Samakal:
2025-08-13@12:09:44 GMT

বাঁধ ভেঙে পারকি সৈকতে খাল

Published: 28th, June 2025 GMT

বাঁধ ভেঙে পারকি সৈকতে খাল

চরের বাঁধ ভেঙে জোয়ারের পানি ওঠানামার কারণে আনোয়ারার পারকি সৈকতে খালের সৃষ্টি হয়েছে। এতে বালু সরে গিয়ে পলি মাঠি জমেছে সৈকতে। প্রবল ঢেউয়ে মুখ থুবড়ে পড়েছে ৩ কিলোমিটারজুড়ে থাকা সারি সারি ঝাউগাছ। এখন সাগরের ঢেউ সরাসরি আঘাত হানছে সৈকতের তীরে। এতে ভাঙছে বেড়িবাঁধ ও আশপাশের স্থাপনা। 
স্থানীয়দের অভিযোগ, কর্ণফুলী টানেল চালুর অনেক আগে থেকেই দীর্ঘ তিন দশকের বেশি সময় ধরে পারকি সৈকতকে পূর্ণাঙ্গ পর্যটন স্পট হিসেবে গড়ে তুলতে স্থানীয় ও দর্শনার্থীদের দাবি যেন মুখ থুবড়ে পড়েছে।  টানেল চালুর পর পারকি সৈকতের সম্ভাবনা অনেক গুণ বেড়ে গেলেও আমলাতান্ত্রিক জটিলতা ও বৈষম্যের গ্যাঁড়াকলে আটকা পড়ে দিন দিন এই সৈকত পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণে হুমকিতে পড়েছে। শত শত ঝাউগাছ রক্ষায় কোনো পদক্ষেপ নেই। বঙ্গোপসাগরের জোয়ারে পানি ও অতি বৃষ্টির কারণে সৈকত রক্ষার বাঁধ ভেঙে সৃষ্ট খাল মেরামতের কোনো পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও স্থানীয় প্রশাসনের। এতে পলি জমে কৃষিজমির রূপ নিচ্ছে সৈকত। 
সরেজমিন পারকি সমুদ্রসৈকত ঘুরে দেখা যায়, বিচের দক্ষিণ পাশের প্রায় ঝাউগাছ বিলীন হয়ে গেছে। যে কয়েকটি বাকি আছে সেগুলোও বেঁকে গেছে। বিচের এই পাশের ডোবায় ঢুকছে সাগরের পানি। ভেঙে গেছে লুসাই পার্কের সীমানা বেড়িবাঁধ, বিলীন হয়ে গেছে স্থানীয়দের তৈরি করা বেড়িবাঁধ। সাগরে চলে যাচ্ছে বিচের পাশে ব্যক্তিমালিকানাধীন জায়গা। বিচের সামনে কোনো প্রতিবন্ধক না থাকায় সাগরে ঢেউয়ের তীব্রতা পৌঁছে যাচ্ছে বিচে গড়ে ওঠা দোকানপাট-স্থাপনায়।
স্থানীয় বিচ-সংশ্লিষ্ট প্রবীণ বাসিন্দাদের সূত্রে জানা যায়, কর্ণফুলীর মোহনায় পাকিস্তান আমলে ২টি পাথরের বাঁধ ছিল, বন্দরের নাব্যতা বাড়ানোর জন্য ফ্রি ড্রেজিংয়ের ফলে আনোয়ারা সাইডে দেয়ালটি ভেঙে যায়। যার কারণে সাগরে ঢেউ সরাসরি বিচে আঘাত করছে। এ ছাড়া বারআউলিয়া থেকে পরোয়াপাড়া পর্যন্ত বেড়িবাঁধ হয়েছে, ব্লক দেওয়া হয়েছে। যার কারণে জোয়ারের স্রোত এসে পড়ছে পারকি বিচে। বিচ এলাকায় ঢেউয়ের তীব্রতা বাড়ার বিষয়ে তারা আরও জানান, আগে জেলেদের জাল সমুদ্রের গভীরে বসানো হলেও এখন জাল বসানো হচ্ছে সমুদ্র উপকূলের কাছেই। যার কারণে জোয়ার-ভাটার পানির স্রোতের প্রবাহ বিঘ্নিত হচ্ছে।
স্থানীয়রা আরও জানান, ২০০০ সালের আগে পারকি বিচে বনায়ন করা হয়েছিল। সেগুলো ভেঙে যাওয়ায় নতুন করে ১৩ একর জায়গাজুড়ে আবারও বনায়ন করা হয়; যা এখন প্রায় বিলুপ্তির দিকে।
চট্টগ্রাম শহরের হালিশহর থেকে বেড়াতে আসা পর্যটক নাছির উদ্দীন বলেন, কর্ণফুলী টানেল চালুর পর পারকি সৈকতের গুরুত্ব অনেক। টানেল দেখতে এসে পারকিতে বেড়াতে আসেনি– এমন পর্যটক কমই আছে। কিন্তু পারকি সৈকত প্রচার-প্রচারণায় এগিয়ে থাকলেও পর্যাপ্ত পর্যটন সুবিধা না থাকায় পরিবার নিয়ে বেড়াতে এসে আমরা হতাশ। সৈকতের উন্নয়নের জন্য সংশ্লিষ্টদের পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
পারকি সমুদ্র সৈকতে আসা আরাফাত হোসেন 

নামের এক পর্যটল জানান, দিনদিন পারকি সমুদ্র সৈকতের সৌন্দর্য কমে যাচ্ছে, এখন ঢেউয়ের কারণে বাঁধ, গাছ, দোকানপাট ভেঙে যাচ্ছে। এসব রক্ষায় সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে।
পারকি সমুদ্র সৈকতের ব্যবসায়ী ইলিয়াস আলী জানান, আমরা লাখ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে পারকি সমুদ্র সৈকতে ব্যবসা করছি, আমার লুসাই পার্কের বাঁধ ভেঙে গেছে, এখানে পর্যটন কমপ্লেক্স নির্মাণ হচ্ছে, রয়েছে সরকার-বেসরকারি বিভিন্ন স্থাপনা। তাই এসব রক্ষার্থে বীচ এরিয়ায় বাঁধ দেওয়া প্রয়োজন।
পারকি বীচ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো.

কাশেম জানান, শত শত ব্যবসায়ীরা পারকি বীচকে ঘিরে নিজেদের রুজিরোজগারের ব্যবস্থা করছেন, পানির স্রোত এবং ঝাউগাছ ভেঙে পড়ে আমাদের দোকানপাটের ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। এই বীচটা আমাদের সম্পদ এটি আমাদের রক্ষা করতে হবে।
এবিষয়ে বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্য আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাহমিনা আক্তার জানান, বিষয়টি সম্পর্কে পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং উর্ধতন কর্মকর্তাকে জানানো হবে।
চট্টগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শওকত ইবনে শাহীদ বলেন, পারকি বীচ থেকে টানেল পর্যন্ত বেড়িবাঁধ নির্মাণের বিষয়ে পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে তবে এখনো তা কাগজেকলমে পাশ হয়নি। এটার জন্য স্থানীয়দের প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে ভূমিকা রাখতে হবে বলে জানান তিনি।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স কত স কত র ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

মানুষের মন্দির

মানুষের মন্দির

এটি ছিল এক বিষণ্ন রাত

ফ্যাকাশে আলোর সঙ্গে,

হৈমন্তী চাঁদের আলোয়

আলোকসজ্জিত আকাশ।

আমরা আনন্দে একত্র হয়েছিলাম

শরতের রোদে রাঙা দুপুরে

আমাদের ঘামের ফসল হাতে

. . . . . . . . . . .

আমরা অক্লান্ত পরিশ্রম করেছি

আমাদের বপনের ঋতুতে

আমাদের যত্নের ঋতুতে,

আমরা ছিলাম অধ্যবসায়ী

আমরা ছিলাম নিবেদিত

আমাদের প্রচেষ্টা প্রতি,

এখন সময় এসেছে ফসল তোলার।

এই সব দিনে

আমরা ভোগ করি পরিশ্রমের ফসল

আমাদের আগে ছিল যারা,

বুঝি না আত্মত্যাগের মানে

যা জন্ম নিয়েছে

নিজের গড়া গৌরবের ছায়া হতে।

আমারও লোভার্ত হাত পৌঁছেছিল সেই আলমারিতে

একটি নিরবচ্ছিন্ন চেতনা নিয়ে,

প্রাচুর্যের মানে বুঝতে অপারগ,

এক নিঃশব্দ অস্বীকৃতির ভারে।

. . . . . . . . . . . .

এই সময়ে

কিছু মানুষ আছে,

আমার প্রতিবেশীরা,

আমার সহপথিক মানবেরা

অক্লান্ত পরিশ্রম করে, তবু ভোগে যন্ত্রণায়।

এদিকে আমার কঠিন চেতনা

আসে আর যায়

সহানুভূতির প্রাঙ্গণ দিয়ে,

ফেলে রেখে যায়

আমার জন্মগত ও ঈশ্বরপ্রদত্ত করুণা,

আমার অসংবেদনশীলতার দ্বারে।

.. . . . . . . . . . .

দশমাংশ কী,

এ কি শুধু এইটুকুই...

আমাদের সীমিত পকেট আর পার্স খালি করা

চাঁদার ঝুড়িতে ফেলার জন্য?

. . . . . . . .

আমি আমার দশম ভেড়া কোথায় দেব,

আমার দশম ছাগল,

আর কোন মন্দিরে...?

এ কি মানুষের তৈরি মন্দির,

ইট, চুনসুরকি আর কাঠ দিয়ে গড়া,

যেখানে আমরা জমায়েত হই

আমাদের স্বেচ্ছায় জমানো অস্থিরতা উজাড় করতে,

নাকি এটা তার চেয়ে বড় কিছু,

একটি মন্দির যা বিরাট কোনো চেতনার জগতে বিরাজমান,

যা আমাদের সকলকে আপন করে জড়িয়ে ধরে?

যখন

যখন সবকিছু ধসে পড়বে,

তখন তুমি কোথায় দাঁড়িয়ে থাকবে?

যখন আকাশ নিজেকে গুটিয়ে নেবে,

তখন তুমি কীভাবে নিশ্বাস নেবে?

যখন তারারা তাদের আলো নিভিয়ে দেবে,

তখন কি আমাদের স্বপ্ন দেখার ক্ষমতাটাও

অদৃশ্য হয়ে যাবে?

যখন হাসি ব্যথার জন্ম দেবে,

তখন কি আমরা

অর্থবোধক অনুভূতি থেকে

সম্পূর্ণ শূন্য হয়ে যাব?

যখন আমরা আর আহারের জন্য ক্ষুধার্ত থাকব না,

তখন কি আমরা সময়ের মৃত্যুযাত্রায়

নীরবে আত্মসমর্পণ করব?

যখন দিগন্তের শেষ

আমাদের সামনে দাঁড়াবে,

তখন কি আমরা ছুটে বেড়াব

সবকিছু মনে করতে, ফিরে পেতে

যা আমরা অবহেলা করেছি,

ধ্বংস করেছি, ভুলে গেছি?

যখন সব ‘কেন’র উত্তর মিলবে,

তখন কি আমরা অবশেষে বুঝতে পারব?

যেমন মি. স্মিথ বলেছিল নিওকে,

আমরা একধরনের ভাইরাস,

একটা বিপজ্জনক জাত

যাদের সবচেয়ে বড় ক্ষমতা হলো

ধ্বংস করার দক্ষতা।

এই আত্মনির্মিত দুঃস্বপ্ন

কবে শেষ হবে?

কবে?

সম্পর্কিত নিবন্ধ