একজন মানুষ, যিনি জীবনের অর্ধশত বছর ব্যয় করেছেন অন্যের ‘শেষ ঠিকানার’ মাটি তৈরি করতে। তিনি নিজেও এবার পাড়ি দিলেন সেই অজানা ঠিকানায়। কিশোরগঞ্জের ইটনার সেই মানুষটির নাম মনু মিয়া। বয়স হয়েছিল ৬৭ বছর।

বিনা পারিশ্রমিকে কবর খুঁড়তেন, কেবলই মানবতার টানে। তিন হাজারেরও বেশি কবর খুঁড়েছেন। কোনো টাকা না নিয়ে। তাই আশপাশের গ্রামে তাকে সবাই জানতেন ‘শেষ ঠিকানার কারিগর’ নামে।

গত মাসে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন মনু মিয়া। তাকে ঢাকায় নিয়ে আসা হয় চিকিৎসার জন্য। সে সময় হাসপাতালে তার পাশে ছায়ার মতো ছিলেন জনপ্রিয় অভিনেতা খায়রুল বাসার। শুধু পাশে ছিলেন না, মনু মিয়ার জন্য ছুটে গিয়েছিলেন হাসপাতালেও।

শনিবার (২৮ জুন) সকালে ফেসবুকে মনু মিয়ার সঙ্গে তোলা দুটি ছবি পোস্ট করে আবেগভরা স্মৃতিচারণ করেন খায়রুল বাসার। লিখেছেন, ‘মনু কাকা শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। এতদিন তিনি ঢাকায় ছিলেন। ৩ দিন আগে উনি বাড়ি ফিরেছেন। বলছিলেন, আগের চেয়ে বেশ সুস্থ আছেন। ওনার সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার ইচ্ছা আল্লাহ কবুল করেছেন।সুস্থ থেকেই উনি আল্লাহর ডাকে সাড়া দিতে চেয়েছিলেন, সেই দোয়াও চাইতেন।’

তিনি আরো লিখেছেন, ‘উনার মহৎ কর্মের ফলস্বরূপ আল্লাহ নিশ্চয়ই উনাকে ওনার স্বপ্নের ঘোড়া উপহার দেবেন। আল্লাহ উনাকে জান্নাতবাসী করুন। সবাই মনু কাকার জন্য দোয়া করবেন।’

মনু মিয়ার জীবনের আরেকটি বড় গল্প ছিল তার সেই প্রিয় ঘোড়া, যা কিনেছিলেন নিজের জমি বিক্রি করে। কবর খুঁড়তে দ্রুত ছুটে যেতে হলে তো যন্ত্রপাতি আর নিজেকে নিয়েই ছোটেন, আর তাতে সবচেয়ে ভরসা ছিল ঘোড়াটি। অথচ ঠিক যখন মনু মিয়া ঢাকায় হাসপাতালে, ঠিক তখনই কেউ বা কারা হত্যা করে তার সেই বিশ্বস্ত সঙ্গীকে। খবরটি ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক মাধ্যমে, আর তা চোখে পড়ে অভিনেতা খায়রুল বাসারের।

বাসার তখন ঘোষণা দেন, তিনি মনু মিয়াকে একটি নতুন ঘোড়া কিনে দেবেন। কিন্তু মনু মিয়া তার কাছে ঘোড়া চাননি-চেয়েছিলেন শুধু দোয়া। বলেছিলেন, ‘আমার জন্য দোয়া কইরেন বাবা, আল্লাহ যেন ভালো কইরা বাড়ি ফিরাই।’

সেই দোয়া কবুল হয়েছিল—তিন দিন আগেই বাড়ি ফিরেছিলেন তিনি। আর এবার চিরদিনের জন্য ফিরে গেলেন আরো এক ঠিকানায়-যার জন্য তিনি এত বছর অন্যদের পথ করে দিয়েছেন।

ঢাকা/রাহাত/সাইফ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন য আল ল হ

এছাড়াও পড়ুন:

বন্দরে আওয়ামীলীগ নেতা হুমায়ুন গ্রেপ্তার 

বন্দরে অপরেশন ডেভিল হান্ট অভিযানে  আওয়ামীলীগ নেতা হুমায়ুন (৩৮)কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ধৃত আওয়ামীলীগ নেতা হুমায়ুন বন্দর উপজেলার কলাগাছিয়া ইউনিয়নের ফরাজিকান্দা এলাকার মাকসুদুর রহমান মিয়ার ছেলে।

ধৃতকে  সোমবার   (১৭ নভেম্বর) দুপুরে বন্দর থানার দায়েরকৃত ১১(১১)২৫ নং মামলায় আদালতে প্রেরণ করেছে পুলিশ। এর আগে গত রোববার   (১৬ নভেম্বর) রাতে বন্দর উপজেলার ফরাজিকান্দা  এলাকায়  অভিযান চালিয়ে ওই নেতাকে  গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় পুলিশ।

উল্লেখ্য, গত ৬ নভেম্বর দিবাগত রাত পৌনে ৯টায় বন্দর থানার  ঢাকা টু চট্টগ্রাম মহাসড়কের কেওঢালা মেগাসিটি ফিলিং স্টেশনের সামনে পাঁকা রাস্তার উপরে জড়ো হয় নিষিদ্ধ ঘোষিত রাজনৈতিক সংগঠন আওয়ামীলী ও অঙ্গ সংগঠন ৫০/৫৫ জনের একটি দল।

পরে তারা শেখ হাসিনা ও অয়ন ওসমানের ব্যানারে একটি ঝটিকা মশাল মিছিল বের করলে তা পুলিশের নজরে আসলে ওই সময় পুলিশ উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে ঘটনাস্থলে আসলে ওই সময় ১৫/২০টি মোটরসাইকেল যোগে বি়ভিন্ন শ্লোগান দিতে দিতে দ্রুত ঢাকা দিকে চলে যায়।এ ঘটনায় জড়িত থাকার অপরাধে আওয়ামীলীগ নেতা হুমায়ুনকে গ্রেপ্তার করে ওই মামলায় তাদের আদালতে প্রেরণ করা হয় । 
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ