবল একজন মন্ত্রীর সুবিধার জন্য বিদ্যুৎকেন্দ্র বানানো হয়েছে। অপ্রয়োজনে রাস্তা করা হয়েছে, অব্যবস্থাপনায় রাষ্ট্রীয় অর্থ নষ্ট হয়েছে।
আজ শনিবার ঢাকায় সিরডাপ মিলনায়তনে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমিতির বাজেটসংক্রান্ত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সমিতির আহ্বায়ক মাহবুব উল্লাহ। দেশের অর্থনীতিবিদেরা এ আলোচনায় অংশ নেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের অবস্থান প্রসঙ্গে ফাওজুল কবির বলেন, ‘আমরা আত্মীয়স্বজনকে নিয়োগ না দিয়ে, ব্যবসা সুবিধা না দিয়ে এমন একটি দৃষ্টান্ত রেখে যেতে চাই, যা ভবিষ্যতের জন্য ইতিবাচক উদাহরণ হবে।’
বিদ্যুৎ খাত নিয়ে ফাওজুল কবির বলেন, নিজস্ব গ্যাসের মজুত কমে আসায় এখন আমদানি করা এলএনজি–নির্ভরতা বাড়ছে। এতে সরকারকে বড় অঙ্কের ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে সব সরকারি ভবনে সৌরবিদ্যুৎ স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করা সম্ভব। তিনি বলেন, ছাদে সৌর প্যানেল বসিয়ে বেসরকারি খাত থেকেও অন্তত দুই হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সুযোগ রয়েছে।
বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমিতির সদস্যসচিব হেলাল উদ্দিন বলেন, দেশের অর্থনৈতিক বিতর্ক ও বিকল্প ভাবনার কেন্দ্র হয়ে উঠবে এ সমিতি। ভবিষ্যতে বিভিন্ন অর্থনৈতিক ইস্যুতে পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তিপূর্ণ আলোচনা হবে। এখানে নির্দিষ্ট কোনো পক্ষের অবস্থান থাকবে না।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
ঘোষণাপত্রে সংবিধান নিয়ে প্রশ্ন তোলার প্রতিবাদ গণফোরামের
জুলাই ঘোষণাপত্রে ১৯৭২–এর সংবিধান প্রণয়নপদ্ধতি এবং সাংগঠনিক কাঠামোগত দুর্বলতা নিয়ে যে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, তাতে তীব্র ক্ষোভ, নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে গণফোরাম। বুধবার বিকেলে গণফোরাম সভাপতি পরিষদের এক সভায় এ নিন্দা জানানো হয়। গণফোরামের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
গণফোরামের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সুব্রত চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন দলের সাধারণ সম্পাদক মো. মিজানুর রহমান, সভাপতি পরিষদের সদস্য জগলুল হায়দার আফ্রিক, মোশতাক আহমেদ, মেজবাহ উদ্দিন, সেলিম আকবর, সুরাইয়া বেগম, শাহ নূরুজ্জামান প্রমুখ।
সভায় নেতারা বলেন, ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীনতা ঘোষণা এবং ১০ এপ্রিলের প্রক্লেমেশন অব ইনডিপেনডেন্টের ভিত্তিতে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা এবং স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর এর ধারাবাহিকতায় ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের সংবিধান রচিত হয়। দীর্ঘ ৫৩ বছরে কোনো রাজনৈতিক দল বা সরকার ’৭২–এর সংবিধানের প্রণয়নপদ্ধতি নিয়ে কখনো প্রশ্ন উত্থাপন করেনি।
সংবিধান সময়ের প্রয়োজনে জন আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী সংশোধন, সংযোজন ও পরিমার্জন হতে পারে উল্লেখ করে সভায় বলা হয়, সংবিধানের প্রণয়নপদ্ধতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হলে মুক্তিযুদ্ধকেই বিতর্কিত করা হয়। একমাত্র মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী শক্তিই বিভিন্ন সময়ে মুক্তিযুদ্ধ এবং ’৭২–এর সংবিধান নিয়ে প্রশ্ন তুলে থাকে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ’৭২–এর সংবিধানের প্রণয়নপদ্ধতি এবং কাঠামোগত দুর্বলতা নিয়ে জুলাই ঘোষণাপত্রে বিতর্ক সৃষ্টি করার কারণে মুক্তিযুদ্ধ ও জুলাই–আগস্ট গণ–অভ্যুত্থানকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে ফেলেছে।
গণফোরামের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘শুধু ৭২ সালের সংবিধানকে দায়ী করে পরবর্তী সরকারগুলোর রাষ্ট্র পরিচালনার ব্যর্থতাকে আড়াল করার হীন মানসিকতা পরিলক্ষিত হয়েছে। রাষ্ট্র পরিচালনায় রাজনৈতিক দলের ব্যর্থতাকে কোনোভাবেই সংবিধানের ওপর চাপিয়ে দেওয়া যুক্তিসংগত হবে না।’
জুলাই ঘোষণাপত্র তৈরি ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মতামত গ্রহণে বৈষম্য করা হয়েছে বলেও অভিযোগ গণফোরামের। দলটির নেতারা বলেন, বৈষম্যহীন রাষ্ট্রব্যবস্থা গঠনের দাবিতে জুলাই গণ–অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছে। জুলাই ঘোষণাপত্রে ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রব্যবস্থার কোনো রূপরেখা স্থান পায়নি। জুলাই ঘোষণাপত্রে একতরফা, পক্ষপাতদুষ্ট ও ইতিহাস বিকৃতির অপচেষ্টা লক্ষণীয়। অন্যদিকে ৩৬ জুলাই উদ্যাপন অনুষ্ঠানে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বৈষম্য সৃষ্টি করা হয়েছে, যা কাম্য নয়।