কিশোরীবেলা থেকে বাবার তোলা একটি ছবি খুঁজে বেড়াচ্ছেন সাউথ পয়েন্ট স্কুলের শিক্ষক লায়লা মোশাররফ তুলি। তিনি যখন ভিকারুননিসা নূন স্কুলে পড়তেন, তখন বাবার কাছে বহুবার বিপ্লবী ইলা মিত্রের ছবি তোলার গল্প শুনেছেন। একদিন তিনি বাবার কাছে জানতে চান, ‘ছবিটা কোথায়?’ বাবা জানালেন, ফটোসাংবাদিকতার মতো অনিশ্চিত জীবনে ছবিটি কেমন করে হারিয়ে গেছে। বাবার সহকর্মী সংবাদচিত্রীদের সঙ্গে দেখা হলে তুলি এই ছবির ব্যাপারে জানতে চান। ছবিটির কথা সবারই জানা। কিন্তু কারও সংগ্রহেই এর কোনো প্রিন্ট নেই। যখন তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ছাত্রী, তখন বিভাগের শিক্ষকদের কাছে ছবিটির ব্যাপারে জানতে চান। তাঁর ক্ষীণ আশা, যদি কারও কাছে ছবিটি থাকে। ছাত্রজীবনে ছবিটি দেখা হলো না তুলির।
২০২২ সালে তাঁর বড় মেয়ে ওয়াহিদা রহমান অসুস্থ হয়ে আগারগাঁওয়ের নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে ভর্তি হয়। মেয়েকে নিয়ে ১০ দিন ছিলেন হাসপাতালে। অসুস্থ মেয়েকে নিয়ে প্রতিদিন বিকেলে হাসপাতালের বারান্দায় ঘুরতেন। বারান্দার জানালা দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরটা দেখা যায়। মেয়ের বায়না, ওই জাদুঘরে যাবে। মা বলতেন, ‘আগে সুস্থ হও, তারপর নিয়ে যাব।’
একদিন মেয়েকে নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে গেলেন। তৃতীয় তলার এক নম্বর গ্যালারিতে ঢুকতেই দেখেন ইলা মিত্রের সেই ছবি, যা তিনি এত দিন ধরে খুঁজছেন! ছবিটি দেখে তাঁর রক্তের ভেতর এক অদ্ভুত শিহরণ বয়ে যায়। বন্দী অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বেডে শায়িত ইলা মিত্র।মোশাররফ হোসেন লাল (৪ জানুয়ারি ১৯২৯—১১ অক্টোবর ২০০৪).উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
একঝলক (২৫ অক্টোবর’ ২০২৫)
ছবি: মঈনুল ইসলাম