শেরপুরের মিজানুরের বাগানে আছে ৫০ জাতের বিদেশি আঙুর
Published: 29th, June 2025 GMT
থোকায় থোকায় ঝুলছে লাল, কালো ও সবুজ রঙের বিদেশি আঙুর। সুন্দর এই দৃশ্য এখন দেখা যাচ্ছে শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার পাহাড়ি মেঘাদল গ্রামে। সেখানে পরীক্ষামূলকভাবে আঙুর চাষ করে সফল হয়েছেন তরুণ উদ্যোক্তা মিজানুর রহমান।
এ উদ্যোক্তা ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, মিজানুরের বাবা জলিল মিয়া ২০২২ সালে ভারতে ঘুরতে গিয়ে শখের বশে প্রথমে দুই জাতের ১০টি আঙুরের চারা নিয়ে আসেন। সেগুলো নিজের জমিতে রোপণ করেন। চারা লাগানোর ১০ মাস পর তাঁর বাগানে আসতে থাকে মিষ্টি ফল।
বাবার অনুপ্রেরণায় মিজানুর ২০ শতাংশ জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে আঙুর চাষ শুরু করেন। এতে তিনি ৫০ জাতের আঙুরগাছ রোপণ করেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য একেলো, ডিকসন, ব্ল্যাক ম্যাজিক, বাইনুকা, ইসাবেলা, পারলেট, আনাব-এ-শাহি ইত্যাদি।
মিজানুরের বাগানে বর্তমানে ১৫০টি গাছ আছে। এর মধ্যে ৪০টি গাছে ফল এসেছে। ১৫ থেকে ২০টি গাছে ১০ থেকে ১২ কেজি করে ফল ধরেছে। বাকি গাছগুলোর বয়স কম থাকায় দেড় থেকে দুই কেজি করে ফল এসেছে। সম্প্রতি তিনি স্বল্প পরিমাণে সবুজ আঙুর প্রতি কেজি ২৫০-৩০০ টাকা দরে বিক্রি করেছেন।
গাছ রোপণ ও পরিচর্যায় মিজানুরের ব্যয় হয়েছে আড়াই লাখ টাকা। যে পরিমাণ ফলন হয়েছে, তাতে তিনি আশাবাদী। আগামী দিনে তিনি বাণিজ্যিকভাবে আঙুর চাষের পরিকল্পনা করছেন। মিজানুর ও তাঁর বাবা মিলে উৎপাদন করেছেন আঙুরের চারা। মিজানুরের স্বপ্ন আঙুরের বাগানটি বড় পরিসরে তৈরি করার।
মিজানুরের সফলতা দেখে এলাকার অনেকে আঙুর চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। প্রতিদিন বিভিন্ন স্থান থেকে মিজানুরের আঙুরবাগান দেখতে আসেন অনেকে। কেউ কেউ মিজানুর রহমানের কাছে পরামর্শ নিচ্ছেন।
মেঘাদল গ্রামের বাসিন্দা আশিকুর রহমান বলেন, ‘মিজানুরের বাগানের আঙুর খেয়েছি। মিষ্টি। এই বাগানের ফল দেখে অনেক কৃষক আঙুর চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।’
মিজানুরের বাবা জলিল মিয়া বলেন, ভারত থেকে তিনি শখের বশে আঙুরের চারা এনেছিলেন। পরে দুই ধাপে আরও কিছু চারা আনেন। মনে করেছিলেন, চারাগুলো হবে না। কিন্তু আস্তে আস্তে সেগুলো বড় হয় এবং ফলনও আসে।
মিজানুর রহমান বলেন, ভারত থেকে বাবার নিয়ে আসা আঙুরগাছ পরিচর্যার পর ফল আসে। এতে আঙুর চাষে তিনি নিজে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। পরে ইউটিউব দেখে ঢাকা থেকে ৫০ জাতের আঙুরের চারা সংগ্রহ করেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাবরিনা আফরিন বলেন, ‘আমি বাগানটা দেখেছি। মিজানুর দুই বছর ধরে পরীক্ষামূলকভাবে আঙুর চাষ করছেন। আগামী দিনে নতুন করে আরও বড় আকারে তিনি আঙুর চাষের পরিকল্পনা করছেন। এতে কৃষি কার্যালয় থেকে তাঁকে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র রহম ন
এছাড়াও পড়ুন:
নানা আয়োজনে বেরোবিতে রোকেয়া দিবস পালিত
রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে নানা আয়োজনে রোকেয়া দিবস ২০২৫ পালিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (০৯ ডিসেম্বর) সকালে প্রশাসনিক ভবনের সামনে জাতীয় সংগীতের সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. শওকাত আলী ।
এরপর বেলুন ও ফেস্টুন উড়িয়ে শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য অধ্যাপক মাছুমা হাবিব।
বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক ছিলেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক হোসেন উদ্দিন শেখর।
উপাচার্য অধ্যাপক শওকাত আলীসহ আমন্ত্রিত অতিথিরা শোভাযাত্রায় অংশ নেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদ, বিভাগ, দপ্তর ও আবাসিক হলের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা শোভাযাত্রায় যোগ দেন। শোভাযাত্রাটি শহীদ আবু সাঈদ চত্বর মডার্ন মোড় ঘুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা স্মারক মাঠে এসে শেষ হয়।
সকাল সাড়ে ১০টায় স্বাধীনতা স্মারক মাঠে রোকেয়া দিবস-২০২৫ উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক মাছুমা হাবিব।
তিনি বলেন, “রোকেয়ার দেখানো পথ ধরে আজ দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নারী শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বেড়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও প্রত্যন্ত অঞ্চলেও নারী শিক্ষার প্রসার ঘটেছে। নারী জাগরণ ও নারীশিক্ষার প্রসারে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় আগামী দিনে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখবে।”
বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম বলেন, “লেখক হিসেবে রোকেয়া সাখাওয়াত ছিলেন বাস্তবতবাদী। এটি রোকেয়ার রচনা বা কাজের প্রধান সূত্র। রোকেয়া তুলনামূলক কম প্রবন্ধ লিখলেও বাংলা ভাষায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং খুবই ব্যক্তিত্বসম্পন্ন স্বতন্ত্র ধারার প্রাবন্ধিক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন।”
গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হোসেন উদ্দিন শেখর বলেন, “রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন বিশ শতকের প্রথম দিকে নারীসমাজে আধুনিক ও যুগোপযোগী শিক্ষার ব্যাপক প্রচার ও প্রসারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন।”
রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শওকাত আলী বলেন, “নারী জাগরণ, শিক্ষার প্রসার, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার ও সাম্যের চেতনায় রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন যে স্বপ্ন লালন করেছিলেন, তারই ধারাবাহিকতায় আজ নারীরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখছেন।”
আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন রোকেয়া দিবস উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক মো. তাজুল ইসলাম, বাংলা একাডেমির সচিব মো. সেলিম রেজা, জেন্ডার অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান কুন্তলা চৌধুরী, বেরোবি ইন্সটিটিউট অব রিসার্চ এক্সিলেন্সের সিনিয়র রিসার্চ অফিসার মেহজাবীন ইলাহী, বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী শামসুর রহমান সুমন, ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী উম্মে হানি জোহরা তানিয়া।
ঢাকা/সাজ্জাদ/রাসেল