মৌমাছিরা দেরিতে এলে ফুল অদৃশ্য হয়ে যেতে পারে
Published: 10th, August 2025 GMT
সপুষ্পক উদ্ভিদের জীবনধারণের জন্য কোনো পরিদর্শনকারী পোকামাকড় বা পাখির উপস্থিতি না থাকলে ফুল হারিয়ে যেতে পারে। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা যায়, ফুল ফোটা ও পরাগরেণুর আগমনের সময় সামান্য বিরতি প্রাকৃতিক অবস্থাকে জটিল করে দিতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের ইস্ট টেনেসি স্টেট ইউনিভার্সিটির জীববিজ্ঞানী লিডসন কার্নেরিওর নেতৃত্বে এই গবেষণা পরিচালনা করা হয়েছে। মৌমাছির মতো ক্ষুদ্র পোকার অনুপস্থিতি যেকোনো ফুলের মৌসুমকে পরিবর্তিত করে দিতে পারে।
বিজ্ঞানীরা একটি তেল উৎপাদনকারী লতার ওপর নজর রাখছেন। আমাজন লতা নামের এই লতা ব্রাজিলের শুষ্ক গ্রীষ্মমণ্ডলীয় বনের মধ্যে বিকশিত হয়। লতাটি স্বপরাগায়ন করতে পারে না। বিশেষ তেল সংগ্রহকারী মৌমাছির ওপর নির্ভর করে। মৌমাছি পাপড়ি ধরে বাহু দিয়ে পুষ্টিসমৃদ্ধ ফুলের পরাগায়ন করে। পাপড়ির পৃষ্ঠে ছোট ছোট দাগ পরীক্ষা করে বিজ্ঞানী কোন ফুলে কখন মৌমাছি ভ্রমণ করে, তা জানতে পারেন।
পার্নাম্বুকোর পার্ক ন্যাসিওনাল ডো ক্যাটিমবাউতে মাঠপর্যায়ে এই গবেষণা পরিচালনা করা হয়। লতার স্বাভাবিক ফুল ফোটার সময় তথ্য সংগ্রহ করা হয়। প্রথম পরিদর্শনে ১০০টির বেশি ফুল পর্যবেক্ষণ করা হয়। মৌমাছির চলাচল সেই সময় প্রায় অনুপস্থিত ছিল। দ্বিতীয়বার পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, পরাগায়নকারীর কার্যকলাপ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে প্রস্ফুটিত ফুলের ৯৪ শতাংশে স্পষ্টতই দাগের চিহ্ন দেখা যায়। এক মাস পরে মৌমাছির আগমন বাড়লে ছোট ফুল ধারণকারী গাছ বেশি বীজ উৎপাদন করে।
মৌমাছির আগমনের কারণে এমন বৈচিত্র্য দেখা যায়। উষ্ণায়নের ফুল আগে প্রস্ফুটিত হচ্ছে এখন। এতে বীজ গঠন হচ্ছে না। নতুন গবেষণায় বিজ্ঞানীরা দেখছেন, যেসব অঞ্চলে বৃষ্টি, তাপমাত্রা বা দিনের দৈর্ঘ্য কয়েক সপ্তাহ ধরে তীব্রভাবে ওঠানামা করে, সেখানে ফুলের গঠনে পরিবর্তন দেখা যায়। তীব্র খরা, ভারী বৃষ্টি ও উত্তপ্ত তাপপ্রবাহ ফুলের স্বাভাবিক বিকাশকে নষ্ট করে দিচ্ছে। ব্রাজিলের বিভিন্ন লতার ক্ষেত্রে দেখা যায়, বেশির ভাগ মৌমাছি আগমনের আগেই ফুল ফুটছে। ফুল ফুটলেও বীজ তৈরি না করলে সপুষ্পক উদ্ভিদের বিকাশ বাধাগ্রস্ত হবে।
সূত্র: আর্থ ডটকম
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
আজ দেবীর বিদায়, রংপুরের মণ্ডপে চলছে উৎসবের সিঁদুর খেলা
বিজয়া দশমীতে আজ দেবী দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক ও গণেশকে বিসর্জন দেওয়া হবে। শেষ মুহূর্তে বিষাদের মাঝেও সনাতনী নারীরা আনন্দে মেতে উঠেছেন সিঁদুর খেলায়।
বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) সকাল থেকে রংপুর নগরীর কালীবাড়ি মন্দিরের মণ্ডপে চলছে উলুধ্বনির মধ্যদিয়ে প্রতিমায় সিঁদুর লাগানো, প্রসাদ গ্রহণ আর বড়দের পা ছুঁয়ে আশীর্বাদ নেওয়া। লাল পাড়ের সাদা শাড়ি গায়ে জড়িয়ে নারীরা বিজয়ার শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন একে অপরকে।
আরো পড়ুন:
দশমীর সাজে সাবেকিয়ানার সঙ্গে একটু টুইস্ট আনতে পারেন
ফ্যাক্ট চেকের কারণে গুজবকারীরা গুজব ছড়াতে ব্যর্থ হয়েছে: আনসার ভিডিপি মহাপরিচালক
বছর ঘুরে অনাবিল শান্তি বয়ে নিয়ে ফের দেবী দুর্গার আগমন ঘটবে এমনটি প্রত্যাশা ভক্তদের।
রংপুর নগরীর কালিবাড়ি মন্দিরে কথা হয় ভারতি রানীর সঙ্গে। তিনি বলেন, “ষষ্টি থেকে শুরু হয় দুর্গোৎসবের আনন্দ। আজ বিজয়া দশমীতে আমাদের মনের মধ্যে শঙ্খ ধ্বনির সঙ্গে বেজে ওঠে বিষাদের সুর। কারণ মা দুর্গা কিছুক্ষণ পরেই বিসর্জনের জন্য চলে যাবেন। ভাবতেই খুব খারাপ লাগে। তবুও মা দুর্গার স্মৃতি শেষ সময়ে ধরে রাখতে সিঁদুর খেলায় আমরা মেতে উঠি।”
তিনি বলেন, “মায়ের কাছে বিদায়ের ক্ষণে একটাই চাওয়া, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সব ধর্ম-বর্ণের মানুষ যাতে শান্তিতে থাকে। ধরণীতে বয়ে যাক কল্যাণকর পরিস্থিতি।”
কালিবাড়ি মন্দিরের পুরোহিত খোকন চ্যাটার্জী বলেন, “বিজয়া দশমীতে সকাল থেকে সব আনুষ্ঠানিকতার পর্ব শেষ হয়েছে। দেবী দুর্গা মায়ের এবার আগমন হয়েছিলো দোলনায়। কিছুক্ষণ পরেই মায়ের গমন হবে গজে চড়ে।”
জেলা ও মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদ সূত্রে জানা যায়, এ বছর রংপুর মহানগর ও জেলায় মোট ৯১৪টি শন্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব আয়োজন করা হয়। ইতোমধ্যেই প্রতিবারের ন্যায় জেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে দেবী দুর্গার বিসর্জনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে কর্তৃপক্ষ। বিজয় দশমীর পূজা বিসর্জনে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সজাগ রয়েছে রংপুরের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
রংপুর জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি রাম জীবন কুন্ড বলেন, “বিপ্লব পরবর্তী সময়ে সব রাজনৈতিক দলের সার্বিক সহযোগিতায় প্রতিবারের ন্যায় এবারও পূজা সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সম্পন্ন হয়েছে। নিরাপত্তার ব্যবস্থা ছিল প্রশংসনীয়। বিজয়া দশমীতে বিসর্জনের পূর্বমুহূর্তে সনাতনী নারীরা এখন মণ্ডপে মণ্ডপে সিঁদুর খেলায় ব্যস্ত রয়েছেন। দুপুর ৩টার পর থেকেই শুরু হবে বিসর্জন প্রক্রিয়ার আনুষ্ঠানিকতা।”
রংপুর জেলার পুলিশ সুপার আবু সাঈম বলেন, “গত ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া সনাতন ধর্মালম্বীদের বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গপূজার আনুষ্ঠানিকতা অত্যন্ত সুশৃংখল পরিবেশের সম্পন্ন হয়েছে। দুর্গাপূজা নির্বিঘ্নে করতে জেলা পুলিশ সার্বক্ষণিকভাবে কাজ করেছে। দশমীর আজ বিকেল থেকে শুরু হবে বিসর্জন প্রক্রিয়া। সেটিও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে পুলিশি নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।”
ঢাকা/আমিরুল/মাসুদ