নবনিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত রুডিগার লোটজ আজ বুধবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। সাক্ষাতে প্রধান উপদেষ্টা নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূতকে বাংলাদেশে দায়িত্ব গ্রহণের জন্য আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান। একই সঙ্গে তাঁর দায়িত্বকালে বাংলাদেশ ও জার্মানির বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে বলে উপদেষ্টা আশা প্রকাশ করেন।

বৈঠকে রাষ্ট্রদূত অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি সমর্থন জানিয়ে আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পর্কে খোঁজখবর নেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় আরও বেশি সম্পৃক্ত হচ্ছে, যা অত্যন্ত উৎসাহব্যঞ্জক। রাষ্ট্রদূত সরকারের সংস্কার উদ্যোগ, বিশেষ করে জুলাই জাতীয় সনদের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোকে একসঙ্গে বসে আলাপ করতে দেখে ভালো লাগছে। নির্বাচনের পরও এ ধরনের সংস্কার উদ্যোগ অব্যাহত থাকা উচিত।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোকে একত্র করে সনদে স্বাক্ষরের যে উদ্যোগ নিয়েছিল, তা ছিল এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত, যা ঐক্য ও পরিবর্তনের প্রতি যৌথ অঙ্গীকারের প্রতীক। তিনি আরও বলেন, এটি আসন্ন নির্বাচনের আগে আস্থা তৈরিতেও সহায়ক হয়েছে। অধ্যাপক ইউনূস বলেন, সরকার আগামী ফেব্রুয়ারির নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও আনন্দমুখর করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে।

বৈঠকে রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে জার্মানিতে পড়াশোনার আগ্রহ বৃদ্ধি পাওয়ার কথাও উল্লেখ করেন। প্রধান উপদেষ্টা ও রাষ্ট্রদূত দুই দেশের জনগণের মধ্যে ক্রমবর্ধমান সম্পর্ককে স্বাগত জানান। এ ছাড়া তাঁরা রোহিঙ্গা শরণার্থী পরিস্থিতি এবং এ বিষয়ে জার্মানির সহায়তা নিয়েও আলোচনা করেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ইউরোপে জার্মানি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার এবং তিনি আশা প্রকাশ করেন যে নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন। অধ্যাপক ইউনূস তরুণ প্রজন্মের শক্তির কথাও উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, প্রযুক্তি ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কল্যাণে তরুণেরা এখন সহজেই মত প্রকাশ করতে পারে, একে অপরের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে এবং অন্যায় চিহ্নিত করতে পারে। তবে তিনি ভুয়া তথ্যের ঝুঁকির ব্যাপারেও সতর্ক করেন। তিনি বলেন, ‘ভ্রান্ত তথ্য আসন্ন নির্বাচনের আগে আমাদের অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: নবন য ক ত

এছাড়াও পড়ুন:

নির্বাচন পেছানোর ষড়যন্ত্র হলে জনগণ তা মেনে নেবে না: সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম বলেছেন, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পেছানোর ষড়যন্ত্র হচ্ছে। কোনো দল বা ব্যক্তিকে কেন্দ্র করে নির্বাচন পেছানোর ষড়যন্ত্র বাংলাদেশের জনগণ তা মেনে নেবে না।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ আয়োজিত নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম বলেন, ‘আমরা চাই ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকেই নির্বাচন হোক। এর ব্যত্যয় ঘটলে জনগণ তা মেনে নেবে না। দেশজুড়ে নির্বাচনের সময় পেছানোর ষড়যন্ত্র চলছে। যারা নির্বাচন নির্বাচন জিকির করত, তারাই এখন নির্বাচন পেছানোর ষড়যন্ত্র করছে। কারণ, তারা মাঠপর্যায়ে জরিপ করে দেখেছে, তাদের পায়ের নিচের মাটি খালি হয়ে গেছে।’

জনগণ জুলুম ও অত্যাচার চায় না উল্লেখ করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের এই নেতা বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ আর চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, দুর্নীতিবাজ ও বিদেশে টাকা পাচারকারীদের ভোট দিতে চায় না। বাংলাদেশের জনগণ আপসে একসঙ্গে বসবাস করতে চায়, ব্যবসা করতে চায়, চাঁদামুক্ত পরিবেশ চায়। মেয়েরা কী চায়? তারা নির্বিঘ্নে চলাফেরা করবে, ধর্ষণ বা ইভ টিজিংয়ের শিকার না হয়—এ রকম একটি আস্থার পরিবেশ চায়। জনগণ যেটা চায়, আমরা তাদের সেটা দিতে চাই। ইসলামি হুকুমত প্রতিষ্ঠা হলে দেশে একজনও না খেয়ে থাকবে না, বস্ত্রহীন থাকবে না। আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বললাম, আগামী ১০ বছরে সব গরিব দারিদ্র্যসীমার ওপরে চলে যাবে।’

বিগত সময়ে কারচুপি, পেশিশক্তি ও ভোটারবিহীন নির্বাচনের অভিজ্ঞতার কথা স্মরণ করে ফয়জুল করীম বলেন, দেশের মানুষ একটি স্বচ্ছ, গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দেখতে চায়, যেখানে পেশিশক্তির প্রভাব থাকবে না, কালোটাকার প্রভাব থাকবে না এবং প্রত্যেকে নিজের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবে—এমন নির্বাচন আমরা প্রত্যাশা করছি। আসন্ন নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যদি নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিতে না পারে, তাহলে জনগণ এই সরকারকে ক্ষমা করবে না। কোনো পক্ষ দখল বা সহিংসতার চেষ্টা করলে জনগণই প্রতিরোধ করবে।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নির্বাচন পরিচালনা কমিটি নারায়ণগঞ্জ-৪–এর আহ্বায়ক মুহা. শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে নির্বাচনী জনসভায় উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক মাওলানা লোকমান হোসেন জাফরী, নগর সভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের প্রার্থী মুফতি মাসুম বিল্লাহ, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের প্রার্থী মাওলানা ইসমাঈল সিরাজি, জেলা সভাপতি মাওলানা মো. দ্বীন ইসলাম, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলা আমির আতিকুর রহমান প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দুর্নীতির বিরুদ্ধে গণসংহতি আন্দোলনের ১১ দফা প্রস্তাব
  • নির্বাচন পেছানোর ষড়যন্ত্র হলে জনগণ তা মেনে নেবে না: সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম
  • ক্ষমতায় এলে দুর্নীতিতে লাগাম টানার সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা ঠিক করবে বিএনপি
  • জনগণের ভাগ্যোন্নয়নে দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে জামায়াত: গোলাম পরওয়ার
  • অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্থ ব্যাবসায়ীদের পাশে থাকার আশ্বাস মাসুদুজ্জামানের
  • আমরা জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে ক্ষমতায় যেতে চাই: হাসনাত
  • জনগণ দায়িত্ব দিলে বিএনপি আবার দুর্নীতিবিরোধী লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত: তারেক রহমান
  • আমরা ধর্মকে কখনো ব্যবহার করিনি, করব না: জামায়াতের আমির
  • মুছাপুরে খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দোয়া ও শীতবস্ত্র বিতরণ করলেন মাসুদুজ্জামান
  • গণভোট কি প্রতীকী ভোটে পরিণত হচ্ছে