রূপগঞ্জে মাজার ভেঙ্গে মালামাল লুট, লাশ তুলে নেয়ার চেষ্টার অভিযোগ
Published: 24th, October 2025 GMT
রূপগঞ্জে পূর্বাচলে মাইজভান্ডারি অনুসারী সৈয়দ শফিউদ্দিন ও তার স্ত্রীর কবরকে ঘিরে গত ৪৫ বছরের পুরনো মাজার ভেঙ্গে, নির্মাণ সামগ্রী লুটপাট করে নিয়ে গেছে দূবৃত্তরা।
এ সময় কবর থেকে লাশ তুলে নেয়ার চেষ্টা করে কবর খুড়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ২৩ অক্টোবর বৃহস্পতিবার দিবাপূর্ব রাতের কোন এক সময় পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের ২০ নং সেক্টরে এমন ঘটনা ঘটে।
মরহুম সৈয়দ শফিউদ্দিন মাইজ ভান্ডারীর ছেলে ফজর আলী বলেন, তার বাবা ১৯৮০ সালে মারা গেলে তৎকালীন গোবিন্দপুর গ্রামে বর্তমানে পূর্বাচল ২০ নং সেক্টরে কবর দেয়া হয়। সৈয়দ শফিউদ্দিন মাইজভান্ডারি জীবদ্দশায় স্থানীয় একটি মসজিদের ১৯ বছর ইমামতি করেছেন। তিনি ছিলেন কুরআনে হাফেজ।
পাশাপাশি ইসলাম ধর্মের সুফীবাদ মতাদর্শী। তাই তার কবরকে মাজার হিসেবে রাখতে ৩০ শতক জমি ওয়াকফ করা হয়। কিন্তু একটি মহল মাজারের জমি ও কবর দুটি তুলে নিতে নানাভাবে চেষ্টা করছে। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল রাতে দূর্বৃত্তরা হামলা করে মাজার ভেঙ্গে, মালামাল লুটে নিয়ে যায়। কবর খুড়া দেখে মনে হচ্ছে লাশ তুলে নেয়ার চেষ্টা করেছে।
মরহুম পীর শফিউদ্দিনের পরিবারের সদস্য এডভোকেট শাহ্ আলম অভি বলেন, “ রাতের আধারে পূর্বাচলে মাজার ভাঙচুর, গাছ-পালা-সহ দূর্বৃত্তরা গুড়িয়ে দিল ৪৬ বছরের পুরোনো সৈয়দ সফিউদ্দীন আহমেদ মাইজভান্ডারির মাজার।
অজ্ঞাতনামা ১৫ থেকে ২০ জন মাজারের বাউন্ডারি ওয়াল, সীমানা প্রাচীর, ২২টি বিভিন্ন গাছ, কালেমা খচিত ৪ টি নিশান-সহ রক্ষিত নির্মাণসামগ্রী ভাংচুর, লটপাট, ধ্বংস এব্ং চুরি করিয়া অনুমান ৮ লক্ষ টাকার ক্ষতি সাধন করে।
এ ঘটনায় এডভোকেট শাহ্ আলম অভি রূপগঞ্জ থানায় জিডি করলে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন।
এ বিষয়ে রূপগঞ্জ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি তরিকুল ইসলাম বলেন, সাধারণ ডায়েরি সূত্রে ঘটনায় তদন্ত চলমান। যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: র পগঞ জ ন র য়ণগঞ জ র পগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
বিস্তৃত প্রশ্ন, উত্তরও বড় হবে
বাংলা: প্রশ্ন নম্বর–৮
প্রাথমিক বিদ্যালয়–শিক্ষার্থী মেধা যাচাই পরীক্ষায় বাংলা বিষয়ে ৮ নম্বর প্রশ্ন থাকবে বিস্তৃত উত্তর প্রশ্নের ওপর। ৩টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। নম্বর থাকবে ১৫।
প্রশ্ন: দেশকে কেন ভালোবাসতে হবে?
উত্তর: দেশ মানে এর মানুষ, নদী, আকাশ, প্রান্তর, পাহাড়, সমুদ্র ইত্যাদি সবকিছু। তাই দেশ আমাদের কাছে মায়ের মতো। মা যেমন স্নেহ–মমতা দিয়ে সন্তানকে আগলে রাখেন, দেশও তেমনই আলো, বাতাস ও সম্পদ দিয়ে আমাদের আগলে রাখে। তাই মায়ের মতো এই দেশকে ভালোবাসতে হবে। দেশকে ভালোবাসলেই তবে জীবন সার্থক হবে।
প্রশ্ন: রাজকীয় বাঘ কোনটি? এটি সম্পর্কে লেখ।
উত্তর: বাংলাদেশের নামের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা রাজকীয় বাঘের নাম হলো রয়েল বেঙ্গল টাইগার। এই বাঘ থাকে সুন্দরবনে। এ বাঘ দেখতে যেমন সুন্দর, তেমনই আবার
ভয়ংকর। এর চালচলনও রাজার মতো। সুন্দরবনের ভেজা স্যাঁতসেঁতে গোলপাতার বনে এ বাঘ ঘুরে বেড়ায়।
প্রশ্ন: বৈশাখী মেলায় কী কী পাওয়া যায়?
উত্তর: বৈশাখী মেলায় নিত্যদিনের দরকারি জিনিসের পাশাপাশি নানা রকম শৌখিন জিনিস পাওয়া যায়। যেমন—কুলা, ডালা, ঝুড়ি, চালনি, মাছ ধরার চাঁই, খালুই ইত্যাদি। দোকানে পাওয়া যায় বাঙ্গি, তরমুজ, মুড়ি–মুড়কি, জিলাপি, বাতাসা ইত্যাদি। বৈশাখী মেলার অন্যতম আকর্ষণ হলো মাটির তৈরি জিনিসপত্র। মাটির তৈরি জিনিসের মধ্যে রয়েছে নানা রঙের ফুল, পাতা ও মাছের ছবি আঁকা বিচিত্র সব হাঁড়ি। এ ছাড়া মাটির তৈরি টেপাপুতুল, ঘোড়া, হাতি, ষাঁড়, মাছ, কলসি, সরা, বাসনকোসন, পেয়ালা, সুরাই, মটকা, জালা, পিঠা তৈরির নানা ছাঁচ ইত্যাদি।
প্রশ্ন: হাতির করুণ পরিণতির পাঁচটি কারণ লেখ।
উত্তর: হাতির করুণ পরিণতির পাঁচটি কারণ নিচে দেওয়া হলো—
১. অহংকারী হয়ে ওঠা।
২. অন্য প্রাণীদের তুচ্ছ ভাবা।
৩. বনের প্রাণীদের অত্যাচার করা।
৪. নিজেকে অসীম শক্তিশালী ভাবা।
৫. নিজেকে বনের রাজা ভাবতে শুরু করা।
প্রশ্ন: প্রকৃতির কাছ থেকে আমরা কীভাবে শিক্ষা লাভ করতে পারি?
উত্তর: প্রকৃতি এক বিশাল পাঠশালা। এর প্রতিটি উপাদানে রয়েছে শেখার উপকরণ। আকাশ যেমন উদার হতে শিক্ষা দেয়, তেমনই পাথর শিক্ষা দেয় কঠোর হতে। পাহাড়–মাটি, চাঁদ–সূর্য, বাতাস–মাঠ প্রতিটিই বিভিন্নভাবে আমাদের শিক্ষা দেয়। উদারতা, সহিষ্ণুতা, কর্মপরায়ণতা, নীরবতা, মহানুভবতা ইত্যাদির শিক্ষা আমরা প্রকৃতির কাছ থেকে পেয়ে থাকি। এভাবে প্রকৃতির দিকে গভীরভাবে তাকালে বিনা পরিশ্রমে, কোনো ধরনের কৃত্রিমতা ছাড়াই আমরা এসব প্রকৃতি থেকে লাভ করতে পারি।
প্রশ্ন: মৃৎশিল্পের ওপর নকশাগুলো কীভাবে করা হয়?
উত্তর: আমাদের দেশের সবচেয়ে প্রাচীন শিল্প হলো মৃৎশিল্প। এই মৃৎশিল্পের ওপরের সুন্দর নকশা, রং সবই গ্রামের শিল্পীরা করে থাকেন। নকশাগুলো তাঁরা মন থেকে আঁকেন। আর রং তাঁরা নিজেরা তৈরি করে নেন শিম, সেগুনপাতার রস কিংবা কাঁঠালগাছের বাকল থেকে। তবে আজকাল বাজার থেকে কেনা রংও লাগানো হয়।
প্রশ্ন: ‘আমরা একে অপরের উৎসবে সহযোগিতা করি।’—এ কথার দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে?
উত্তর: বাংলাদেশে হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান সব মানুষ মিলেমিশে বাস করে। প্রতিটি ধর্মের মানুষের রয়েছে আলাদা আলাদা উৎসব। যুগ যুগ ধরে সব ধর্মের মানুষ এ দেশে একত্রে বসবাস করে আসছে। এক ধর্মের মানুষ অন্য ধর্মের উৎসবে আনন্দের সঙ্গে অংশগ্রহণ করে। উৎসব পালনে আমরা একে অপরকে সহযোগিতা করি, প্রশ্নের উক্তিটিতে এ কথাই বোঝানো হয়েছে।
প্রশ্ন: যুগান্তরের ঘূর্ণিপাকে মানুষ ঘুরছে বলতে কী বোঝ? বর্ণনা করো।
উত্তর: কবিতায় ‘যুগান্তর’ বলতে সময়ের পরিবর্তন এবং ‘ঘূর্ণিপাক’ বলতে এর দ্রুততাকে বোঝানো হয়েছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পৃথিবীর অনেক কিছুর পরিবর্তন হয়। নতুন নতুন রহস্য ও ঘটনার সৃষ্টি হয়। সময়ের গতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে মানুষও এগিয়ে চলে রহস্য অনুসন্ধান ও ঘটনার মূল উদ্ঘাটনের জন্য। যুগের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের এই এগিয়ে যাওয়ার মানসিকতাকে বোঝানোর জন্যই বলা হয়েছে যুগান্তরের ঘূর্ণিপাকে ঘুরছে।
প্রশ্ন: পশুপাখি জীবজন্তু না থাকলে প্রকৃতির কী বিপর্যয় ঘটবে বলে তোমার মনে হয়?
উত্তর: পশুপাখি, জীবজন্তু যেকোনো দেশের স্বাভাবিক প্রকৃতির পরিবেশ রক্ষার জন্য অপরিহার্য। যদি পৃথিবীতে পশুপাখি না থাকত, তাহলে প্রকৃতির ওপর মারাত্মক প্রভাব পড়ত
এবং পরিবেশের ভারসাম্যে ব্যাঘাত ঘটত। ফলে দেখা দিত নানা রকম প্রাকৃতিক দুর্যোগ, যা মানুষের জীবনধারণকে হুমকির মধ্যে ফেলত। তাই এদের যত্ন ও সংরক্ষণে আমাদের সচেতন হতে হবে।
প্রশ্ন: ‘মাটির শিল্পকলা’ বলতে কী বোঝ?
উত্তর: যখন কোনো কিছু সুন্দর করে আঁকা বা বানানো হয়, তখন তাকে শিল্প বলে। শিল্পের এ কাজকে বলে শিল্পকলা। মাটি দিয়ে তৈরি শিল্পকে বলা হয় মাটির শিল্পকলা। আমাদের দেশের সবচেয়ে প্রাচীন শিল্প হচ্ছে মাটির শিল্প। এ দেশের কুমার সম্প্রদায় যুগ যুগ ধরে এই শিল্পকলা ধরে রেখেছে।
প্রশ্ন: সুন্দরবন সম্পর্কে পাঁচটি বাক্য লেখ।
উত্তর: বাংলাদেশের দক্ষিণে সমুদ্রের কোল ঘেঁষে গড়ে ওঠা বিশাল বন হলো সুন্দরবন। এই বনে যেমন রয়েছে প্রচুর গাছপালা, তেমনই রয়েছে নানা প্রাণী ও জীবজন্তু, যা আমাদের প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সুন্দরবনের প্রধান আকর্ষণ হলো রয়েল বেঙ্গল টাইগার। সর্বোপরি সুন্দরবন ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের হাত থেকে আমাদের রক্ষা করে।
প্রশ্ন: পরস্পর মিলেমিশে থাকার পাঁচটি সুফল লেখ।
উত্তর: পরস্পর মিলেমিশে থাকার চারটি সুফল হলো—
১. একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার সৃষ্টি হয়।
২. বিপদ–আপদে একে অন্যকে সাহায্য করা যায়।
৩. একে অপরের প্রতি সহানুভূতি ও সহমর্মিতা বৃদ্ধি পায়।
৪. সমাজে সাম্য ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠিত হয়।
৫. দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি সাধিত হয়।
*লেখক: খন্দকার আতিক, শিক্ষক, উইল্স লিট্ল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা