লাল চাঁদ হত্যায় গ্রেপ্তার ৫, জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
Published: 12th, July 2025 GMT
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে ভাঙারি পণ্যের ব্যবসায়ী লাল চাঁদ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের সবাইকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। এ ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান উপদেষ্টা।
আজ শনিবার দুপুরে পুরান ঢাকার মিল ব্যারাকে ঢাকা জেলা পুলিশ লাইনস, রেঞ্জ রিজার্ভ ফোর্স (আরআরএফ) ও ট্রাফিক অ্যান্ড ড্রাইভিং স্কুল (টিডিএস) পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এ কথা জানান।
উপদেষ্টা বলেন, ‘শুধু মিটফোর্ড নয়, সারা দেশে সংঘটিত এ ধরনের ঘটনায় পুলিশ তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিচ্ছে। তবে মিটফোর্ডের ঘটনাটি বড়ই দুঃখজনক। একটা সভ্য দেশে এমন একটি ঘটনা কখনোই আশা করা যায় না।’
উপদেষ্টা বলেন, বুধবার সন্ধ্যায় ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থল থেকে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল বিকেলে র্যাব অস্ত্রসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তা ছাড়া গতকাল রাতেও একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুনশরীর থেঁতলে পিটিয়ে হত্যা করা হয় লাল চাঁদকে১৩ ঘণ্টা আগেকোনো ঘটনা ঘটলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানাতে ও আইন নিজের হাতে তুলে না নিতে আহ্বান জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। বিভিন্ন ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অ্যাকশনে যাচ্ছে বলে জানান উপদেষ্টা।
গত বুধবার মিটফোর্ড (স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ) হাসপাতালের সামনে ব্যস্ত সড়কে প্রকাশ্যে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয় লাল চাঁদকে। হত্যার আগে ডেকে নিয়ে তাঁকে পিটিয়ে এবং ইট-পাথরের টুকরা দিয়ে আঘাত করে মাথা ও শরীরের বিভিন্ন অংশ থেঁতলে দেওয়া হয়। একপর্যায়ে তাঁকে বিবস্ত্র করা হয়। তাঁর শরীরের ওপর উঠে লাফান কেউ কেউ। ওই ঘটনার সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ, মামলার এজাহার, নিহত লাল চাঁদের স্বজন ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা এবং তদন্তসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বর্ণনায় হত্যাকাণ্ডের এমন বিবরণ উঠে এসেছে।
আরও পড়ুনকারা, কেন তিন আসামিকে বাদ দিয়ে অন্য তিনজনকে আসামি করল: যুবদল সভাপতি১ ঘণ্টা আগেব্রিফিংয়ের সময় পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম, এসবিপ্রধান ও পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর ঘটন য়
এছাড়াও পড়ুন:
সোহাগ হত্যাকাণ্ড আইনের শাসন প্রশ্নবিদ্ধ করেছে: ব্যারিস্টার আনিস
পুরোনো ঢাকার মিটফোর্ড (স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ) হাসপাতালের সামনে ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগকে (৩৯) নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনা আইনের শাসনকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ।
দেশে আইনশৃঙ্খলা অবনতি ও সোহাগ হত্যার প্রতিবাদে শনিবার বিকালে গুলশানে জাতীয় পার্টির ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ব্যারিষ্টার আনিস বলেন, ‘‘রাজধানীর পুরান ঢাকায় ভাঙ্গারি ব্যবসায়ীকে হত্যার ঘটনা নৃশংস, বর্বর, হৃদয়বিদারক। এই ঘটনায় পুরো দেশের মানুষ স্তব্ধ, ব্যথিত ও ক্ষুব্ধ। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কতটা খারাপ হলে দিনদুপুরে এমন অমানবিক ঘটনা ঘটতে পারে। একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের রাজধানীতে একজন নিরীহ নাগরিককে এভাবে জীবন দিতে হবে— এটা কল্পনাতীত।’’
তিনি বলেন, ‘‘শুধু পুরান ঢাকার হত্যাকাণ্ডই নয়, দেশে প্রতিনিয়ত এ ধরনের নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটছে। এমন অমানবিকতা, এমন হিংস্রতা আমাদের মানবিক মূল্যবোধ, সমাজের নৈতিকতা এবং আইনের শাসনকে চরমভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।’’
এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান ব্যারিস্টার আনিস।
সভায় দলের কো চেয়ারম্যান এবি এম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, ‘‘দেশের মানুষের জীবনের নিরাপত্তা এখন মারাত্মক হুমকির মুখে। যারা পুরান ঢাকায় প্রকাশ্যে ব্যবসায়ীকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, তারা শুধু একজন মানুষকে হত্যা করেনি, তারা রাষ্ট্র ও সমাজের প্রতি আমাদের বিশ্বাসকেই রক্তাক্ত করেছে।’’
সাম্প্রতিক সময়ে দেশে হত্যা, ধর্ষণ চাঁদাবাজি ডাকাতি ছিনতাইসহ নানা ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে জানিয়ে হাওলাদার বলেন, ‘‘সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত ও উদ্বিগ্ন। মানুষকে শান্তি দিতে হলে সরকারকে যে কোনো মূল্যে এ ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড কঠোর হাতে দমন করতে হবে।’’
জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও মহানগর উত্তর সভাপতি শফিকুল ইসলাম সেন্টুর সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন সাবেক কো চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, প্রেসিডিয়াম সদস্য নাজমা আকতার, মহানগর উত্তরের নেতা জাহাঙ্গীর হোসেন পাঠান, আমানত হোসেন,, দক্ষিণের নেতা সারফুদ্দিন আহমেদ শিপু, মাসুক আহমেদসহ জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতারা।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন//