সপুষ্পক উদ্ভিদের জীবনধারণের জন্য কোনো পরিদর্শনকারী পোকামাকড় বা পাখির উপস্থিতি না থাকলে ফুল হারিয়ে যেতে পারে। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা যায়, ফুল ফোটা ও পরাগরেণুর আগমনের সময় সামান্য বিরতি প্রাকৃতিক অবস্থাকে জটিল করে দিতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের ইস্ট টেনেসি স্টেট ইউনিভার্সিটির জীববিজ্ঞানী লিডসন কার্নেরিওর নেতৃত্বে এই গবেষণা পরিচালনা করা হয়েছে। মৌমাছির মতো ক্ষুদ্র পোকার অনুপস্থিতি যেকোনো ফুলের মৌসুমকে পরিবর্তিত করে দিতে পারে।

বিজ্ঞানীরা একটি তেল উৎপাদনকারী লতার ওপর নজর রাখছেন। আমাজন লতা নামের এই লতা ব্রাজিলের শুষ্ক গ্রীষ্মমণ্ডলীয় বনের মধ্যে বিকশিত হয়। লতাটি স্বপরাগায়ন করতে পারে না। বিশেষ তেল সংগ্রহকারী মৌমাছির ওপর নির্ভর করে। মৌমাছি পাপড়ি ধরে বাহু দিয়ে পুষ্টিসমৃদ্ধ ফুলের পরাগায়ন করে। পাপড়ির পৃষ্ঠে ছোট ছোট দাগ পরীক্ষা করে বিজ্ঞানী কোন ফুলে কখন মৌমাছি ভ্রমণ করে, তা জানতে পারেন।

পার্নাম্বুকোর পার্ক ন্যাসিওনাল ডো ক্যাটিমবাউতে মাঠপর্যায়ে এই গবেষণা পরিচালনা করা হয়। লতার স্বাভাবিক ফুল ফোটার সময় তথ্য সংগ্রহ করা হয়। প্রথম পরিদর্শনে ১০০টির বেশি ফুল পর্যবেক্ষণ করা হয়। মৌমাছির চলাচল সেই সময় প্রায় অনুপস্থিত ছিল। দ্বিতীয়বার পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, পরাগায়নকারীর কার্যকলাপ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে প্রস্ফুটিত ফুলের ৯৪ শতাংশে স্পষ্টতই দাগের চিহ্ন দেখা যায়। এক মাস পরে মৌমাছির আগমন বাড়লে ছোট ফুল ধারণকারী গাছ বেশি বীজ উৎপাদন করে।

মৌমাছির আগমনের কারণে এমন বৈচিত্র্য দেখা যায়। উষ্ণায়নের ফুল আগে প্রস্ফুটিত হচ্ছে এখন। এতে বীজ গঠন হচ্ছে না। নতুন গবেষণায় বিজ্ঞানীরা দেখছেন, যেসব অঞ্চলে বৃষ্টি, তাপমাত্রা বা দিনের দৈর্ঘ্য কয়েক সপ্তাহ ধরে তীব্রভাবে ওঠানামা করে, সেখানে ফুলের গঠনে পরিবর্তন দেখা যায়। তীব্র খরা, ভারী বৃষ্টি ও উত্তপ্ত তাপপ্রবাহ ফুলের স্বাভাবিক বিকাশকে নষ্ট করে দিচ্ছে। ব্রাজিলের বিভিন্ন লতার ক্ষেত্রে দেখা যায়, বেশির ভাগ মৌমাছি আগমনের আগেই ফুল ফুটছে। ফুল ফুটলেও বীজ তৈরি না করলে সপুষ্পক উদ্ভিদের বিকাশ বাধাগ্রস্ত হবে।

সূত্র: আর্থ ডটকম

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

এস্তেভাও: ব্রাজিলের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ

প্রতিভার জোরে পেশাদার ফুটবলে আবির্ভাবের আগেই তাঁকে ডাকা হচ্ছিল ‘মেসিনিও’ নামে। বাড়ি ব্রাজিলে হলেও বয়সভিত্তিক ফুটবলে তাঁর খেলার ধরন মনে করিয়ে দিয়েছিল লিওনেল মেসির কথা। তাঁর পছন্দের খেলোয়াড়ও আবার মেসি। সব মিলিয়ে প্রত্যাশা ও ‘মেসিনিও’ নামের বিশাল চাপ নিয়েই পেশাদার ফুটবলের দুনিয়ায় আগমন ঘটে এস্তেভাওয়ের।

তা–ও আবার এমন এক সময়ে, যখন ব্রাজিলের ফুটবলের পার করছিল নিজেদের ইতিহাসের অন্যতম খারাপ সময়। ফলে অন্য অনেক প্রতিভার মতো দুঃসময়ের কৃষ্ণগহ্বরের ভেতরই হারিয়ে যেতে পারতেন এস্তেভাও নামের তারাটিও। কিন্তু কোনো কোনো তারা উদিত হয় অন্ধকার আকাশকে আলোকিত করবে বলে। ব্রাজিলের জন্য যেন সেই তারা হয়েই এসেছেন এস্তেভাও।

মাত্র ১০ ম্যাচে মাঠে নেমেই এখন বড় স্বপ্ন দেখাচ্ছেন ‘সেলেসাও’দের। এর মধ্যে শেষ তিন ম্যাচে দারুণ নৈপুণ্য দেখিয়ে করেছেন তিন গোল। সর্বশেষ গতকাল রাতে সেনেগালের বিপক্ষেও অসাধারণ এক গোল করেছেন এই উইঙ্গার। সাম্প্রতিক সময়ে গোল ও পারফরম্যান্স মিলিয়েই ব্রাজিলিয়ান ফুটবলে তুরুপের তাস হয়ে উঠেছেন এস্তেভাও।

আরও পড়ুনসেনেগালকে হারিয়ে ব্রাজিলের প্রতিশোধ১৪ ঘণ্টা আগে

প্রতিভা—ব্রাজিলের ফুটবলে অতি ব্যবহারে ক্লিশে হয়ে পড়া একটি শব্দ। প্রায় নিয়মিতই নতুন পেলে এবং নতুন রোনালদো নাজারিওদের আগমনের খবর পাওয়া যায় দেশটিতে। কিন্তু এর মধ্যে খুব অল্পজনই নিজেদের প্রতিভাকে দীর্ঘয়িত করে ধারাবাহিকতায় রূপান্তর করতে পারেন। বেশির ভাগই মূলত অঙ্কুরেই ঝরে পড়ে। যেমন সাম্প্রতিক সময়ের তুমুল আলোচিত দুটি নাম এনদ্রিক ও ভিতর রকি।

একজন রিয়াল মাদ্রিদ এবং অন্যজন বার্সেলোনায় গিয়ে নিজেদের সম্ভাবনা বেশ উজ্জ্বলও করেছিলেন। কিন্তু এরপরই হঠাৎ পথহারা হলেন এই দুজন। এখন তাঁরা ব্রাজিলের ফুটবল কক্ষপথ থেকে অনেক দূরে ছিটকে গেছেন। অন্যদিকে শুরুতে এনদ্রিক ও রকির মতো আলোচনায় না থাকলেও সুপ্ত প্রতিভাকে এখন পর্যন্ত ঠিকই মাঠে রূপান্তরিত করতে পেরেছেন এস্তেভাও। দীর্ঘ পথের যাত্রাটা যদিও এখনো বাকি, কিন্তু শুরুটা যে আশা–জাগানিয়া হয়েছে, তা বলাই যায়।

সেনেগালের বিপক্ষে ব্রাজিলের প্রথম গোলটি করছেন এস্তেভাও

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এস্তেভাও: ব্রাজিলের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ