প্রতিটি খুনের পেছনে একটি রাজনৈতিক ইন্ধন জড়িত বলেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। তারা বলছে, রাজনৈতিক শেল্টার (আশ্রয়) ছাড়া খুন, হামলা, মামলার ঘটনাগুলো আসলে ঘটছে না।

আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে ভাঙারি পণ্যের ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগকে গত বুধবার নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। এই হত্যাকাণ্ড ও সারা দেশে বিদ্যমান রাজনৈতিক শেল্টারে চাঁদাবাজি, দখলদারি, হামলা ও খুনের পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা এসব কথা বলেন।

সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি রশিদুল ইসলাম (রিফাত রশীদ) বলেন, ‘প্রতিটি খুন, প্রতিটি হামলার ঘটনা, মামলার ঘটনা—এগুলোর পেছনে একটি রাজনৈতিক ইন্ধন জড়িত। ‘রাজনৈতিক শেল্টার’ ছাড়া এই ঘটনাগুলো আসলে ঘটছে না। এই রাজনৈতিক শেল্টার, এই রাজনৈতিক শক্তি আসলে এ ধরনের হায়েনাদের, এ ধরনের দানবদের তৈরি করছে।’

রশিদুল ইসলাম আরও বলেন, ‘গতকাল একটা ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। সেখানে দেখা গেছে সোহাগ নামের এক ব্যক্তিকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। সেই লাশের ওপর নৃত্য করা, এগুলো আইয়ামে জাহেলিয়াতের সময়ে শোনা গেছে। বাংলাদেশে সেই আইয়ামে জাহেলিয়াত ফিরিয়ে আনার অপচেষ্টা ও ষড়যন্ত্র চলমান।’

রশিদুল ইসলাম অভিযোগ করেন, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে বসে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নানাবিধ ষড়যন্ত্র করছেন। সেই ষড়যন্ত্রে পা দেওয়া হচ্ছে বলেন তিনি।

বিএনপি নেতৃত্বের অনেকেই স্বৈরাচারী শাসনামলে আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাত করে ব্যবসা টিকিয়ে রেখেছিলেন বলেও অভিযোগ তোলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে নতুনভাবে কাউকে ফ্যাসিবাদী হয়ে উঠতে দেওয়া হবে না।’

রশিদুল ইসলাম আরও বলেন, ‘এখনো দেখা যাচ্ছে, হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে যখন মিছিল হয় তখনো তাঁদের শিবির, জঙ্গি, অপচেষ্টাকারী, বিএনপিবিরোধী, বাংলাদেশবিরোধী, হাসিনাপন্থী, ছাত্রলীগ, সাবেক ছাত্রলীগ নানাবিধ ট্যাগের মাধ্যমে বিতর্কিত করা হচ্ছে। এই ট্যাগিং–পন্থা হলো হাসিনার স্টাইল।’

আজ সন্ধ্যা সাতটার দিকে শাহবাগ মোড়ে মশালমিছিল কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সারা দেশের ছাত্র-জনতাকে নিজ নিজ প্ল্যাটফর্ম থেকে, নিজ নিজ ব্যানারে, নিজ নিজ জায়গা থেকে এই কর্মসূচিতে অংশ নিতে আহ্বান জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক মো.

ইনামুল হাসান এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন ত ক শ ল ট র

এছাড়াও পড়ুন:

পাঞ্জাবের আইনসভায় ইমরান ও তাঁর দলকে নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব গৃহীত

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও তাঁর দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফকে (পিটিআই) ‘রাষ্ট্রবিরোধী’ আখ্যা দিয়ে তাদের নিষিদ্ধ করার দাবিতে পাঞ্জাবের প্রাদেশিক আইনসভায় গতকাল মঙ্গলবার একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে।

দেশটির বর্তমান শাসক দল পাকিস্তান মুসলিম লিগ–নওয়াজ (পিএমএল-এন)–এর সঙ্গে পিটিআইয়ের চরম রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে এমন একটি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।

এই সিদ্ধান্ত আসার কয়েক দিন আগে পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী নাম উল্লেখ না করে ইমরান খানকে আক্রমণ করে বলেছিলেন, তিনি (ইমরান) সেনাবাহিনীবিরোধী বক্তব্য দিচ্ছেন এবং সেনাবাহিনীবিরোধী মনোভাব ছড়িয়ে দিচ্ছেন।

আহমেদ শরিফ চৌধুরী বলেছিলেন, ‘এ ধরনের বক্তব্য এখন আর রাজনীতির পরিধির মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই; বরং এগুলো জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকিতে পরিণত হয়েছে।’

তার পর থেকে পিএমএল-এন ও পিটিআই নেতাদের মধ্যে কথার লড়াই চলছে। পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ বলেছেন, ইমরান খান অতীতে কঠিন ভাষায় বিরোধী রাজনীতিকদের সমালোচনা করেছেন। তাই সামরিক বাহিনীর মুখপাত্রের মন্তব্য নিয়ে আপত্তি তোলার কোনো অধিকার তাঁর নেই।

সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে লক্ষ্য করে আইএসপিআরের মহাপরিচালকের মন্তব্যকে পিটিআই ‘অযৌক্তিক’ বলে অভিহিত করে কঠোরভাবে এর নিন্দা জানিয়েছে। পিটিআই জোর দিয়ে বলেছে, ইমরান খান জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি নন।

পিটিআইয়ের আইনপ্রণেতারা এদিন উপস্থিত ছিলেন না।

পাঞ্জাবের প্রাদেশিক আইনসভায় মঙ্গলবার পিএমএল-এন আইনপ্রণেতা তাহির পারভেজ পিটিআইন নেতা ইমরান খান ও তাঁর দলকে নিষিদ্ধ করার প্রস্তাবটি আনেন। প্রাদেশিক পরিষদে প্রস্তাবটি গৃহীত হয়। পিটিআইয়ের আইনপ্রণেতারা এদিন পরিষদে উপস্থিত ছিলেন না।

রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে ইমরান খানের সঙ্গে বৈঠক নিষিদ্ধ করার সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে তাঁরা অধিবেশন বর্জন করেন।

পাকিস্তান আইএসপিআরের মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী

সম্পর্কিত নিবন্ধ