ভারতের ওডিশা রাজ্যের ঝাড়সুগুদা জেলায় অবৈধ বাংলাদেশী সন্দেহে আটক ৪৪৪ জনের মধ্যে ৪০৩ জনকে ছেড়ে দিয়েছে রাজ্য পুলিশ। তারা সবাই পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা। গত সোমবার রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে তাদের আটক করা হয়।

পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল কংগ্রেসের সংসদ সদস্য ও পশ্চিমবঙ্গ পরিযায়ী শ্রমিক কল্যান বোর্ডের চেয়ারম্যান সমিরুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশি সন্দেহে পশ্চিমবঙ্গের যেসব পরিযায়ী শ্রমিকদের আটক করা হয়েছিল, তাদের অধিকাংশকেই মুক্তি দেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, মুক্তি পাওয়া পরিযায়ী শ্রমিকদের বেশিরভাগই বীরভূম, মুর্শিদাবাদ ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসিন্দা। তাদের আটক করেছিল ওডিশার ঝাড়সুগুদা পুলিশ।

তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ, বৈধ কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও অবৈধ অনুপ্রবেশকারী চিহ্নিত করার নাম করে বাংলাভাষী পরিযায়ী শ্রমিকদের বেআইনিভাবে আটক করে বিজেপিশাসিত ওডিশা সরকার।

উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া, মুর্শিদাবাদ, মালদা, পূর্ব মেদিনীপুর, বীরভূম, পূর্ব বর্ধমান ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা থেকে অনেক শ্রমিক ওডিশায় কাজ করতে যান। তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ, সেসব শ্রমিকদেরই বাংলাদেশি আখ্যা দিয়ে আটক করা হচ্ছে।

কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিব ওডিশা সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে শ্রমিকদের মুক্তির অনুরোধ করেছিলেন। প্রথমে ওডিশা পুলিশ আটক ব্যক্তিদের বৈধ নথি না থাকার অভিযোগ করলেও পরে নিজেদের ভুল স্বীকার করে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ট্রাম্পের নতুন জাতীয় প্রতিরক্ষানীতির প্রশংসায় রাশিয়া

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন জাতীয় প্রতিরক্ষা কৌশলকে স্বাগত জানিয়েছে ক্রেমলিন। গতকাল রোববার ক্রেমলিন থেকে বলা হয়, এটি মূলত রাশিয়ার নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

মস্কো এই প্রথম শীতল যুদ্ধ সময়ের প্রবল প্রতিপক্ষের কোনো জাতীয় প্রতিরক্ষা কৌশলের এত প্রশংসা করল।

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় প্রতিরক্ষা কৌশলে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দৃষ্টিভঙ্গিকে ‘নমনীয় বাস্তববাদ’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।

এ ছাড়া সেখানে যুক্তরাষ্ট্রকে ১৯ শতকের ‘মনরো ডকট্রিন’ বা মনরো নীতি পুনর্জীবিত করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, ওই নীতিতে পশ্চিম গোলার্ধকে ওয়াশিংটনের প্রভাবক্ষেত্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল।

অর্থাৎ পশ্চিম গোলার্ধ (উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা) যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাববলয়ে থাকবে এবং ইউরোপীয় শক্তি সেখানে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ করবে না।

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন জাতীয় প্রতিরক্ষা কৌশলে সতর্ক করে বলা হয়েছে, ইউরোপ ‘সভ্যতার উচ্ছেদ’–এর মুখে রয়েছে, ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান যুক্তরাষ্ট্রের ‘মূল স্বার্থের’ একটি এবং ওয়াশিংটন রাশিয়ার সঙ্গে কৌশলগত স্থিতিশীলতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে চায়।

রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন কৌশল নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, ‘যে সামঞ্জস্য আমরা দেখতে পাচ্ছি, তা অনেকভাবে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে মিলে যাচ্ছে।’

মস্কো ও ওয়াশিংটনের মধ্যে বৈশ্বিক রাজনীতির মূল ভিত্তি সম্পর্কে এমন প্রকাশ্য ও পূর্ণাঙ্গ মতৈক্য বিরল।

তবে ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর সাবেক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্র থেকে পারমাণবিক অস্ত্র রাশিয়ায় ফেরত আনার বিষয়ে এবং ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর দুদেশ ঘনিষ্ঠভাবে পরস্পরকে সহযোগিতা করেছিল।

ওয়াশিংটন ও মস্কো উভয়ের নজর চীনের দিকে

রাশিয়ার ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া অধিগ্রহণ এবং ২০২২ সালে ইউক্রেনে আগ্রাসনের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নীতিতে মস্কোকে এক আগ্রাসন বা হুমকি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, যারা যুদ্ধের মাধ্যমে শীতল যুদ্ধ–পরবর্তী বিশ্বব্যবস্থাকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে।

কিন্তু এবার রাশিয়াকে সরাসরি হুমকি হিসেবে বর্ণনা না করে বরং মস্কোর সঙ্গে কৌশলগত স্থিতিশীলতা–সংক্রান্ত সহযোগিতার আহ্বান একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ বলে বর্ণনা করেছেন পেসকভ।

ট্রাম্পের জাতীয় প্রতিরক্ষা কৌশলে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলকে ‘অর্থনৈতিক ও ভূরাজনৈতিক সংঘর্ষের মূল ক্ষেত্রগুলোর একটি’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। নীতিতে বলা হয়েছে, তাইওয়ানকে কেন্দ্র করে চীনের সঙ্গে সংঘাত এড়াতে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করা হবে।

আরও পড়ুনমস্কো–ওয়াশিংটনের হটলাইন এখন আর চালু নেই: ক্রেমলিন২০ নভেম্বর ২০২৪

ইউক্রেনে যুদ্ধের জেরে পশ্চিমারা রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার পর মস্কো এশিয়া, বিশেষ করে চীনের দিকে মনোযোগ দিয়েছে। আর ইউরোপ রাশিয়ার তেল ও গ্যাসের ওপর নিজেদের নির্ভরশীলতা কমানোর চেষ্টা করেছে।

গত মার্চে ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘আমি নিজে, একজন ইতিহাসের শিক্ষার্থী হিসেবে, যা কিছু দেখেছি—প্রথমেই আমাদের যা শেখানো হয়, তা হলো রাশিয়া ও চীন একত্র হোক, এটা আপনি চাইতে পারেন না।’

আরও পড়ুনট্রাম্প আসলে ইউরোপের পিঠে ছুরি মেরেছেন২৮ নভেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ