এবার একসঙ্গে প্রসেনজিৎ, শ্রাবন্তী, দর্শনা
Published: 27th, June 2025 GMT
অফট্রাকের সিনেমাতে প্রসেনজিৎ এবং শ্রাবন্তী দুইজনই আগে কাজ করেছেন এবার যুক্ত হলো দর্শনা বণিকের নাম। এই ত্রয়ীকে দেখা যাবে ‘দেবী চৌধুরানি’ সিনেমাতে।
সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের অমর সৃষ্টি ‘দেবী চৌধুরানি’ এর আগে ছোট পর্দা ও বড় পর্দা দুই মাধ্যমেই এসেছে। এবার নতুন করে বড় পর্দায় আনছেন পরিচালক শুভ্রজিৎ মিত্র।
সিনেমাটির শুটিংয়ের কাজ শেষ হয়েছে। ভারতীয় গণমাধ্যমের তথ্য, ২৬ জুন বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের জন্মদিনে তারই জন্মভিটায় সিনেমার প্রচারণা শুরু করে ‘দেবী চৌধুরানি’ টিম।
আরো পড়ুন:
আমাদের অনেক আগেই বিচ্ছেদ হওয়ার কথা ছিল: কাজল
শ্রাবন্তীকে নিয়ে সিনেমা বানাতে চান প্রাক্তন স্বামী রাজীব, যা বলেছেন শ্রাবন্তী
‘দেবী চৌধুরানি’ উপন্যাস অবলম্বনে প্রসেনজিৎ, শ্রাবন্তী, দর্শনাদের নিয়ে এই সিনেমা নির্মাণ করেছেন পরিচালক শুভ্রজিৎ মিত্র।
এই সিনেমাতে ভবানী পাঠক চরিত্রে দেখা যাবে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়কে। উপন্যাসের দুই অন্যতম চরিত্র নিশি হয়েছেন বিবৃতি চট্টোপাধ্যায় ও সাগরের চরিত্রে অভিনয় করবেন দর্শনা বণিক।
প্রসেনজিৎ বলেন, ‘‘সিনেমাটি তৈরি হওয়ার পর থেকেই আমরা ভাবছিলোম এর প্রচার কবে থেকে শুরু করবো। আমার মনে হয়েছিল, এই দিনটা অর্থাৎ বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের জন্মদিনটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। বাংলা সাহিত্যেই তো শুধু নয়, বঙ্কিমবাবু তো পুরো দেশেরই সাহিত্য জগতে এক উজ্জ্বল নাম। আজকের দিনে তাকে শ্রদ্ধা জানিয়ে আমরা মানুষের কাছে সিনেমার প্রচার শুরু করলাম।”
পরিচালক শুভ্রজিৎ বলেন, ‘‘এটি বাংলার ইতিহাস নিয়ে তৈরি সিনেমা। ঐতিহাসিক চরিত্রগুলো জীবন্ত হয়ে উঠেছে সিনেমাতে।’’
ঢাকা/লিপি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শ র বন ত চর ত র
এছাড়াও পড়ুন:
একটি আপেল যেভাবে বদলে দিয়েছে মহাবিশ্বের ধারণা
বিজ্ঞানী আইনস্টাইনের সাধারণ আপেক্ষিকতার তত্ত্ব বিখ্যাত বিজ্ঞানী আইজ্যাক নিউটনের মহাকর্ষ বলকে স্থান–কালের বক্রতা দিয়ে প্রতিস্থাপন করেছিল। এর মাধ্যমে সাধারণ আপেক্ষিকতার তত্ত্ব আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানকে অন্য এক মাত্রায় নিয়ে যায়। যখনই আপনি একটি কাপ ফেলে দেন বা নদীতে জোয়ার আসতে দেখেন, তখনই মহাকর্ষের প্রমাণ পাওয়া যায়। আবার আপনার ওজন মাটির ওপর চাপ সৃষ্টি করছে বলে অনুভব করার বিষয়টি মহাকর্ষের অভিজ্ঞতা বলা যায়। প্রাকৃতিক বিভিন্ন বলের মধ্যে সবচেয়ে পরিচিত হলেও মহাকর্ষ বলকে সবচেয়ে রহস্যময় বলা হয়। এই বল আমাদের পৃথিবীর কক্ষপথে ধরে রাখে। বলা যায়, মহাবিশ্বের সব গ্যালাক্সির ভাগ্য নির্ধারণ করে এই বল।
প্রকৌশলীরা স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ, কক্ষপথের অবস্থান মঙ্গলে মিশন পরিকল্পনার সময় মহাকর্ষ বলের ওপর নির্ভর করেন। মাটির নিচের পানির ভান্ডার বা হিমবাহের বরফ গলে যাওয়া শনাক্ত করতেও ব্যবহার করা হচ্ছে মহাকর্ষ বলের তথ্য। অনেক আগে এই মহাকর্ষ বল সম্পর্কে মানুষের তেমন ধারণা ছিল না। আইজ্যাক নিউটন বিজ্ঞানের অন্যতম গভীর এই বল সম্পর্কে বেশ বিস্তারিত ধারণা প্রবর্তন করেন। তিনিই প্রথম প্রশ্ন করেন, কোন বলের কারণে গাছের আপেল মাটিতে পড়ে? কোন শক্তির জোরে চাঁদ পৃথিবীর চারপাশে কক্ষপথে অবস্থান করছে?
বিজ্ঞানী নিউটন ও আপেলগাছ নিয়ে বেশ জনপ্রিয় গল্প প্রচলিত আছে। ১৬৬৬ সালের দিকে নিউটন লিংকনশায়ারে তাঁর পারিবারিক বাড়ির বাগানে অবস্থানের সময় স্বাভাবিক এক ঘটনা পর্যবেক্ষণ করেন। একটি আপেলকে গাছ থেকে পড়তে দেখেন তিনি। সেই ঘটনা নিউটনকে নতুন ভাবনার সুযোগ করে দেয়। তিনি ভাবতে থাকেন, একটি আপেল যদি মাটিতে পড়ে তাহলে চাঁদও কি পড়ে যাচ্ছে? সেই চিন্তা থেকেই মহাকর্ষ বলের সর্বজনীন সূত্র আবিষ্কার করেন নিউটন। তাঁর ভাষ্যে, মহাবিশ্বের প্রতিটি বস্তু অন্য প্রতিটি বস্তুকে এমন একটি বল দিয়ে আকর্ষণ করে যা তাদের ভরের সমানুপাতিক ও তাদের দূরত্বের বর্গের ব্যস্তানুপাতিক। বিজ্ঞানী নিউটন পৃথিবী ও মহাবিশ্বের গতি ব্যাখ্যা করেন এই সূত্রের মাধ্যমে।
আরও পড়ুনপৃথিবী মহাবিশ্বের কেন্দ্র নয় বলে প্রমাণিত হয় যে ছবির কারণে০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫১৯১৫ সালে বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইন তাঁর সাধারণ আপেক্ষিকতার তত্ত্বের মাধ্যমে মহাবিশ্ব সম্পর্কে নতুন ধারণা দেন। তিনি যুক্তি দেন যে মহাকর্ষ বস্তুকে একসঙ্গে টেনে আনা কোনো বল নয়, বরং ভর ও শক্তি দ্বারা স্থান–কালের নিজস্ব বাঁক বা বক্রতা। বিভিন্ন গ্রহ চলছে মহাজাগতিক কাঠামোর বক্রতা অনুসরণ করে। এটি বোঝার একটি কার্যকর উপায় হচ্ছে স্থান–কালকে একটি টান টান কাপড়ের মতো কল্পনা করা। এর ওপর একটি ভারী টেনিস বল রাখলে কাপড়টি কিছুটা দেবে যায়। তখন কাছাকাছি থাকা সব ছোট বস্তুকে সেই দেবে যাওয়া অবস্থানের দিকে নেমে যাবে। ঠিক একইভাবে তারা ও গ্রহের মতো বিশাল বস্তুকে স্থান–কাল বাঁকিয়ে দেয়। এতে চারপাশের সবকিছু চলতে থাকে।
রহস্যময় মহাকর্ষ বল বেশ দুর্বলতম বল। এই বল সব পদার্থের ওপর, সব রকম দূরত্বজুড়ে কাজ করে। কখনোই বন্ধ হয় না। মহাজগৎকে শাসন করলেও মহাকর্ষ বল প্রকৃতির অন্যান্য বলের তুলনায় আশ্চর্যজনকভাবে দুর্বল। একটি প্রোটন ও একটি ইলেকট্রনের মধ্যেকার তড়িৎচৌম্বকীয় আকর্ষণ মহাকর্ষ বলের চেয়ে প্রায় ১ হাজার ৩৬ গুণ শক্তিশালী। এ কারণেই পরমাণু, অণু ও তাদের রসায়ন তড়িৎচৌম্বকত্ব দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়।
আরও পড়ুনমহাবিশ্ব দ্রুত সম্প্রসারণ হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা১৩ জুলাই ২০২৫নিউটনের সেই আপেলবাগান থেকে পাওয়া প্রশ্ন ও আইনস্টাইনের বক্র স্থান–কাল ধারণার মাধ্যমে আমাদের মহাবিশ্ব সম্পর্কে ধারণা বদলে গেছে। মহাকর্ষ বল দৈনন্দিন জীবন থেকে শুরু করে চরম মহাজাগতিক ঘটনা পর্যন্ত সবকিছু শাসন করে। এই বল গ্রহকে আকার দেয়। ধূমকেতুকে পরিচালনা করে। বিভিন্ন গ্যালাক্সিকে একসঙ্গে বেঁধে রাখে। মহাজগতের সবচেয়ে ঘন কোণে এই বল নিউট্রন তারা ও ব্ল্যাকহোলের মতো বহিরাগত বস্তু তৈরি করে। আইনস্টাইনের তত্ত্ব অনেক আগেই এসব বিষয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিল।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস